ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মৌসুমি ফলে বাজার ভরপুর

পেঁয়াজ রসুন আলু চিনি মুরগির দাম কমলেও সবজির বাজার চড়া

প্রকাশিত: ২১:৪৯, ২৭ জুন ২০২০

পেঁয়াজ রসুন আলু চিনি মুরগির দাম কমলেও সবজির বাজার চড়া

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সরবরাহ বাড়ায় চলতি সপ্তায় কমেছে পেঁয়াজ, রসুন, আলু, চিনি ও ব্রয়লার মুরগির দাম। বর্ষায় উৎপাদন ও সরবরাহে ভাটা পড়ায় নিত্যপণ্যের বাজারে দাম বেড়েছে শাক-সবজির। এছাড়া ডিম ও মোটা চালের দাম আরেক দফা বেড়েছে। ভোজ্যতেল, ডাল ও আটার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাছের সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুসহ মৌসুমি ফলের সরবরাহ বেড়েছে। দেশী জাতীয় এসব ফলের দাম কম হওয়ায় ক্রেতারা বাজারে গিয়েই কিনে আনছেন এসব ফলমূল। শুক্রবার রাজধানীর কাওরানবাজার, ফকিরাপুল বাজার, খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন মার্কেট, মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। রাজধানীর কাঁচাবাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বেড়ে গেছে বেশিরভাগ শাক-সবজির দাম। গড়ে ৬০ টাকার নিচে কোন সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে আষাঢ়ে বৃষ্টি ও মৌসুমি বায়ুর কারণে সবজি উৎপাদন কমে গেছে। এর একটি প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে। আর এ কারণে এখন সবজির দাম বেশি। ঢাকার প্রধান পাইকারি বাজার হিসেবে খ্যাত কাওরানবাজারে এখন সবজির দাম চড়া। এ কারণে খুচরা বাজারে দাম বেড়ে গেছে। খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন বাজার থেকে সবজি কিনছিলেন তিলপাপাড়ার বাসিন্দা বেসরকারী চাকুরে জামাল হোসেন। তিনি জানান, বাজারে এখন সব সবজির দাম বেশি। বেগুন, ধুন্দল, বরবটি, কচু, লাউ, করলা, কাঁচকলা, শসা, টমেটো কাঁচা মরিচসহ সব ধরনের সবজির দাম চড়া। গড়ে ৬০ টাকার নিচে কোন সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। সবজির পাশাপাশি এ সপ্তাহে মোটা চাল ও ডিমের দাম আরেক দফা বেড়েছে। খুচরা বাজারে চায়না ইরি ও স্বর্ণা জাতের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৮ টাকায়। গত কয়েক দিন আগেও এই চাল প্রতি কেজি ৩৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া সরু মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল ৫৫-৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইজাম ও লতা চাল ৪৮-৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এদিকে, নিত্যপণ্যের বাজারে ফার্মের ডিমের দাম চড়া। প্রতি হালি ফার্মের মুরগির ডিম ৩৩-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে বাড়ছে ডিমের দাম। এছাড়া চলতি সপ্তায় দাম কমেছে পেঁয়াজ, আলু, রসুন ও ব্রয়লার মুরগির দাম। দাম কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০-১৬০, প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ ৪০-৪৫, আমদানিকৃত ২৫-৩৫, রসুন আমদানি ৯০-১২০, আলু ২৮-৩০, চিনি ৫৮-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া বাজারে ভোজ্যতেল, ডাল ও আটার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। রোজার ঈদের পর থেকে চড়া ছিল ব্রয়লার মুরগির বাজার। এখন সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। মুরগি উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন কারণে ব্যবসায়ীরা লোকসানের কারণে খামারের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে করে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। উৎপাদন বৃদ্ধি করা না গেলে মাংসের বাজার অস্থির হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমিষের প্রধান উৎস ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কমে গেলে দরিদ্র মানুষের পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। স্বল্প আয়ের মানুষের ভরসা এই ব্রয়লার মুরগি। প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতের অগ্রিম কর কমানো হয়েছে। এছাড়া খামারিদের অন্য সুবিধা নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এসব উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন হলে ব্রয়লার মুরগির দাম কমবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। নদ-নদীতে পানির সরবরাহ বাড়ায় মাছের সরবরাহ বাজারে বেড়েছে। তবে দাম কমেনি মাছের। আগের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ।
×