ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিতে কোনো ছাড় দেবে না দুদক

প্রকাশিত: ১৮:৪৯, ২৬ জুন ২০২০

স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিতে কোনো ছাড় দেবে না দুদক

অনলাইন রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি-অনিয়মের ১১টি মামলায় ১৪ ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, এখানে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নেওয়া হয়েছে, ঠিকাদারদের ওই তালিকা আরও বড় হবে। শুক্রবার স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিসহ অন্যান্য দুর্নীতি-অনিয়ম সংক্রান্ত দুদকের গোয়েন্দা বিভাগের একটি বিশেষ প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। ইকবাল মাহমুদ বলেন, ঢাকা, সাতক্ষীরা, রংপুর, চট্টগ্রাম, ফরিদপুরেরসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সামগ্রী কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে কমিশন ১১টি মামলা করেছে। এই ১১টি মামলায় সম্পৃক্ত ১৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়। সংশ্লিষ্ট এসব অনুসন্ধান এখনও শেষ হয়নি। হয়ত আরো মামলা হবে, আরো প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করতে সুপারিশ করা হবে। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের আগ থেকেই কমিশন সক্রিয় ছিল। এই খাতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কমিশন শুন্য সহিষ্ণুতার নীতি অনুসরণ করছে।” কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা সামগ্রী কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে তা অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “এই অনুসন্ধানটি হতে হবে নির্মোহ ও পূর্ণাঙ্গ। মানুষকে সব কিছু জানাতে হবে। দুদক কোনো কিছুই গোপন করে না, করবেও না।” দুদকের গোয়েন্দা বিভাগের বিশেষ প্রতিবেদনে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির দুর্নীতি, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি, সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে খাদ্য সামগ্রী আত্মসাৎ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি উঠে এসেছে বলে দুদকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। গোয়েন্দা অনুবিভাগের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী স্বাক্ষরিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, কমিশনের অনুমোদন পেয়ে গত তিন মাসে সরকারের ত্রাণ দুর্নীতি, সরকারি খাদ্য গুদামের খাদ্য-সামগ্রী আত্মসাৎ, অবৈধভাবে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২৩টি মামলা করেছে দুদক। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি কেনাকাটার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ‘দ্রুততার সাথে’ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ সময় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, “ত্রাণ আত্মসাৎকারীদের আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম। তারপরও কতিপয় লোভী মানুষকে প্রতিরোধ করা যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে এদেরকে আইনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।” ত্রাণ আত্মসাতের মামলাগুলোর আর্থিক সংশ্লিষ্টতা কম হলেও মামলাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে নিখুঁতভাবে তদন্ত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশেই দুদককে আইনি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। করোনাভাইরাস দুদকের দুইজন কর্মকর্তার মূল্যবান জীবন কেড়ে নিয়েছে। এখনও ১৫ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকের পরিবারের সদস্যরাও করোনায় আক্রান্ত।” সূত্র: বিডিনিউজ
×