ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দুই ঘণ্টা আইনজীবীর লাশের কাছে যায়নি কেউ

প্রকাশিত: ১৮:০১, ২৬ জুন ২০২০

দুই ঘণ্টা আইনজীবীর লাশের কাছে যায়নি কেউ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী মহানগরীতে চেয়ার বসা অবস্থায় একজন আইনজীবী মারা গেছেন। তার মৃত্যুর পর দুই ঘণ্টা কেউ লাশের পাশে যাননি। দীর্ঘসময় চেয়ারের ওপরেই ছিল লাশ। পরে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন লাশ সৎকারের ব্যবস্থা করেছে। পরে খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কর্মীদের একটি দল তার করোন পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে। এই আইনজীবীর নাম কৃষ্ণ কমল দত্ত (৮৫)। তিনি নগরীর কুমারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। কুমারপাড়া এলাকার কালিমাতা মন্দিরের পেছনের বাড়িটিই তার। বাড়িতে তিনি একা থাকতেন। কৃষ্ণ কমল নিঃসন্তান ছিলেন। তার স্ত্রী দীর্ঘ দিন ধরেই তার সঙ্গে থাকেন না। কৃষ্ণ কমল রাজশাহী ও নাটোর জেলা জজ আদালত ও বিভাগীয় শ্রম আদালতে ওকালতি করতেন। প্রায় ১০ দিন ধরে তিনি জ¦র ও কাশিতে ভুগছিলেন। তবে তার শ্বাসকষ্ট ছিল না। করোনায় তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে প্রতিবেশিরা কেউ লাশের কাছে যাননি। দুই ঘণ্টা লাশ চেয়ারেই ছিল। মৃতের ছোট ভাইয়ের ছেলে সুইট কুমার দত্ত জানান, এ বাড়িতে কৃষ্ণ কমল দত্ত একাই থাকতেন। তার অসুস্থতার জন্য গত মঙ্গলবার তিনি নাটোরের সিংড়া থেকে এসেছেন। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তিনি বাইরে খাবার আনতে যান। কিছুক্ষণ পর এসে দেখেন চেয়ারে বসা অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। সুইট কুমার দত্ত আরও জানান, বৃহস্পতিবার কৃষ্ণ কমল দত্তকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। করোনার উপসর্গ আছে জেনে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে রাজশাহীর খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে চিকিৎসক কয়েকটি ওষুধ দেন। এরপর তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। তখন করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে চাইলেও কৃষ্ণ কমলের নমুনা নেয়া হয়নি। মিশন হাসপাতালে তাকে জানানো হয়, করোনার পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। বাসায় বিশ্রামে থেকে নিয়ম মেনে ওষুধ খেলেই তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন। কৃষ্ণ কমলের মৃত্যুর পর প্রতিবেশিরা বিষয়টি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের জানান। তারা খবর দেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে। দুপুর সাড়ে ১২টার পর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের সদস্যরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাশ সৎকার করেন। এর আগে জীবানুনাশক ছিটিয়ে লাশ শ্বসানে নিয়ে যাওয়া হয়।
×