ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কচুরিপানার দাপটে অস্তিত্বের সংকটে টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস!

প্রকাশিত: ১৫:৫৮, ২৬ জুন ২০২০

কচুরিপানার দাপটে অস্তিত্বের সংকটে টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস!

অনলাইন ডেস্ক ॥ পানিতে ভেসে রয়েছে গাঢ় সবুজ কচুরিপানা। তাতে ফুটে রয়েছে অজস্র বেগুনি রঙের ফুল। এমন দৃশ্য কার না ভালো লাগে। প্রাকৃতিক শোভায় চোখ ভরে ওঠে। কিন্তু কচুরিপানা আসলে এমন এক উদ্ভিদ যা কিনা বিশাল জলাশয়কেও অস্তিত্বসংকটের মুখে ফেলে দিতে পারে। ইরাকের দুই নদী টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস এবার অস্তিত্বসংকটের মুখে। কচুরিপানার দাপটে এ দুই ঐতিহাসিক নদী এখন মহাবিপদে। কীভাবে এই দুই নদীকে রক্ষা করা যাবে তা বুঝে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে ইরাকের প্রশাসন। দিন দিন পানি কমে আসছে নদীতে। একে তো দূষণ আছেই। যেখানে-সেখানে বাঁধ নির্মাণের জন্য সৃষ্টি হয়েছিল সমস্যা। তার ওপর নতুন করে কচুরিপানার সমস্যা! বিশ্বের উষ্ণতম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম ইরাক। প্রতিবছরই খরা সমস্যায় ভোগে তারা। এমনিতেই টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর পানি ব্যবহার হয় ব্যাপক হারে। তবে কয়েক বছর ধরে এই দুই নদীতে কচুরিপানার পরিমাণ বাড়ছে। একেকটি কচুরিপানা দিনে পাঁচ লিটার পর্যন্ত পানি শোষণ করতে পারে। তা ছাড়া কচুরিপানার পাতা সূর্যের আলো নদীর পানিতে পৌঁছতে দেয় না। ফলে অক্সিজেনের সরবরাহ বাধা পায়। এতে নদীর বাস্তুতন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। মাছ মারা যায়। স্থানীয় জেলেদের জীবিকাসংকট দেখা দেয়। ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলের বহু মৎস্যজীবীর জীবিকা নির্বাহ হয় ইউফ্রেটিস নদীতে মাছ ধরে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে সেখানে বেড়ে ওঠা কচুরিপানা সমস্যা সৃষ্টি করছে। পূর্ব বাগদাদের বহু মানুষ আবার টাইগ্রিস নদী থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, দুই বছর ধরে তাঁরা মাছ শিকার করতে পারছেন না তেমনভাবে। ইরাকের চাষবাসের ওপর প্রভাব পড়েছে। এমনিতেই এ দুই নদীতে পানি কমে আসায় সমস্যা বাড়ছিল চাষিদের। এবার নতুন করে দেখা দিয়েছে কচুরিপানার সমস্যা। ফলে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে চাষাবাদে। জলের স্তর নেমে গেছে অনেক নিচে। স্থানীয় বাজারে এখন সবজির বিক্রি কমেছে এক-তৃতীয়াংশ। এ ছাড়া আরো একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক হাজার বর্গফুট আয়তনের কচুরিপানা হতে পারে পাঁচ টন পর্যন্ত। এতে নদীর দুর্বল পারর ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে সেতু বাঁধ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলে এমনিতেই পানীয় জলের সংকট রয়েছে। দুই নদীর বেহাল দশায় সমস্যা আরো বেড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের অবহেলা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের জন্যই নদীতে কচুরিপানা বেড়েছে। ইরাকের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মেশিনের মাধ্যমে নদী থেকে কচুরিপানা সরানোর কাজ দ্রুত শুরু হবে।
×