ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢল: তিস্তায় বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ২৫ জুন ২০২০

ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢল: তিস্তায় বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ ভারী বর্ষণের সাথে উজান থেকে ধেয়ে আসা ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৬টা পর্যন্ত নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদ সীমার দশমিক ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত (বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) হচ্ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। ফলে শোঁ শোঁ শব্দে তিস্তার পানি ভাটির দিকে ধাবিত হচ্ছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পুর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্র সুত্র মতে তিস্তা নদীর ডালিয়া অববাহিকা ও তার পাশ্ববর্তী এলাকায় ২৪ ঘন্টায় ১৪২ মিলিমটিার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ দিন নীলফামারী জেলা সদরে ১২০ মিলিমিটার ও ডিমলা উপজেলায় ১০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে কৃষি বিভাগ ও আবহাওয়া অফিস। ভারী বৃস্টিপাতের কারনে জেলার নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়। এ ছাড়া অন্যান্য ছোট বড় নদীগুলোর পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা অববাহিকার ৫টি ইউনিয়নের চরের ফসলি জমি গুলো প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত চরখড়িবাড়ি এলাকার একটি ক্রস বাঁধ হুমকীর মুখে পড়েছে। তিস্তা ব্যারাজের উজানে পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়শিঙ্গেশ্বর চরের মাঝি আছির উদ্দিন(৫৫)মুঠোফোনে জানান উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং ভারী বৃষ্টিতে গ্রামের ভেতর পানি ঢুকছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের কিসামত চরের মাঝি সহিদুল ইসলাম (৫০) জানান তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাত ও প্রবল বেগে উজানের ঢল প্রবাহিত হওয়ায় পূর্বখড়িবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তিস্তা ব্যারাজের ভাটির খাঁলিশা চাঁপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর চরের মাঝি মোতালেব হোসেন (৪২) জানান ভারী বর্ষন ও উজানের ঢল আসায় তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দেয়ায় তিস্তার পানি বাইশপুকুর চরের ভেতর প্লাবিত করেছে। ডিমলা পূর্বছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খাঁন জানান টানা-বর্ষণে এবং তিস্তার নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধির কারণে তিস্তার তীরবর্তী গ্রাম ও চরাঞ্চলের অধিকাংশ পরিবার অনেকেই মাছের খামার জাল দিয়ে ঘিরে রাখছে,কেউ গবাদি পশু,হাঁস-মুরগী উঁচু স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। যে কোন সময় তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। তিনি উল্লেখ করে জানান চলতি বছরে গত শনিবার (২০ জুন) সকাল ৬টা তিস্তার পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও ২৪ ঘন্টা পর সে পানি নেমে যায়। তিনি বলেন উজানে ও স্থানীয় এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে বন্যার আলামত উঠে এসেছে।
×