ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অভিনেতা সুশান্তের চূড়ান্ত ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ

প্রকাশিত: ১৯:২৮, ২৫ জুন ২০২০

অভিনেতা সুশান্তের চূড়ান্ত ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ

অনলাইন ডেস্ক ॥ মৃত্যুর ১০ দিন পর চূড়ান্ত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন সুশান্ত সিং রাজপুতের চিকিৎসকেরা। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, আত্মহত্যাই করেছেন অভিনেতা। গলায় ফাঁস লাগার ফলে দম বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পাশাপাশি রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। এর আগে তাঁর প্রাথমিক তদন্তেও একই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল মুম্বাই পুলিশ। সেখানেও মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল আত্মহত্যা। বর্তমানে সুশান্ত সিং রাজপুতের ভিসেরা রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে মুম্বাই পুলিশ। ১৪ জুন রবিবার বান্দ্রার বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন ৩৪ বছর বয়সী বলিউডের তরুণ নায়ক সুশান্ত সিং রাজপুত। প্রাণখোলা, হাসিখুশি এই নায়কের মৃত্যু ঘিরে উঠে এসেছে একাধিক প্রশ্ন। সুশান্তের পরিবারের দাবি, খুন করা হয়েছে তাদের সন্তানকে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও পুলিশের প্রাথমিক ধারণা এবং চূড়ান্ত ময়নাতদন্তের পর স্পষ্ট হলো, ঘটনাটি আত্মহত্যাই। নিজেকে নিজেই হত্যা করেছেন এ তারকা। মুম্বাই থেকে প্রকাশিত স্থানীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুর পরদিন প্রকাশিত প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্বাক্ষর করেছিলেন তিনজন চিকিৎসক। গতকাল স্বাক্ষর করেছেন পাঁচজন চিকিৎসক। রাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ফরেনসিক বিভাগেও চিঠি পাঠিয়েছে পুলিশ। নিয়ম অনুযায়ী সুশান্তের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছিল মুম্বাইয়ের ড. আর এন কুপার মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালে। হাসপাতালের রিপোর্ট বলছে, ঝুলে থাকায় অ্যাসফিক্সিয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে অভিনেতার। আমৃত্যু দড়িতে ঝুলে ছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিলে তার থেকে মানুষ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে কিংবা মারাও যেতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে অ্যাসফিক্সিয়া। সুশান্তের আত্মহত্যার ঘটনাটির তদন্ত করছে মুম্বাই পুলিশ। জানা গেছে, তদন্তের স্বার্থে মুম্বাই পুলিশ এ পর্যন্ত মোট ২৩ জনের বয়ান রেকর্ড করেছে। অভিনেতার পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন সুশান্তের কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। বলিউডের কাস্টিং ডিরেক্টর মুকেশ ছাবরা এবং সুশান্তের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মডেল-অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বান্দ্রা পুলিশ। এ ছাড়া যশ রাজ ফিল্মসের সঙ্গে সুশান্তের যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল, সেটাও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী আধিকারিকেরা। পুলিশ সূত্রে খবর, যশ রাজ ফিল্মসের সঙ্গে চুক্তি ভেঙে দিয়েছিলেন সুশান্ত। পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছেন রিয়া চক্রবর্তী। এমনকি রিয়াকেও চুক্তি ভাঙার পরামর্শ দেন সুশান্ত। ২০১২ সালে যশ রাজ ফিল্মসের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট সই করেন সুশান্ত সিং রাজপুত। এরপর ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’ এবং ‘ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী’—যশ রাজের ব্যানারে এই দুই ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। এসব সূত্রে সুশান্তের এই মর্মান্তিক পরিণামের জন্য বলিউডকে দায়ী করেছেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌতসহ আরও বেশ কয়েকজন। এ জন্য তাঁরা বলিউডের ‘স্বজনপোষণ’ নীতিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তাঁদের ভাষ্য, সুশান্ত আত্মহত্যা করেননি, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। বলিউডের কিছু মানুষের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অনেকেই। ১৯৮৬ সালের ২১ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া সুশান্ত পাঁচ ভাই–বোনের মধ্যে সবার ছোট। তাঁর বড় চার বোন আছেন। ২০১৩ সালে ‘কাই পো চে’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে সুশান্তর। একই বছরে মুক্তি পায় ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’। ২০১৬ সালে ‘ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ মুক্তির পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সুশান্তকে।
×