ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সমালোচনাকারীদের প্রতি মামুনুলের অনুরোধ

‘জাতীয় দল নিয়ে বাজে মন্তব্য করবেন না’

প্রকাশিত: ০০:০৩, ২৫ জুন ২০২০

‘জাতীয় দল নিয়ে বাজে মন্তব্য করবেন না’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সাম্প্রতিক সময়ে বাফুফের নির্বাচন নিয়ে তুলকালাম কা- শুরু হয়েছে। বর্তমান সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিনকে নানা বিষয়ে দোষারোপ করা হচ্ছে অতীতের মতোই। রেহাই পাননি বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগও। এমনকি জাতীয় দল নিয়েও অনেক ধরনের আজে বাজে মন্তব্য করছেন সালাউদ্দিন বিরোধীরা। নিজে জাতীয় ফুটবল দলের অংশ বলেই এই ধরনের বাজে মন্তব্য চুপচাপ হজম করতে পারেননি মামুনুল ইসলাম। জাতীয় দলের সাবেক এই মিডফিল্ডার মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন। মন্তব্যকারীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের খেলা এখন অনেক গোছানো। জাতীয় দলের সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোর মধ্যে এশিয়ান গেমসের দ্বিতীয় রাউন্ডে কোয়ালিফাই করা, কাতারের সঙ্গে জয়, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রতিটি ম্যাচের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পারফর্মেন্স, ভারতের মাটিতে ভারতের সঙ্গে ড্র ... এসব তো পেশাদারিত্ব ও উন্নতিরই দৃষ্টান্ত।’ ৩১ বছর বয়সী এ্যাটাকিং এই মিডফিল্ডার সবাইকে অনুরোধ করে আরও যোগ করেন, ‘ইতিবাচকভাবে সমর্থন করুন যেন খেলোয়াড়েরা অনুপ্রেরণা পায় এবং এজন্য আসছে এএএফসি ও বিশ্বকাপ বাছাইপর্বসহ আগামী দিনের ম্যাচগুলো মাঠে এসে দেখুন এবং সব ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য এড়িয়ে চলুন।’ জাতীয় ফুটবল দলের পারফর্র্মেন্স ভাল নয় এবং জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের আগের ফুটবলারদের মতো সামর্থ্যও নেই। ফুটবলের অন্যসব ক্ষেত্রে অগ্রগামিতা থাকলেও জাতীয় দল ভাল রেজাল্ট করতে না পারায় সব অর্জন ঢাকা পড়ছে- দীর্ঘদিন ধরেই ফুটবলারদের নিয়ে এমন সমালোচনা হচ্ছে; কিন্তু জাতীয় দলের সিনিয়র খেলোয়াড় মামুনুল উদিয়ে দিয়েছেন এসব অভিযোগ, ‘জাতীয় দলের খেলার আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। যারা খেলা দেখেন তারাই বুঝতে পারবেন সেটা।’ এক ভিডিও বার্তায় বুধবার এ কথা বলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করা মামুনুল আরও বলেন, ‘বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রতিটি ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পারফর্মেন্স ছিল আমাদের। ভারতের মাটিতে তাদের বিপক্ষে জিততে জিততে ড্র হয়েছে। কাতারের বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তে গোল না হজম করলে হারের ব্যবধান কম হতো। গোল মিস না হলে ড্রও হতে পারত। এ সবকিছুই পেশাদারিত্ব ও উন্নতিরই দৃষ্টান্ত।’ বিকেএসপির সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন মামুনুল। ২০০০ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হন। ২০০৩ সালে অনুর্ধ-১৭, ২০০৫ সালে অনুর্ধ-১৯ ও ২০০৬ সালে অনুর্ধ-২৩ জাতীয় দলের হয়ে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। জাতীয় দলে অভিষেক ২০০৭ সালে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ২০১৩ সালে বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন। পেশাদার লীগে তিনি ব্রাদার্স ইউনিয়ন, শেখ রাসেল, মোহামেডান, মুক্তিযোদ্ধা, চট্টগ্রাম আবাহনী, শেখ জামাল ধানম-ি এবং ঢাকা আবাহনীতে (বর্তমান ক্লাব) হয়ে খেলেছেন। মামুনুল ২০১৪ আইএফএ শিল্ডে ভারতীয় ফ্যানদের মুগ্ধ করেন, ফলে অনেক ভারতীয় ক্লাব তাকে কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে। দুটো সাফে খেললেও দলকে কোন শিরোপা এনে দিতে পারেননি মামুনুল। তবে খেলোয়াড় হিসেবে জিতেছেন ২০১০ এসএ গেমসে ফুটবলে স্বর্ণপদক। সেবার বাংলাদেশ অনুর্ধ-২৩ দল নিজেদের মাটিতে আফগানিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। এছাড়া ২০১৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ’-এ মামুনুলের নেতৃত্বে বাংলাদেশ রানার্সআপ হয়। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ৬০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক পান, যা তখন দেশীয় ফুটবলারদের মধ্যে রেকর্ড ছিল। ২০১৪ সালে চুক্তিবদ্ধ হন ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্লাব ভারতের এ্যাটলেটিকো ডি কলকাতার সঙ্গে, যা প্রথম বাংলাদেশী কোন ফুটবলারের কৃতিত্ব। যদিও কোন ম্যাচ খেলেননি। ২০১২-১৩ মৌসুমে শেখ রাসেলের হয়ে ট্রেবল শিরোপা জেতেন। পরে শেখ জামালের হয়ে জেতেন কিংস কাপ, প্রিমিয়ার লীগ, ফেডারেশন কাপ। রানার্সআপ হন আইএফ শিল্ডে।
×