ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভয়াবহ পরিস্থিতি আসছে

প্রকাশিত: ২৩:৫৩, ২৫ জুন ২০২০

ভয়াবহ পরিস্থিতি আসছে

সামনের কয়েক দিন যুক্তরাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে সতর্ক করেছেন সেদেশের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এ্যান্টর্নি ফাউসি। তিনি বলেন, বর্তমানে কিছু অঙ্গরাজ্যে করোনাভাইরাসের বিরক্তিকর উত্থান দেখা যাচ্ছে। তবে সামনের দিনগুলোতে এ সংক্রমণ আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। Ñ খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও সিএনএন অনলাইনের। কোভিড-১৯ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে এক লাখ ২৩ হাজার ৪৭৩ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। মোট আক্রান্ত ২৪ লাখ ২৪ হাজার ১৬৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৬ হাজারেরও বেশি আক্রান্ত হয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় অর্ধেক অঙ্গরাজ্যে নতুন করে সংক্রমণ বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তরুণ জনগোষ্ঠী। যাদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। মঙ্গলবার দেশটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ফাউসি বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও একদিনে নতুন করে ৩০ হাজার আক্রান্ত হওয়ার চিত্র দেখা গেছে। এই চিত্রটা আমার কাছে খুবই কষ্টদায়ক। তবে আমরা বর্তমানে টেক্সাস, ফ্লোরিডা, আরিজোনাসহ অন্য অঙ্গরাজ্যে করোনার যে ঢেউ দেখছি তা আগামী কয়েক সপ্তাহে ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।’ সম্প্রতি ওকলাহোমায় এক নির্বাচনী প্রচার সভায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, করোনা সংক্রমণের সংখ্যা সরকারী হিসেবে যাতে কম দেখানো যায় সেজন্য টেস্টিং কমিয়ে দেয়ার জন্য তিনি তার টিমকে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে করোনা টেস্টিং কমিয়ে দেয়ার জন্য জন্য কাউকে নির্দেশ দেয়া হয়নি বলেও জানান দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এ্যালার্জি এ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের পরিচালক ডাক্তার ফাউসি। তিনি বলেন, আমি যতদূর জানি, আমাদের কাউকে পরীক্ষা কমিয়ে দেয়ার জন্য বলা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, আমরা পরীক্ষার হার আরও বাড়িবে দেব। করোনায় বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে এবার নতুন করে সংক্রমণের দিকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকছে তরুণরা। দেশটিতে করোনায় এ পর্যন্ত ২৩ লাখ ৮৮ হাজার ১৫৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৬১০ জন। দেশটির সরকারী কর্মকর্তারা বলছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলা নীতিকে অগ্রাহ্য করার কারণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তরুণরা। যদিও করোনায় মৃতের মধ্যে তরুণদের সংখ্যা কম, তারপরও করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন- এমন ব্যক্তিরা (বয়স্করা) তাদের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এ্যান্ড প্রিভেনশন ইনস্টিটিউটের সাবেক ডিরেক্টর ড. টম ফ্রেইডেন এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘ফ্লোরিডার মতো কিছু কিছু জায়গায় যুবকরা সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তরুণদের মাধ্যমে অন্যরা আক্রান্ত হবেন।’ তবে তরুণদের করোনা সংক্রমণের লম্বা লাইন দেখে বিস্মিত নন দেশটির শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ফাউসি। ফ্রাইডেনের মতো তার শঙ্কা সামনের দিনগুলোতে তরুণদের সংক্রমণের চিত্র নিয়ে। ফাউসি বলেন, ‘প্রথমে তারা সংক্রমিত হচ্ছেন, তারপর তারা বাসায় আসছেন। বাসায় আসার পর তাদের মাধ্যমে পরিবারের বয়স্করা সংক্রমিত হচ্ছেন এবং তারা জটিলতায় ভুগছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। ক্যাবল টেলিভিশন চ্যানেল স্পেকট্রাম নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেন, ‘এটি দেড় লাখ পর্যন্ত হতে পারে। এটি এ সংখ্যা অতিক্রমও করতে পারে। তিনি বলেন, ‘তবে আমরা (এ ভাইরাসের তীব্রতা হ্রাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে) ২০ লাখ থেকে ৪০ লাখ মানুষ হারাতে পারি।’ মধ্য মার্চে ইম্পেরিয়াল কলেজ অব লন্ডন প্রকাশিত এক জরিপে চরম ছোঁয়াচে এ ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া মোকাবেলায় কোন প্রচেষ্টা চালানো না হলে যুক্তরাষ্ট্রে ২২ লাখ মানুষের মৃত্যুর সম্ভাবনার বিষয়ে সতর্ক করে দেয়া হয়।
×