ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্মিথ যখন কোহলির ভক্ত

প্রকাশিত: ০০:৫৯, ২৪ জুন ২০২০

স্মিথ যখন কোহলির ভক্ত

সময়ের দুই সেরা উইলোবাজ বিরাট কোহলি আর স্টিভেন স্মিথ। দুজনের মধ্যে কে সেরা, তা নিয়ে ক্রিকেট বিশ্ব দুই ভাগ হতেই পারে। অথচ এই তুলনায় বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই কোহলি ও স্মিথের। দুই দেশের দুই তারকা একে অপরের প্রতি ভীষণ শ্রদ্ধাশীল। গত বিশ্বকাপে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে দর্শকরা স্মিথকে দোয়া দিয়েছিলেন। অসি তারকার পাশে দাঁড়িয়ে দর্শকদের থামিয়েছিলেন কোহলি। এবার ভারত অধিনায়ককে প্রশংসায় ভরিয়ে স্মিথ বলেছেন, ‘আমি বিরাটকে খুব পছন্দ করি। সে দুর্দান্ত ক্রিকেটার। অবিশ্বাস্য সব রেকর্ডের মালিক সে। ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য অনেক কিছু করেছে বিরাট। ও যে ধরনের প্যাশন দিয়ে খেলে, ভারতের ক্রিকেটেও সেই প্যাশনটাই দেখা যায়।’ ওয়ানডে ক্রিকেটে রান তাড়ায় নেমে চাপের মুখে দারুণ খেলেন কোহলি। যে কারণে তার নাম হয়ে গেছে ‘চেজমাস্টার’। রান তাড়া করা ম্যাচে কোহলির ওয়ানডে গড় ৬৮। আর যদি সফল রান তাড়া হয় তবে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৬! যা স্মিথের কাছেও অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়। আর কোহলির এই গুণ স্মিথকে বেশি আকৃষ্ট করে জানিয়েছেন তুখোড় অস্ট্রেলিয়ান উইলোবাজ, ‘সাদা বলের ক্রিকেটে (ওয়ানডে ও টি২০) কোহলি যেভাবে রান তাড়া করে, তা দুর্দান্ত। অত্যন্ত ফিট ক্রিকেটার এবং সেই সঙ্গে শক্তিশালীও বটে। চাপের মুখে শান্ত থাকে। বেশিরভাগ সময় নিজের কাজটা শেষ করে মাঠ ছাড়ে। সে ক্রিকেটের সম্পদ। এরকম একজনকে ভাল না লেগে উপায় আছে?’ তিন ফরম্যাটে ধারাবাহিকভাবে পঞ্চাশের বেশি গড়ে রান তুলে থাকেন কোহলি। এরমধ্যে সাদা বলের ওয়ানডে ক্রিকেটে রান তাড়ার ক্ষেত্রে কোহলি সত্যি অনন্য। স্মিথ আরও যোগ, ‘আমি আবারও উল্লেখ করব, কোহলির যে জিনিসটা আমাকে বেশি আকৃষ্ট করে তা হলো, রান তাড়া করে সাফল্য এনে দেয়ার অবিশ্বাস্য সফলতা। আপনি ওয়ানডেতে ভারতীয়দের জয়ের ম্যাচে কোহলির গড় দেখুন। এটা, অসাধারণ।’ বিরাটকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন স্মিথ, ‘মাঠে আমার সঙ্গে বেশ কয়েকবার তার সঙ্গে কথা হয়েছে। এছাড়া এদিক সেদিকে বেশ কয়েকবার কথা বলেছি। সা¤প্রতিক সময়ে ভারতের অবস্থা জানার জন্য কথা হয়েছে। অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। আমরা দুজনই মাঠে কঠিন প্রতিপক্ষ। দলের জন্য সব সময় আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে মুখিয়ে থাকি।’ গত বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নামার সময় দর্শকদের থেকে দুয়োধ্বনি পাচ্ছিলেন স্মিথ। ভারতের অধিনায়ক কোহলি দর্শকদের থামিয়ে স্মিথের জন্য তালি দেয়ার আহŸান করেন। এজন্য আইসিসির স্পিরিট অব ক্রিকেট এ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন কোহলি। কোহলির সেই মহানুভবতা এখনও মনে রেখেছেন স্মিথ, ‘আমি তার অবদানকে শ্রদ্ধা করি এবং আমি তার সঙ্গে এটা নিয়ে কথাও বলেছিলাম। যেভাবে সে ভারতীয় দলকে পরিচালনা করছে এক কথায় অসাধারণ।’ আগামী অক্টোবর ও জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া সফর করবে ভারত। তিন ওয়ানডে এবং টি২০’র পাশাপাশি চার টেস্ট। দুই পরাশক্তির দ্বৈরথটা পাঁচ টেস্টেরও হতে পারে। নিষেধাজ্ঞার কারণে ঘরের মাঠে আগেরবার খেলতে না পারা স্মিথের এবার আর তর সইছে না, ‘অসাধারণ একটি সিরিজ খেলতে মুখিয়ে আছি। বলার অপেক্ষা রাখে না দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে আছি। যখন ফিরব তখন প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক ক্রিকেট পাব। সিরিজটি অবিশ্বাস্য হবে।’ এদিকে করোনাকালে কঠোর নিয়মের মধ্য দিয়ে মাঠে ফিরতে যাচ্ছে ক্রিকেট। ইংল্যান্ড, উইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কার মতো অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররাও অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন। কোহলি স্বীকার করেছেন টানা প্রায় আড়াই মাস ঘরে বসে থাকার পর ফের ব্যাট-বলের দুনিয়ায় মানিয়ে নেয়াটা সহজ হবে না। আর এই সময়টায় ব্যাটিং অনুশীলন না করলেও শারীরিক ও মানসিক ভাবে ফিট থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন অস্ট্রেলিয়ান তারকা স্টিভেন স্মিথ, ‘সত্যি বলছি, আমি ব্যাট ছুঁইনি। বাড়িতে শুধু কিছু ছোটখাটো অনুশীলন করেছি। আমি একটু (ক্রিকেট থেকে) দূরে থাকতে চেয়েছি। এমনটা তো আর বেশি হয় না। আমার সব মনোযোগ ছিল নিজেকে কিভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে চাঙা রাখা যায় তার ওপর।’ সিডনির অলিম্পিক পার্কে অনুশীলনে যোগ দিয়ে বলেন সাবেক অসি-অধিনায়ক। আইপিএল নাকি টি২০ বিশ্বকাপ?- করোনা পরবর্তী সময়ে কোনটি হওয়া উচিত, এমন আলোচনা এখন ক্রিকেট বিশ্বে। স্মিথও চান আইপিএল খেলতে, তবে বিশ্বকাপের আগে নয়, ‘আমি মনে করি, আপনি যখন দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছেন, সেটাই সর্বোচ্চ চূড়া, হোক ওয়ানডে বা টি২০। তাই অবশ্যই আমি আগে বিশ্বকাপ খেলার কথাই বলব। তবে যদি বিশ্বকাপ না হয় এবং তার বদলে আইপিএল হয়, তাহলে তাই হোক।’
×