ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় কাজ হারানো মার্কিনীদের কর্মসংস্থান তৈরিই লক্ষ্য

গ্রীন কার্ড দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০০:০৭, ২৪ জুন ২০২০

গ্রীন কার্ড দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

বিদেশীদের জন্য গ্রীন কার্ড ও ভিসা স্থগিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত এসব ভিসা দেয়া থেকে বিরত থাকবে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষের ভিসা ও গ্রীন কার্ড স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার ট্রাম্প নিজেই এক টুইটার বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন। খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন নাগরিকদের জন্য বাড়তি কাজের বাজার তৈরি করার জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোয়াইট হাউস। খবর এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের। এ বিষয়ে সমালোচকরা বলছে করোনা মহামারীকে কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসী আইন আরও কঠিন করে তুলছে। ৫ লাখ ২৫ হাজার চাকরিতে এর প্রভাব থাকবে। মার্কিন ভিসায় কড়াকড়ি সংক্রান্ত এই জাতীয় পদক্ষেপ যে আসতে চলেছে, সে কথা গত শনিবারই একটি চ্যানেলকে জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সোমবারই বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় ট্রাম্প প্রশাসন। সোমবার রাতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট প্রশাসনিক ডিক্রি-বলে ভিসায় রাশ টানার সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে বলবৎ করছেন। এ বছরের শেষ পর্যন্ত আর কোন ওয়ার্ক ভিসা দেয়া হবে না। করোনা মহামারীতে আমেরিকায় মৃত্যুর মিছিল শুরু হওয়ার জেরে বিভিন্ন প্রদেশে লকডাউন জারি করতে বাধ্য হয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। যার ফলে গোটা আমেরিকা আর্থিক মন্দার কবলে পড়ে। চাকরি খুইয়েছেন ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ। আর তখনই দেশের নাগরিকদের চাকরির ব্যবস্থা করতে বেশ কয়েকটি ভিসা নীতিতে কড়াকড়ির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আপাতত এইচ-১ বি, এইচ ৪, এল-১ এবং জে ১ এই চার ধরনের ভিসা আর দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। তবে এইচ-১ বি ভিসায় যারা বর্তমানে আমেরিকায় রয়েছেন, নতুন নীতিতে তাদের ওপরে কোন আঁচ পড়বে না। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে মোট ২২ লাখ লোক করোনা আক্রান্ত হয়েছে। দেশটিতে এখন নতুন আক্রান্ত বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আরও ৩০৫ জন প্রাণ হারিয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত এসব মৃত্যু ঘটে। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা যায়। এ নিয়ে ১১তম দিনের মতো দেশটিতে কোভিড-১৯ ভাইরাসে দৈনিক মৃতের সংখ্যা হাজারের নিচে রয়েছে এবং মধ্য-এপ্রিলের পিক টাইমের পর থেকে তৃতীয়বারের মতো প্রতিদিনের মৃতের সংখ্যা ৪শ’র নিচে নেমে আসতে দেখা যাচ্ছে। এদিকে বৈশ্বিক এ মহামারীতে এখন পর্যন্ত বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে মোট ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৫৯ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে মোট ২২ লাখ ৭৮ হাজার ৩৭৩ জনে দাঁড়িয়েছে। গত মধ্য এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে একদিনে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে দেখা যায়। নিউইয়র্ক ও দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পরিবর্তে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার উৎপত্তি কেন্দ্রে পরিণত হওয়ায় এ দুই অঞ্চলের প্রায় ২০ অঙ্গরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ফের বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক সময়ে প্রাত্যহিক আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজারের নিচে নেমে আসতে দেখা গেলেও বিগত কয়েক দিন ধরে এ আক্রান্তের সংখ্যা ফের বেড়ে ৩০ হাজারের কাছাকাছি চলে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ফের খুলে দেয়ায় এবং সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দেশব্যাপী বর্ণবাদবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভের পর দেশটিতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস সঙ্কট দেখা দেয়ার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম নির্বাচনী সমাবেশ শনিবার রাতে ওকলাহোমায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে করোনাভাইরাস দ্রæত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকায় এ ধরনের সমাবেশ আয়োজনের সমালোচনা করা হয়।
×