ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের বিব্রতকর দৃষ্টান্ত’

প্রকাশিত: ২৩:৪৯, ২৪ জুন ২০২০

‘রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের বিব্রতকর দৃষ্টান্ত’

স্টাফ রিপোর্টার \ মানবপাচার ও অর্থপাচারের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ ও দুর্নীতির ঘটনায় সংসদ সদস্যের অভিযুক্ত হওয়াকে বাংলাদেশের রাজনীতি ও জনপ্রতিনিধিত্বে দুর্বৃত্তায়নের একটি অসম্মানজনক দৃষ্টান্ত। তাই সংসদের মর্যাদার স্বার্থে দ্রæত কার্যকর তদন্ত ও আইনী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় সংসদের প্রতি দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। মঙ্গলবার সংস্থাটি গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি করে। বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২০ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত কুয়েত ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে টিআইবির পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রথম থেকেই সরকার, জাতীয় সংসদ, দুদক, ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট, রাজস্ব কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এই অভিযোগের বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি, উল্টো দায়মুক্তির চেষ্টার লক্ষণ দেখা গেছে। যা সঠিক নয়। বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, মানবপাচারের মতো গুরুতর অভিযোগ নিয়ে কুয়েতের সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তথাকথিত তদন্তের পর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে লিখিত প্রতিবেদন দিয়েছেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আর আমাদের দেশের সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাতেই আশ^স্ত থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন। জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকেও কোন উদ্যোগের কথা জানা যায়নি। এমনকি স¤প্রতি ওই সংসদ সদস্যকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার ও তার সম্পদ বাজেয়াফতের পদক্ষেপের সংবাদ প্রকাশের পরও সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রী একাধিকবার জানিয়েছেন, কুয়েত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানালে তাদের কিছু করার নেই। দেশের সুনাম আর হাজার হাজার প্রবাসী শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ভবিষ্যত যেখানে জড়িয়ে আছে, সেখানে সরকারের এ ধরনের উদাসীনতা একই সঙ্গে লজ্জার ও আশঙ্কার। ড. জামান বলেন, কুয়েত সরকারের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের অপেক্ষায় না থেকে স্বপ্রণোদিতভাবে এই অভিযোগের বিরুদ্ধে তদন্ত করা সম্ভব ছিল ও উচিতও ছিল। যে হাজার হাজার শ্রমিককে কাজ দেয়ার নামে পাচার করা হয়েছে এবং কার্যত জিম্মি বানিয়ে দফায় দফায় অর্থ আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, তারা সবাই এদেশেরই নাগরিক। এই পাচারের ঘটনায় দেশের ভেতরে নিশ্চিতভাবেই একটি মানবপাচার চক্র গড়ে তোলা হয়েছিল, যাতে সরকারী-বেসরকারী এক বা একাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতাও অনিবার্য। যে সকল আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে তা বাংলাদেশেও ঘোরতর অপরাধ। তারপরও তদন্তের জন্য কুয়েতের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে কেন? এই ঘটনাপ্রবাহ থেকে এটুকু স্পষ্ট যে, বরাবরই অভিযোগের কার্যকর তদন্তে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছিল না এবং এর পেছনে বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের দৃশ্যমান যোগসাজশ ছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের উল্লেখ করে বিবৃতিতে মন্তব্য করা হয় যে, এই ন্যক্কারজনক ঘটনা দেশের রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের একটি দুঃখজনক দৃষ্টান্ত।
×