ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করোনায় উন্নয়নধারা

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ২৪ জুন ২০২০

করোনায় উন্নয়নধারা

আটই মার্চ দেশে প্রথম কোন ব্যক্তির করোনা শনাক্তের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিতভাবে সরাসরি জনগণের কাছে সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করার কারণেই তিনি এই বিশেষ উদ্যোগ নেন। দফায় দফায় তিনি নির্দেশনা প্রদান করেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেছেন। করোনার প্রকোপ থেকে দেশ ও জাতি কবে মুক্ত হবে সেটি অনিশ্চিত। তাই করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য উদ্যোগী হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। তারপরেও অন্ততপক্ষে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যে, ধারাবাহিকতটা বজায় রেখে উন্নয়নের মূল গতিটা ধরে রাখার। যে কারণে আমরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। রবিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে একনেক সভায় সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাৎপর্যপূর্ণ অভিমত প্রকাশ করেন। দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহŸান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সরকার করোনাভাইরাসের মধ্যেও উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জীবন চলতে থাকবে। এটি স্থবির থাকতে পারে না। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ৯ হাজার ৪৬০ কোটি ৯ লাখ টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ সরকারী অর্থায়নে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। সভায় ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩’ অনুমোদন দেয়া হয়। এর মাধ্যমে সারাদেশে বিভিন্ন এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতি বাড়াতে ২৮০টি সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্যরা (এমপি) বরাদ্দ পাবেন ২০ কোটি টাকা করে। এই টাকা দিয়ে তারা এলাকার রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট, হাটবাজার ও বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন করতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী বরাবরই মানবিক। দেশের সব জেলখানায় ভার্চুয়াল সিস্টেম স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি বলেন, কয়েদিরা যেন মানবিক সুযোগ-সুবিধা পায়, সেজন্য সব কারাগারই সংস্কার করতে হবে। কারাগার থেকে বন্দীর মাধ্যমে যা আয় হবে, তার অর্ধেক তারা পাবে। বাড়ি যাওয়ার সময় নিয়ে যাবে। স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেছেন, সংস্কার শুধু জামালপুর জেল নয়, অন্যান্য জেলও সংস্কার করতে হবে। একটা আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, জেলের বাসিন্দারা যেন মানসম্মত অবস্থায় থাকতে পারে। দশ বছর আগেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার কারাবন্দীদের জন্য মানবিক সদয় পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করে। কারাবিধিতে বন্দীদের অনুক‚ল একটি রীতি বহাল রয়েছে। কারা বিধির ১ম খÐে ৫৬৯ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দীদের রেয়াতসহ ২০ বছর সাজা ভোগের পর মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি দীর্ঘকাল যাবত স্থবির হয়ে পড়েছিল। বর্তমান সরকারের, আরও নির্দিষ্ট করে বললে বলতে হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমেই ওই বিধির আওতায় হাজার বন্দীর মুক্তিলাভ ঘটে এক দশক আগে। প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে কারা ভোগকারী বৃদ্ধ, নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ এক হাজার বন্দীকে মুক্তি দেয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। দ্রæততম সময়ের ভেতর ওই নির্দেশ পালনের জন্য কারা কর্তৃপক্ষ প্রশংসাও পান। বন্দীমুক্তির এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকা দরকার। এতে মানবিকতার বাইরে এর একটি ভিন্ন দিকও রয়েছে। বর্তমানে দেশের ৬৭টি কারাগারে (একটি মহিলা কারাগারসহ) ধারণ ক্ষমতার প্রায় তিনগুণের বেশি বন্দী অবস্থান করছেন। এতে বন্দীদের আবাসন সমস্যাও অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
×