ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কুড়িগ্রামে ধরলা নদীতে ভাঙ্গন

প্রকাশিত: ১৯:২০, ২৩ জুন ২০২০

কুড়িগ্রামে ধরলা নদীতে ভাঙ্গন

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ‘তিনবার বাড়ি ভাঙি নদীর কাছে পড়ে ছিলাম। এখন তাও ভাঙ্গছে। জমি নাই, ভিটা নাই আমরা কোথায় এখন যাব জানিনা - ধরলার ভাঙ্গনে সবকিছু হারানো ৭৫ বছরের জোসনা বালা এ কথা বলেই কাঁদতে লাগলেন। বলেন, ‘কয়দিন থেকে রাতে ঘুম পারতে পারি না। কখন মাটি ভেঙ্গে যায় নদীর স্রোতে এ জন্য একদম ঘুমাতে পারি না। জেগে থাকি। জোসনা বালা কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার জয়কুমর কামার পাড়ার বাসিন্দা। বয়স্ক, বিধবা, ভিজিডি জাতীয় কোন ভাতা না পাওয়া এই হতদরিদ্র বৃদ্ধা সারাদিন নদীর পাড়ে বসে বসে কাঁদছেন। আর মাঝেমধ্যে বিলাপ করছেন। ধরলার প্রবল স্রোতের আঘাত হানছে দিনে-রাতে। ঘর-বাড়ি সরানোর পাশাপাশি গাছপালা, বাঁশঝাড় কাটার হিড়িক পড়েছে। তাও সব রক্ষা করা যাচ্ছেনা। আজ মঙ্গলবার সরেজমিন ধরলা পারের কামারপাড়া গিয়ে দেখা গেছে, অনেকেই আধাপাকা আর পাকা বাড়ি ভেঙে ফেলতে বাধ্য হচ্ছে। এই গ্রামের জিয়াউল হক জানান, ভাঙন রোধে কোন ব্যবস্থা নেয়ার লক্ষণ নেই। এ অবস্থায় বাড়ি না সরিয়ে উপায় নেই। ঘর সরিয়ে নিতে ব্যস্ত বাদশা আলম, সেকেন্দার, নুর জামাল, আমিনুরসহ অনেকেই। তারা জানান, বর্ষা শুরুর আগে থেকে ভাঙন শুরু হয়েছে । এ পর্যন্ত ২০টি পরিবার ভিটে হারিয়েছে। হুমকিতে রয়েছে আরো অর্ধশত পরিবার ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, জেলার ১৭টি পয়েন্টে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি পয়েন্টে তীর প্রতিরক্ষার কাজ চলছে। বাকীগুলোর কোথাও কোথাও বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে। তবে জয়কুমরসহ কয়েকটি এলাকায় অস্থায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কোন অনুমোদন না পাওয়াও কাজ শুরু করা যাচ্ছেনা।
×