ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেট দেখে মনে হয় না দেশে মহামারী ॥ ইনু

প্রকাশিত: ১৮:২৩, ২৩ জুন ২০২০

বাজেট দেখে মনে হয় না দেশে মহামারী ॥ ইনু

অনলাইন রিপোর্টার ॥ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে এই প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় প্রস্তাবিত বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ না দেখে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, এটি অস্বাভাবিক সময়ের ‘স্বাভাবিক’ বাজেট। মঙ্গলবার সংসদে ২০২০-২১ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, এবার দরকার ছিল ছকের বাইরে একটা বাজেট। কিন্তু বাজেট থেকে মনে হচ্ছে দেশে করোনা বলে কিছু নেই। এটি অস্বাভাবিক সময়ের একটি স্বাভাবিক বাজেট মাত্র। জাসদ সভাপতি বলেন, করোনার কারণে অনেক দেশ বাজেট তৈরি করতে পারেনি। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী এই সঙ্কটের মধ্যেও বাজেট দিয়ে আমাদের গর্বিত করেছেন। চলমান অস্বাভাবিক সময়ের উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনা মোকাবেলায় ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ এবং প্রধানমন্ত্রীর এক লাখ ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ছাড়া বাজেটের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ গতানুগতিক, গৎবাঁধা এবং ছকের মধ্যে সীমাবদ্ধ। দেশীয় শিল্প সুরক্ষাসহ কর খাতে কিছু ভালো প্রস্তাব থাকলেও বড় ধরনের কোনো সংস্কার প্রস্তাব নেই। দ্বার উন্মোচনকারী উদ্ভাবনী কিছু নেই।” সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, সঠিকভাবে অর্থমন্ত্রী অগ্রাধিকার নির্ণয় করলেও খাতভিত্তিক বরাদ্দ গতানুগতিক। এমন কোন বরাদ্দ নেই যেটা স্বাস্থ্য সেবার খোলনলচে বদলে দিয়ে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে। নতুন দরিদ্র ও নতুন কর্মহারা কাজ প্রত্যাশী ২৬ লাখ লোককে একটি স্থায়ী দিকে নিয়ে যাওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই। রাজস্বখাত, ব্যাংকিং খাত ও পুঁজিবাজার সংস্কারের দাবির কোনো বক্তব্য নেই। স্বাস্থ্যখাতে ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ এবং দুটি প্রকল্প মিলিয়ে ৪১ হাজার ২৭ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, এটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু মূল বরাদ্দ ৫ দশমিক ১ শতাংশ। গতবার এটা ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। মূল বরাদ্দ কমে গেছে। এ খাতে ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দে হবে না। আরও বরাদ্দ দেওয়া লাগবে। সরকারের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের জোট শরিক দলের এই নেতা বলেন, করোনা পুষে রেখে অর্থনীতি সচল হবে না। দুর্নীতি পুষে রেখে করোনা মোকাবিলা, অর্থনীতি সচল করা যাবে না। স্বচ্ছতা, সমন্বয়হীনতা ও অদক্ষতা দূর করে স্তরে স্তরে সুশাসন কায়েম করতে হবে। এলাকাভিত্তিক লকডাউনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, দেরিতে হলেও লাল-সবুজ-হলুদ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে। এটা ভালো কিন্তু এখানে ব্যবস্থাপনার কাজ তো করা হয়নি। স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে কাজ করবে সেই টিম নেই। কারিগরি নয়, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ একটি জাতীয় কমিটি দরকার। জনস্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দেবে। পুলিশ প্রশাসন এলাকা পাহারা দেবে। এজন্য কমপক্ষে ৫ হাজার কর্মী নিয়োগ দিতে হবে। আর তার জন্য এখনই থোক বরাদ্দ দরকার। কোভিড-১৯ মোকাবেলা, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ ও সামাজিক সুরক্ষা- এই তিনটি খাত বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণে টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব করেন জাসদ সভাপতি। গণমাধ্যমের প্রসঙ্গ টেনে সাবেক তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম এখন ধুঁকছে। কর্পোরেট কর ২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামাতে হবে। নিউজপ্রিন্টের ওপর থেকে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করতে হবে। বিজ্ঞাপন আয়ের উৎসে কর ৪ শতাংশের স্থলে ২ শতাংশ করতে হবে। কাঁচামালের ওপর ৫ শতাংশ আবগারি শুল্ক কমিয়ে শূন্য করতে হবে। টেলিকম সেক্টরে মোবাইলের ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে। ইন্টারনেটের ওপরের ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে।
×