ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বড়লোক হতে চাইলে পুলিশের চাকরি ছাড়ুন ॥ বেনজীর

প্রকাশিত: ০০:০৬, ২৩ জুন ২০২০

বড়লোক হতে চাইলে পুলিশের চাকরি ছাড়ুন ॥ বেনজীর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশের পুলিশকে আবারও সতর্ক করলেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। এবার বলেছেন, পুলিশের কেউ অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে সম্পদ গড়তে পারবে না। বড়লোক হতে চাইলে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করুন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এছাড়া তিনি প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে এসে সেবা দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করতে চান বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন একটি ব্যবস্থা চালু করতে চাই, যাতে জনগণকে পুলিশের কাছে আসতে না হয়- বরং পুলিশই জনগণের কাছে সেবা নিয়ে যাবে। রবিবার রাতে সারাদেশের পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আইজিপি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, কোন পুলিশ সদস্য অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন না। দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে কেউ যদি বড়লোক হতে চায়, তাহলে সে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করুক বড় লোক হোক, আমরা তাকে সাধুবাদ জানাব। কিন্তু পুলিশে থেকে কোনভাবেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা যাবে না। ড. বেনজীর আরও বলেন, পুলিশকে মাদকমুক্ত হতে হবে। কোন পুলিশ সদস্য মাদক গ্রহণ করবে না, মাদকের ব্যবসা করবে না, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না। বাংলাদেশকে একটি মাদকমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের সবাইকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। জনগণকে ভালবাসতে হবে, তাদের পাশে থাকতে হবে। তাদের জন্য কাজ করতে হবে। দায়িত্ব পালনকালে নিপীড়ন-নির্যাতনের মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আইনী সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে। পুলিশকে সব ধরনের নির্যাতন থেকে বেরিয়ে এসে জনগণের পুলিশ হয়ে উঠতে হবে। সিএমপি, কেএমপি, আরএমপি, বিএমপি, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল রেঞ্জ, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, সিআইডি, র‌্যাব পিবিআই, রেলওয়ে, টুরিস্ট, হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ এবং পুলিশ স্টাফ কলেজ, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, সার্দার প্রধান এবং উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পুলিশ সদর দফতর থেকে ভিডিও কনফারেন্স করেন আইজিপি। করোনাকালে পুলিশের সেবার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনার সময় জনগণকে আমাদের কাছে আসতে হয়নি। আমরা জনগণের কাছে গিয়েছি। তাদের পাশে থেকেছি। তাদের করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখতে গিয়ে নিজেরা আক্রান্ত হয়েছি। জীবন বিলিয়ে দিয়েছি। তাদের বাসায় খাবার পৌঁছে দিয়েছি। যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছি। তাদের ধান কাটার ব্যবস্থা করেছি। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির আপনজনরা যখন কাছে আসেনি তখন আমরা তার দাফন এবং সৎকারের ব্যবস্থা করেছি। এটা আমাদের দায়িত্ব ছিল না, কিন্তু আমরা মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে কাজটি করেছি। এ সময় তিনি বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশকে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে ইউনিট প্রধানদের নির্দেশনা দেন। ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেটে বিট পুলিশিংয়ের সাফল্য উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, এসব এলাকায় বিট পুলিশিং সফল হয়েছে। আমরা সারাদেশে বিট পুলিশিং চালু করতে চাই, মানুষের কাছে যেতে চাই, মানুষের হৃদয় জয় করতে চাই। ড. বেনজীর সর্বশেষে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ অনবদ্য ভূমিকার জন্য পুলিশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দেশবাসী অকুণ্ঠচিত্তে পুলিশের প্রশংসা করছেন। দেশের জ্ঞানী গুণী ব্যক্তিরা আমাদের পক্ষে কলম ধরেছেন। আমরা মানুষের মনে স্থান করে নিতে পেরেছি। চাকরিরত অবস্থায় কোন পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হলে বা কঠিন রোগে আক্রান্ত হলে তাকে ও তার পরিবারকে আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হয়। আমরা চাকরিরত অবস্থায় ই পুলিশ কর্মকর্তা ও ফোর্সের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে চাই।
×