ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শীঘ্রই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেয়া হবে

বাসাবাড়ির গ্যাস সংযোগ চালু করার চিন্তা

প্রকাশিত: ২৩:১২, ২৩ জুন ২০২০

বাসাবাড়ির গ্যাস সংযোগ চালু করার চিন্তা

রশিদ মামুন ॥ করোনা ভাগ্য খুলে দিচ্ছে দেশের আবাসিক গ্যাস গ্রাহকদের। বাসাবাড়ির বন্ধ গ্যাস সংযোগ চালু করার চিন্তা করছে জ্বালানি বিভাগ। শীঘ্রই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবাসিক গ্যাস সংযোগ উন্মুক্ত করার সুপারিশ করে চিঠি দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী সম্মত হলেই আবারও পাইপ লাইনের গ্যাস মিলবে ঘরে ঘরে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ২০১৪ সাল থেকে আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা তুলে দিলে দীর্ঘ ছয় বছর যারা গ্যাস সংযোগ পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন তাদের ভাগ্য খুলবে। করোনার কারণে দেশে জ্বালানির চাহিদা কমেছে। কিন্তু তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি আমদানির জন্য কাতার এবং ওমানের সঙ্গে যে চুক্তি রয়েছে সে অনুযায়ীই আমদানি অব্যাহত রাখতে হচ্ছে। জ্বালানি বিভাগ এক্ষেত্রে ফোর্স মেজর ঘোষণা করতে চাইলেও সরকারের উচ্চ পর্যায় তাতে সম্মতি দেয়নি। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে ফোর্স মেজর ঘোষণা না করে পারস্পরিক সমঝোতা বা নেগসিয়েশনের মাধ্যমে এসব বিষয়ের সমাধান করতে হবে। এক্ষেত্রে এলএনজি আমাদানি কমানোর জন্য কাতার এবং ওমানের সঙ্গে আলোচনা করলে তারা চুক্তির বাইরে কিছু করতে সম্মত হয়নি। ফলে অতিরিক্ত গ্যাস দিয়ে কি করা হবে সেটি এখন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জ্বালানি বিভাগের সাম্প্রতিক কয়েকটি বৈঠকে আবাসিকে গ্যাস সংযোগ উন্মুক্ত করার বিষয়ে জোর দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছে করোনার কারণে নতুন শিল্প সংযোগ বৃদ্ধি পাবে না। এছাড়া শিল্প উৎপাদনও বৃদ্ধি না পাওয়া পর্যন্ত গ্যাসের চাহিদাও বাড়বে না। ফলে বিকল্প গ্যাস ব্যবহারের খাত হিসেবে আবাসিকে গ্যাস সংযোগ উন্মুক্ত করার পক্ষে মত দিয়েছেন তারা। জানতে চাইলে জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিসুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, এখনও আবাসিক সংযোগ উন্মুক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করব। তিনি বলেন, আবাসিকে খুব বেশি গ্যাস প্রয়োজন হয় না। এক্ষেত্রে আবাসিকে গ্যাস দিলে কোন সমস্যা হবে না বলে আমরা মনে করছি। তিনি বলেন, এখন এমন অনেক বাসাবাড়ি রয়েছে যেখানে কোন নির্দিষ্ট ফ্ল্যাটে হয়তো গ্যাস রয়েছে কিন্তু পরে ভবনের বর্ধিত অংশে আর তারা গ্যাস নিতে পারেনি। আবার অনেকে ডিমান্ট নোটের টাকাও জমা দিয়ে বসে আছেন তাদের আমরা গ্যাস দিতে পারিনি। আবার এমনও অনেক জায়গা রয়েছে যারা অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করছে। সেখান থেকে আমরা কোন রাজস্ব পাচ্ছি না। সংযোগ বৈধ হলে সেখান থেকে রাজস্ব পাওয়া যেত। এসব বিষয় আমরা তুলে ধরব। এরপর প্রধানমন্ত্রী সম্মত হলেই নতুন সংযোগ চালু করা হবে। জানতে চাইলে আনিসুর রহমান বলেন, নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে সবাইকে প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করতে হবে। এতে আমরা ব্যবহারের আগেই বিল পেয়ে যাব। এটি শুধু আমাদের জন্য নয় ব্যবহারকারীর জন্যও ভাল। তিনি বলেন, যাদের প্রিপেইড মিটার রয়েছে তাদের মাসে গ্যাস বাবদ খরচ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে থাকছে। আর অন্যদের বিল আরও প্রায় চার ’শ টাকার মতো বেশি আসে। আবার প্রিপেইড মিটারে গ্যাসের অপচয়ও রোধ করা সম্ভব। সচিব বলেন, বিকল্প জ্বালানি এলপিজির ব্যবহার শহরে ঝুঁকিপূর্ণ। এখন গ্রামে অনেক ক্ষেত্রে এলপিজির ব্যবহার বেড়েছে। এসব বিষয়ও আমরা চিন্তা করছি।
×