ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চীনা চিকিৎসক দলকে বিদায়

চীনে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে সবার আগে পাবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২৩:১১, ২৩ জুন ২০২০

চীনে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে সবার আগে পাবে বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চীনা চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ দলকে বিদায় দেয়ার সময় বিমানবন্দরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক শোনালেন একগুচ্ছ আশার বাণী। বলেছেন-চীন করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। ভ্যাকসিনটি আবিষ্কার করা হলে- অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা বাংলাদেশে আগে পাঠানো হবে বলে সোমবার সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি। এ সময় দেশে করোনা চিকিৎসার সার্বিক অবস্থা নিয়েও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এদিন সকালে চীনের ১০ প্রতিনিধিকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সময় ভিআইপি লাউঞ্জে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চীন করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কাজে অগ্রগতিও অনেক। এই ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হলে সবার আগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলাদেশে পাঠাবে বলে চীন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। চীনে করোনা ছড়িয়ে পড়ার সময়ে বাংলাদেশ যেভাবে পাশে ছিল চীন সরকার সেই উদারতার কথা মনে রেখে বাংলাদেশের জন্য সবার আগে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে। মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস বিশ্বে একেবারে নতুন ভাইরাস। চীনারা এর সঙ্গে ভালভাবেই লড়ছে। তাদের মেডিক্যাল টিমের অভিজ্ঞতা বিনিময় বাংলাদেশের জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে। চীন শুধু এই মেডিক্যাল টিম দিয়েই সহযোগিতা করেনি মেডিক্যাল সরঞ্জাম দিয়েও কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সহায়তা করছে। চীনা বিশেষজ্ঞের বাংলাদেশ সফর নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা প্রতিরোধে বাংলাদেশের কাজে চীনা দল সন্তুষ্ট হয়েছে। তবে এ ভাইরাস মোকাবেলায় আরও কিছু জায়গায় উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে বলেও প্রতিনিধি দল সরকারকে জানিয়েছে। আমরাও সামনের দিনগুলোতে চিহ্নিত জায়গাগুলো নিয়ে আরও কাজ করব। ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে তা সবার আগে বাংলাদেশ পাবে বলে নিশ্চিত করে প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন চীনা রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো। আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। স্বাস্থ্য খাতের উর্ধতন কর্মকর্তারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। দৈনিক জনকণ্ঠের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় এরই মধ্যে সরকার দুই হাজার চিকিৎসক ও পাঁচ হাজার ৫৪ জন স্টাফ নার্স নিয়োগ দিয়েছে। করোনায় আক্রান্তের হার এভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকলে আরও দুই হাজার নতুন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে। পাশাপাশি মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের কাজও বর্তমানে চলমান রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি আগামীতে যে রকম হবে সরকার সেভাবেই বুঝেশুনে পদক্ষেপ নেবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, চাহিদা অনুযায়ী কিট পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ বর্তমান বিশ্বের সব দেশেই কিটের চাহিদা রয়েছে। তবে যা মজুদ আছে তাতে ঘাটতি হওয়ার কথা না। কোন কারণে সঙ্কট তৈরি হলেও তা খুব দ্রুতই মেটানোর ব্যবস্থা করবে সরকার। কাজেই কিট নিয়ে এই মুহূর্তে উদ্বেগের কোন কারণ নেই। করোনায় যে হারে প্রতিদিন রোগী বাড়ছে তাতে মানুষ অধিক সচেতন না হলে সব হাসপাতাল করোনা রোগীতে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ কারণে করোনা মোকাবেলায় দেশের মানুষকে আরও বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য খাতে বাজেট আরও বাড়ানো প্রয়োজন। উল্লেখ্য, চীন থেকে আসা মেডিক্যাল টিম বাংলাদেশে দু’সপ্তাহ অবস্থানকালে বিভিন্ন হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের অবস্থা দেখতে যান। এ ছাড়াও তারা করোনা মোকাবেলায় প্রস্তুত করা বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতাল, কোয়ারেনটাইন সেন্টার ও নমুনা পরীক্ষাকরণ কেন্দ্রগুলোও দেখতে যান।
×