ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চিকিৎসা সরঞ্জাম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে কাদের

করোনার বিধিনিষেধ কঠোরভাবে পালন করুন

প্রকাশিত: ২৩:১১, ২৩ জুন ২০২০

করোনার বিধিনিষেধ কঠোরভাবে পালন করুন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ঝুঁকি বিবেচনায় বিভিন্ন এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে সরকার যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা কঠোরভাবে পালনের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একইসঙ্গে ধৈর্যের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্যও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় নিজ সরকারী বাসভবন থেকে নোয়াখালীতে কোভিড-১৯ হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সরকার নতুন করে করোনার উচ্চ ঝুঁকি বিবেচনায় বেশ কিছু জেলা ও সিটি কর্পোরেশনের সুনির্দিষ্ট এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এসব এলাকার জনসাধারণকে কঠোরভাবে সরকারী নির্দেশনা প্রতিপালনের আহ্বান জানাচ্ছি। অনুরোধ করছি, ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার। বিএনপির ত্রাণ কার্যক্রমে বাধার অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব বিএনপিকে ত্রাণ কাজে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, কোথায় এবং কে বাধা দিয়েছে আপনারা স্পষ্ট করুন, তথ্য-প্রমাণ দিন। অভিযোগ সত্য হলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। এছাড়া আমরা নিজেরাও খোঁজ-খবর নিচ্ছি। মানবিক কাজে বাধা প্রদান আওয়ামী লীগের নীতি নয়। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেতুমন্ত্রী নোয়াখালীতে স্থাপিত কোভিড হাসপাতালের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে দুটি আইসিইউ ইউনিট ও ভেন্টিলেটরের যন্ত্রপাতি হস্তান্তর করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল হামিদ এসব চিকিৎসা সরঞ্জাম গ্রহণ করেন। দেশবাসীকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য সচেতন হতে আবারও আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও টেস্টিং ক্যাপাসিটি এবং চিকিৎসার সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে ৬০টির অধিক কেন্দ্রে করোনা টেস্ট করা হচ্ছে, যদিও আমাদের আরও টেস্ট সেন্টার বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চিকিৎসা সরঞ্জাম, সুরক্ষা সামগ্রীসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে যত প্রস্তুতিই নেয়া হোক না কেন বিশ্বব্যাপী আজ একটি অভিন্ন কথাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেটি হলো- নিজের সুরক্ষা। করোনা প্রতিরোধের সবচেয়ে সেরা কৌশল হিসেবে নিজেকে সচেতন রাখতে হবে, নিজেকে সুরক্ষা দিতে হবে। তাই আসুন, কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে আমরা সুরক্ষার প্রাচীর গড়ে তুলি, নির্মাণ করি সচেতনতার দুর্গ। ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ সফররত চীনা বিশেষজ্ঞ দলটি সরকারের নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর দায়িত্ব পালনের প্রশংসা করেছেন। নমুনা পরীক্ষা কম হচ্ছে বলে তারা মত প্রকাশ করার পাশাপাশি জনগণের সচেতনতার অভাবের কথা বলেছেন। আমি আবারও সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। মনে রাখবেন, এক সেকেন্ডের অবহেলা, হাত ধোঁয়ার ২০ সেকেন্ডের অলসতা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। দেশবাসীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, করোনার লক্ষণ দেখা দিলে গোপন করবেন না। নিকটস্থ কেন্দ্রে পরীক্ষা করান। অনেকে লক্ষণ গোপন করে স্বাভাবিক চলাফেরার কারণে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। দয়া করে সবার স্বার্থে ঝুঁকি নেবেন না। অনেকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাওয়া প্রেসক্রিপশন ফলো করে ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। প্রয়োজনে হটলাইনে যোগাযোগ করুন, টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করুন। অযথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসা ফলো করবেন না, আপনার সমস্যা অন্যের সঙ্গে নাও মিলতে পারে। এতে বরং আপনিই ঝুঁকিতে পড়বেন। সরকার সারাদেশের বিশেষ করে জেলা পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে আইসিইউসহ জরুরী সেবা সম্প্রসারণ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, সরকারের পাশাপাশি এ সঙ্কটকালে বেসরকারী উদ্যোগও যোগ করতে পারে নতুন মাত্রা। বেসরকারী উদ্যোগ নেয়া হলে তা সঙ্কটের মধ্যে প্রস্তুতিকে বেগবান করবে। সামর্থ্যবানরা যেভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেভাবে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে পারেন।
×