ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেরপুরে কাজে আসছে না কোটি টাকার ব্রিজ

প্রকাশিত: ১৬:৫৮, ২২ জুন ২০২০

শেরপুরে কাজে আসছে না কোটি টাকার ব্রিজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ রাস্তা সংস্কার, সম্প্রসারণ ও পাকাকরণের অভাবে শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে কাজে আসছে না এলজিইডি’র প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি ব্রিজ। দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত ঝুলে থাকা ওই সমস্যায় আশেপাশের ১৫ গ্রামের মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। কিন্তু এরপরও এলাকার দায়িত্বশীল মহলসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের তরফ থেকে বিষয়টির সমাধানে আজও নেওয়া হয়নি তেমন কোন কার্যকর উদ্যোগ। ফলে সরকারে বিপুল অঙ্কের টাকায় নির্মিত ওই ব্রিজটি এলাকাবাসীর জন্য আশির্বাদ হয়ে উঠেনি। জানা যায়, ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাটিয়াপাড়া সিএনবি রোড থেকে সারিকালিনগর, গজারমারী হয়ে বাগেরভিটা বাজার পর্যন্ত রয়েছে প্রায় ৮ কিলোমিটার রাস্তা। ওই পথে ১৫টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে। এছাড়া যাতায়াতের ওই অংশে অন্ততঃ ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রয়েছে ৩/৪টি বাজার। স্থানীয়দের তরফ থেকে রাস্তাটি দেশ স্বাধীনের পর থেকেই পাকাকরণের দাবি উঠে আসলেও আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তাটি সংস্কারের আশ্বাসই পাওয়া গেছে শুধু। ফলে রাস্তাটি পাকাকরণের অভাবে পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে রাস্তাটি সংস্কার ও প্রশস্ত না করেই ২০০৪ সালে ওই রাস্তার মাঝখানে গজারমারী এলাকায় এলজিইডি’র প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় একটি ব্রিজ। কিন্তু দু’পাশে রাস্তা না থাকায় ওই ব্রিজটি কোন কাজেই আসছে না গ্রামবাসীদের। শুষ্ক মৌসুমে যেমন-তেমন, বর্ষা মৌসুমে ওই পথে যাতায়াতকারীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। তখন মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। এছাড়া এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য ও গবাদী পশু পারাপারে সীমাহীন বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় কৃষকদের। ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে রাস্তাটি তলিয়ে যায়। শুধু ভেসে থাকে ওই ব্রিজটি। ওইসময় গ্রামবাসীদের চলাচলে দুর্ভোগের সীমা থাকে না। একই কথা জানিয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রায় ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি সংস্কার, প্রশস্ত ও পাকা না করেই মাঝপথে বিশাল অঙ্কের টাকায় প্রায় ১৬ বছর আগে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও তা এলাকাবাসীর কাজে আসছে না। বরং তা এলাকাবাসীর কষ্টস্মারক হিসেবেই দেখা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, ওই রাস্তাটি উন্নয়নের জন্য প্রাক্কলনসহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই তা অনুমোদন হতে পারে। আর অনুমোদন পেলেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজটি হাতে নেওয়া হবে। তার মতে, এখনও ব্রিজের কোন ক্ষতি হয়নি। রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ শেষ করতে পারলেই এলাকাবাসী ওই ব্রিজের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
×