ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে লাল-সবুজ পতাকাবাহী কন্টেনার

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ২২ জুন ২০২০

চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে লাল-সবুজ পতাকাবাহী কন্টেনার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ব্যস্ততম চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই হয়ে থাকে দেশের ৯০ শতাংশ আমদানি-রফতানি। বছরে প্রায় ৩০ লাখ টিইইউএস কন্টেনারের সবই পরিবহন করে বিদেশী জাহাজ। এতে করে মোটা অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা চলে যাচ্ছে জাহাজ ভাড়া বাবদ। অবশেষে প্রায় এক দশক পর কন্টেনার পরিবহনে যুক্ত হলো দেশীয় মালিকানার জাহাজ। রবিবার বন্দর জেটিতে ভিড়েছে অনেক প্রতীক্ষার লাল-সবুজের পতাকা ধারণ করা জাহাজ। দিনটি ছিল বৈদেশিক বাণিজ্য এবং দেশীয় শিপিং সেক্টরের জন্য বড়ই আনন্দের। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোঃ ওমর ফারুক জানান, বহির্নোঙ্গর থেকে রবিবার বেলা ১০টার দিকে বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালের (এনসিটি) জেটিতে ভেড়ানো হয় ‘সারেরা’ নামের জাহাজটি। ১৮৫ মিটার লম্বা এ জাহাজ একসঙ্গে ১৫৫০ টিইইউএস কন্টেনার বহন করতে পারবে। রফতানি পণ্য নিয়ে এ জাহাজ আগামীকাল মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে যাত্রা করবে। এরপর আমদানির কন্টেনার নিয়ে তা ফিরে আসবে চট্টগ্রাম বন্দরে। উইন্ডো বার্থিং সিস্টেম অর্থাৎ সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিনে কন্টেনার নিয়ে জাহাজটি চলাফেরা করবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং রুটে চলাচলের জন্য দুটি জাহাজ কিনেছে কর্ণফুলী গ্রুপের প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী লিমিটেড। এরই একটির নাম ‘সারেরা।’ দ্বিতীয় জাহাজ ‘সাহেরা’ও বন্দরে ভিড়বে শীঘ্রই। এ দুই জাহাজ অতীব গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম-সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়া রুটে চলাচল শুরু করলে সুবিধা পাবে দেশের পোশাক শিল্পসহ রফতানি খাত। জাতীয় পতাকাবাহী হওয়ায় জেটিতে প্রবেশের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে না বিধায় জাহাজ দুটি অগ্রাধিকার পাবে। কর্ণফুলী লিমিটেড দেশের শিপিং সেক্টরে অগ্রণী একটি প্রতিষ্ঠান। ১৯৫৪ সালে যাত্রা শুরু করা এ প্রতিষ্ঠানটি সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া রুটের জন্য জাহাজ দুটি কিনে নেয়। এতে বিনিয়োগ হচ্ছে প্রায় এক শ’ কোটি টাকা। জাহাজ পরিচালনার এই সার্ভিসের নামকরণ করা হয়েছে ‘বাংলাদেশ এক্সপ্রেস সার্ভিস।’ পরিচালনা করবে ফিডার অপারেটর এইচ আর লাইন্স লিমিটেড। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী আমদানি-রফতানির পণ্যের ৫০ শতাংশ জাতীয় পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশী মালিকানায় জাহাজ না থাকায় বিদেশী জাহাজকে ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রায়। জাতীয় পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা বাড়লে সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা। আমদানি রফতানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে আসা যাওয়া করে বিদেশী ২২টি প্রতিষ্ঠানের ৮৪টি জাহাজ। এ জাহাজগুলো গত সমাপ্ত অর্থবছরে প্রায় ২৩ লাখ টিইইউএস পণ্য হ্যান্ডলিং করেছিল। যুক্ত হওয়া নতুন দুটি দেশি জাহাজ বছরে ১ লাখ টিইইউএস কন্টেনার পরিবহন করতে পারবে। দেশী মালিকানার জাহাজ সংখ্যা বাড়াতে সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চেষ্টা রয়েছে।
×