ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘সরকার ও ফিফাকে অবহিত করেই হবে বাফুফে নির্বাচন’

প্রকাশিত: ২১:২১, ২২ জুন ২০২০

‘সরকার ও ফিফাকে অবহিত করেই হবে বাফুফে নির্বাচন’

জাহিদুল আলম জয় ॥ গত ফেব্রুয়ারি মাসে বহুল প্রতীক্ষিত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই ঘোষণায় গত ২০ এপ্রিল বাফুফে ভবনে হওয়ার কথা ছিল এজিএম ও নির্বাচন। কিন্তু মরণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছুর মতো স্থগিত হয়ে গেছে বাফুফে নির্বাচনও। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ও এএফসির অনুমতি নিয়ে নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্বাচনে নতুন কমিটি গঠন হওয়ার আগ পর্যন্ত বর্তমান কমিটিকে দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাওয়ার অনুমতিও দিয়েছে ফিফা। নির্বাচন স্থগিত হলেও ভোটের কিছু কাজ এগিয়ে রাখছে বাফুফে। সেটা হচ্ছে তাদের সদস্য সংস্থাদের প্রতিনিধিদের নাম সংগ্রহ। যারা আগামী এজিএমে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। এই প্রতিনিধি/কাউন্সিলর/ভোটার নিয়েই বিস্তর অভিযোগ তোলা হয়েছে বাফুফের বিরুদ্ধে। বিষয়টি গড়িয়েছে আদালত ও ফিফা পর্যন্ত। বিষয়টি নিয়ে গত কিছুদিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে নগ্নভাবে আক্রমণ করছেন! এমন অবস্থায় ফিফা আবারও বাফুফেকে নির্দেশনা দিয়েছে। তারা বাফুফেকে করোনার মধ্যে নির্বাচন আয়োজন না করার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু বাফুফের বর্তমান কর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ফিরিস্তি এতে থামেনি। এর প্রেক্ষিতে শনিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী জানিয়েছেন, বাফুফে নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি বিশেষ গোষ্ঠী। বাফুফেকে নিয়ে তোলা তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। কাউন্সিলরশিপ জালিয়াতিসহ কয়েকটি অভিযোগ করে কিছুদিন আগে ফিফার কাছে চিঠি দেন বাফুফে’র বর্তমান সহ-সভাপতি বাদল রায় ও মহিউদ্দিন আহমেদ। তারা জানান, বাফুফে তড়িঘড়ি করে নির্বাচন করতে চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই সালাম মুর্শেদী জানান, এইসব অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। বিবৃতিতে সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘সম্প্রতি একটি বিশেষ গোষ্ঠী করোনাকালীন পরিস্থিতিতে বাফুফে তড়িঘড়ি করে নির্বাচন করতে চায় মর্মে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। যা সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। আসন্ন বাফুফে নির্বাচনকে সামনে রেখে বাফুফে শুধুমাত্র এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কিছু কাজকর্ম পরিচালনা করেছে। যেমন নির্বাচন কমিশন গঠন এবং বাফুফের আওতাধীন বিভিন্ন ক্লাব ও সংস্থা হতে তাদের ডেলিগেটের নাম সংগ্রহ করা। বাফুফে নির্বাচনী সাধারণ সভা আয়োজনের পরবর্তী দিনক্ষণ, স্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটি কর্তৃক পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটি করোনা সংক্রান্ত বিষয় এবং দেশের সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ইতোপূর্বে নির্বাচন স্থগিত করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখন পর্যন্ত সেই একই সিদ্ধান্তে বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটির অবস্থান। আমি একই সঙ্গে আশ্বস্ত করতে চাই যে, করোনাকালীন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার প্রেক্ষিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও ফিফাকে অবহিত করে বাফুফে কার্যনিবাহী কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে বাফুফে নির্বাচনী সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে।’ এর আগে নির্বাচন নিয়ে বাফুফেকে জরুরী বার্তা পাঠায় বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফা। যে চিঠিতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এজিএম ও নির্বাচন আয়োজন না করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ফিফার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের চিঠি পাওয়া যাচ্ছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে বাফুফে করোনাভাইরাসের এ পরিস্থিতির মধ্যেই নির্বাচন করতে চায়। তাই নির্বাচন সংক্রান্ত কোন সিদ্ধান্ত নিলে সেটা যেন ফিফাকে অবহিত করা হয়।’ নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হওয়ার আগেই নির্বাচন কেন্দ্রিক উত্তাপ বেড়ে গেছে। অনেক পদে নির্বাচন হলেও মূলত সভাপতি পদ ঘিরেই থাকে সব উন্মাদনা। গত প্রায় আড়াই বছর ধরে শোনা যাচ্ছিল এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে কাজী মোঃ সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। কিন্তু গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি নিজেকে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরিয়ে নেন। তরফদারের পিছু টানে সভাপতি পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি বাদল রায়। এ কারণে এখন পর্যন্ত সভাপতি পদে প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিন ও বাদল রায়। লম্বা সময় ধরে সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন বলে প্রচার চালালেও শেষ পর্যন্ত নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন তরফদার রুহুল। তবে তিনি অন্য পদে নির্বাচন করতে পারেন বলে গুঞ্জন আছে।
×