ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি অঙ্গনের মহীরুহ কামাল লোহানী

প্রকাশিত: ২০:১০, ২২ জুন ২০২০

সংস্কৃতি অঙ্গনের মহীরুহ কামাল লোহানী

তুষার আহমেদ ॥ সবাই কে কাদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পুরধা ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী। রাজনৈতিক, সাংবাদিকতার পাশাপাশি উনার ছিল বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক কর্মময় জীবন। বাংলাদেশের সনামধন্য অধিকাংশ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন। সংস্কৃতি অঙ্গনে তার প্রথম পথ চলা ছিল নৃত্যাঙ্গনে, ১৯৫৮ সালে বুলবুল ললিতকলা একাডেমির হয়ে কামাল লোহানীর নৃত্যগুরু জি এ মান্নান ‘নক্সী কাঁথার মাঠ’ প্রযোজনা করলে কামাল লোহানী তাতে অংশ নেন। পাকিস্তান সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে তিনি যান। কামাল লোহানীকে একজন সংস্কৃতিকর্মী থেকে ও একজন সংস্কৃতি যোদ্ধা আখ্যা দেয়া ভাল, ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র শতবর্ষ পালনে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা নিষেধাজ্ঞা জারি করলে ছায়ানটের নেতৃত্বে কামাল লোহানী ও হাজারও রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক কর্মী সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ১৯৬২ সালে তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। এরপর পাঁচ বছরের মাথায় নিজের বিপ্লবী চিন্তাধারা থেকে প্রতিষ্ঠা করেন সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ক্রান্তি, যাতে সক্রিয় ছিলেন আলতাফ মাহমুদসহ আরও অনেকে প্রথিতযশা শিল্পী।’ ৬৭-৬৮ সালে পাকিস্তান যখন রবীন্দ্রনাথ নিষিদ্ধের পায়তারা করছিল তখনও প্রতিবাদের অগ্রভাগে তার ভূমিকা ছিল। তিনি বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতির সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রধানতম ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলেন। যুদ্ধের পর কাজ করেছেন বাংলাদেশ বেতার এর পরিচালক হিসেবে, শিল্পের প্রতি ভালবাসা থেকেই ১৯৯১ তে মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দেন শিল্পকলা একাডেমিতে, মতের অমিল হওয়াতে দেড় বছরের মাথায় ইস্তফা দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি এই বিপ্লবী, যদিও সরকারের অনুরোধে ২০০৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত শিল্পকলার মহাপরিচালক হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব পালন করেন ।
×