ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নীলফামারীতে ইউপি চেয়ারম্যানের কান্ডে ইউএনওর শোকজ

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ২১ জুন ২০২০

নীলফামারীতে ইউপি চেয়ারম্যানের কান্ডে ইউএনওর শোকজ

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ জাতির জনক ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির সঙ্গে স্বাধীনতা বিরোধী এক রাজাকারের ছবি পাশাপাশি টাঙ্গিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয় বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান সিহাবকে শোকজ করেছেন উপজেলাটির নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আবুল কালাম আজাদ। আজ রবিবার দুপুরে এই শোকজ করা হয় তাকে। পাশাপাশি তাকে ৭ দিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়। এলাকাবাসী জানায়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকবে এটাই সরকারী নিয়ম। কিন্তু উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয় বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান সিহাব বঙ্গবন্ধু ও প্রধান মন্ত্রীর ছবির সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান তার দাদা ৭১ এর রাজাকার আলবদর কমিটির এলাকার সভাপতি মোশাররফ হোসেন লেবু, ইউপি চেয়ারম্যানের বাবা মোজাহার হোসেন দুলাল ও তার (ইউপি চেয়ারম্যান) ছবি জুড়িয়ে টাঙ্গিয়ে দিয়ে রেখেছে। ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যানের কক্ষের ওই ছবি ও ভিডিও ফাঁস হয়ে পড়লে এলাকার স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষজন সহ স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে মাগুড়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানে বিচার দাবি করে। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাঈনুল আরফিন সফু জানান, ঘটনাটি আমরা সরেজমিনে গিয়ে সত্যতা পেয়ে লিখিত ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আজ রবিবার সকালে অভিযোগ করেছি। অপর দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল বলেন ঘটনাটির সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার হাবিবুর রহমান জানান মাগুড়া ইউপি চেয়ারম্যান তার দাদা (তার বাবার বাবা) মোশাররফ হোসেন লেবু মিয়া ৭১ সালের স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের তৎকালিন কিশোরীগঞ্জ থানার রাজাকার আলবদর কমিটির সভাপতি ছিলেন। যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় তার নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। কিশোরীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবুল কালাম বারী বলেন মাগুড়া ইউপি চেয়ারম্যান যে কাজটি করেছে এটি মেনে নেয়া যায়না। আমার অফিস কক্ষে নিয়ম অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি রয়েছে। এই নিয়মের বাহিরে আমরা কোন জনপ্রতিনিধি যেতে পারিনা। এ ব্যাপারে মাগুড়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সিহাব বলেন আমার প্রতিপক্ষ লোকজন এডিটের মাধ্যমে আমার ইউনিয়ন পরিষদের কক্ষের ছবি ও ভিডিও কথিতভাবে তৈরী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আমাকে হেয় করার অপচেষ্টা করছে। এদিকে মাগুড়া ইউনিয়ন পরিষদের অনেকে নাম প্রকাশ না করার সর্ত্বে বলেন ইউপি চেয়ারম্যান ডেঞ্জার মানুষ। তিনি তিলকে তাল ও তালকে তিল করতে পারেন। তার অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু ও প্রধান মন্ত্রীর ছবির সঙ্গে তার রাজাকার দাদা ও বাবা এবং চেয়ারম্যান তার নিজের ছবি সহ টাঙ্গিয়ে রেখেছিল। ঘটনাটির ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তিনি রাতারাতি তা সরিয়ে ফেলেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল কালাম আজাদ বলেন উপজেলা ছাত্রলীগের লিখিত অভিযোগ পেয়ে মাগুড়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যানকে শোকজ করেছি। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
×