বৃষ্টি-বাদল পুরো দমে শুরু হবার আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে মশার উপদ্রব। জনজীবন প্রায় অতিষ্ঠ যেন! এমনিতেই এখন চলছে করোনা মহামারী। সবাই অনেক উৎকণ্ঠায় সময় পার করছে। মশার উপদ্রব বেড়ে যাবার কারণে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হবার খবরও কিছুটা শোনা যাচ্ছে। আমাদের উচিত এখন থেকেই মশার উপদ্রব নিয়ে সতর্ক হওয়া। কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে মশার যন্ত্রণা থেকে আমরা রেহাই পেতে পারি।
রসুনের স্প্রে
রসুনকে বলা হয় ‘পাওয়ার হাউস অব মেডিসিন এ্যান্ড ফ্লেভার’। রসুনের অনেক স্বাস্থ্যকর গুণাবলী রয়েছে তা আমরা সবাই জানি। তবে এটা কি জানি, রসুন পোকা-মাকড় দমনেও কার্যকরী! শুনে অবাক হবেন যে, মধ্যযুগে ইউরোপীয়রা প্লেগ দমনেও রসুনের ব্যবহার করেছিল। আর আমাদের প্রাচীন সভ্যতায়ও পোকা-মাকড় দমন করতে রসুনের ব্যবহার করা হতো। আপনিও মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে বাড়িতে ব্যবহার করতে পারেন রসুনের স্প্রে। এই রসুনের স্প্রে খুব সহজেই বানানো যায়। তার জন্য কয়েক কোয়া রসুনের খোসা ছাড়িয়ে ছেঁচে নিয়ে অল্প ১ কাপ বা ১.৫ কাপ পানিতে ফুটিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি একটি স্প্রে বোতলে নিয়ে দরজা, জানালা, ঘরের কোণা ইত্যাদি জায়গায় স্প্রে করুন। আশা করি মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে পারবেন।
মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে তুলসির ব্যবহার
সাধারণত তুলসি আমরা ঠান্ডা-কাশিতে ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু প্যারাসাইটোলজি রিসার্চ জার্নালের একটি গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে- তুলসি মশার লার্ভা ধ্বংসে ও মশা দূর করতে অনেক কার্যকরী একটি উপাদান। তাই, কয়েকটি তুলসি পাতা পানিতে ফুটিয়ে স্প্রে তৈরি করে নিতে পারেন। আর ঘরের বারান্দায় না হয় এক কোণে থাকল এই মহা উপকারী গাছটি। এতে ঘরে মশা কম ঢুকবে।
পুদিনার তেল মশার উপদ্রব কমায়
পুদিনা পাতাও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এটিতে মেন্থল থাকায় তা ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে ও ঠান্ডায় আরাম দেয়। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে, পুদিনার গন্ধ মশা দূর করে। জার্নাল অব বায়োরিসোর্স টেকনোলজির এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, পুদিনা পাতার মশা দূরে রাখার ক্ষমতা রয়েছে। ১টি ছোট বোতলে নারকেল তেল বা আমন্ড অয়েল নিয়ে তাতে কয়েকটি পুদিনা পাতা থেঁতলে সম্পূর্ণ ডুবিয়ে রাখতে হবে। ২-৩ দিন পর পাতা থেকে তেল ছেঁকে নিতে হবে। আর তেল বানাতে না চাইলে উপরের ঘরে পুদিনা পাতা জ্বাল দিয়ে গরম পানির ভাপটাও দিতে পারেন। আর এই তেল মসকিউটো রিপেলেন্ট হিসেবেও কিন্তু ব্যবহার করা যাবে।
লেবু ও লবঙ্গ
হয়তো এই উপায়টি কম-বেশি সবাই জানেন। তবুও একবার চোখ বুলিয়ে নিতে তো ক্ষতি নেই। লেবু অর্ধেক কওে কেটে বা চার খন্ড করে তাতে কয়েকটি লবঙ্গ গেঁথে দিন। শুধু লবঙ্গের মাথা বাইরে থাকবে। বাকি অংশটুকু লেবুর ভেতরে থাকবে। এরপর এটি ঘরের কোণায় ও জানালার কাছে রেখে দিন। মশা দূর হবার সঙ্গে সঙ্গে মিষ্টি সুঘ্রাণও কিন্তু ছড়াবে! ক্ষুদ্র একটি প্রাণী এই মশা। অথচ কী ভয়ানক শক্তিশালী! কামান-দাগা দিয়েও ধরাশায়ী করা যায় না। আমরা মশা মারার ব্যাট, মশারি, কয়েল সবকিছু নিয়ে প্রস্তুত থাকি। তবুও এটি লুকিয়ে এসে এক কামড়ে বাঁধিয়ে দিয়ে যায় ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়ার মতো অসুখ।
যাপিত ডেস্ক
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: