ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কর্মসংস্থানে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে বিলিয়ন ডলার

প্রকাশিত: ২২:২৪, ২১ জুন ২০২০

কর্মসংস্থানে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে বিলিয়ন ডলার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বাংলাদেশকে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক। স্থানীয় মুদ্রার মূল্যে যা প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। তিন প্রকল্পের আওতায় এই ঋণ অনুমোদন করেছে আন্তর্জাতিক ঋণ দাতা সংস্থাটি। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় এই ঋণ অনুমোদন দেয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও মহামারী প্রতিরোধে সক্ষমতা বাড়াতে তিনটি প্রকল্পে এ অর্থ ব্যয় করা হবে বলে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ‘প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট এ্যান্ড ডিজিটাল এন্ট্রিপ্রেনারশিপ’ (প্রাইড) প্রকল্পে ৫০ কোটি ডলার, ‘এনহ্যান্সিং ডিজিটাল গবর্নমেন্ট এ্যান্ড ইকোনমি’ প্রকল্পে ২৯ কোটি ৫ লাখ ডলার ও ‘সেকেন্ড প্রোগ্র্যামেটিক জবস্ ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট’ প্রকল্পে ২৫ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে। বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন এক বিবৃতিতে বলেন, নজিরবীহিন সঙ্কট মোকাবেলায় ব্যতিক্রমী এ পদক্ষেপের ফলে জনসাধারণের আয় ও জীবিকায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। প্রকল্পগুলো দক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বেসরকারী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তার পাশাপাশি ডিজিটাল অর্থনীতির ভিত গড়বে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৫০ কোটি ডলারের প্রাইড প্রকল্পটি প্রায় ২০০ কোটি ডলারের প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ টানবে, নির্ধারিত অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং সফটওয়্যার প্রযুক্তি পার্কে সামাজিক ও পরিবেশগত মান জোরদার করবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে একলাখ ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এর মধ্যে সফটওয়্যার পার্কে ৪০ শতাংশ এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২০ শতাংশ কর্মসংস্থান হবে নারীর। এই প্রকল্প মিরসরাই-ফেনী অঞ্চলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর -২ এর উন্নয়ন করবে যার মধ্যে থাকবে- বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাসহ সড়ক নেটওয়ার্ক, সৌর বিদ্যুতের সড়কবাতি স্থাপন ও জলবায়ু সহনশীল পানি, স্যানিটেশন ও বিদ্যুত নেটওয়ার্ক স্থাপন। প্রকল্পটি জনতা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ঢাকার প্রথম ‘ডিজিটাল এন্ট্রিপ্রেনার হাব’ গড়ে তুলে এটিকে একটি সবুজ ভবনে পরিণত করবে। তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) ও তথ্য প্রযুক্তি সমর্থিত সেবাসহ (আইটিইএস) স্থানীয় ও বিদেশীী বেসরকারী বিনিয়োগ আকর্ষণের মাধ্যমে প্রকল্পটি কোভিড-১৯’র প্রভাব মোকাবেলায় অর্থনীতিকে সহায়তা করবে। ২৯ কোটি ৫০ লাখ ডলারের প্রকল্প সরকারের সব সংস্থার জন্য একটি সমন্বিত, অংশীদারিত্বভিত্তিক এবং ক্লাউড-কম্পিউটিং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম স্থাপন করবে এবং সাইবার নিরাপত্তার উন্নতি ঘটাবে, যা সরকারী আইটি বিনিয়োগে ২০০ মিলিয়ন ডলারের খরচ বাঁচাবে। এছাড়া ভবিষ্যত সঙ্কট মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জনের জন্য প্ল্যাটফর্ম সরকারকে কার্যকরভাবে গুরুত্বপূর্ণ সেবা সরবরাহ করতে সক্ষম করবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে একলাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে, যার এক-তৃতীয়াংশ হবে নারী ও একলাখ তরুণ-তরুণীকে ডিজিটাল ও নতুন প্রতিস্থাপন প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে। এটি তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে ৩০ কোটি ডলার আয় বাড়াতে সহায়তা করবে এবং স্থানীয় আইটি কোম্পানিগুলোকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে সহায়তা করবে, মহামারীর ঝুঁকি কমাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডিজিটাল প্রযুক্তির আওতায় আনবে। আর ২৫ কোটি ডলারের প্রকল্পটি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের স্বল্প মেয়াদী বিভিন্ন পদক্ষেপের সহায়তার জন্য সরকারের আর্থিক সংস্থানের পাশাপাশি অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও ভবিষ্যতের অভিঘাত মোকাবেলায় শ্রমজীবী ও দুর্বল জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করবে। এই অর্থায়ন নারী, যুব জনগোষ্ঠী, অভিবাসী শ্রমিক এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশে বৃহৎ পরিসরে মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। এটা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় সংস্কারে সহায়তা করবে এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীকে অধিকতর উন্নত কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতে সহায়তা করবে। এছাড়া এর লক্ষ্য হচ্ছে সম্প্রসারিত একটি সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর শক্তিশালী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং বিশেষত মহামারীর সময় শ্রমিকদের ঝুঁকি কমানো।
×