ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার এ্যান্টিবডি টেস্ট শুরুর চিন্তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের

প্রকাশিত: ২২:১৪, ২১ জুন ২০২০

করোনার এ্যান্টিবডি টেস্ট শুরুর চিন্তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের

নিখিল মানখিন ॥ করোনাভাইরাসের এ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করার চিন্তা-ভাবনা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে বিষয়টি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এই টেস্টের প্রয়োজনীয়তা, লাভ-ক্ষতি, নির্ভরযোগ্য পদ্ধতিসহ বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে হিসেব নিকেশ করছে করোনা মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি। ইতোমধ্যে সারাদেশে এ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করার ঈঙ্গিত দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আরটি-পিসিআর টেস্ট দিয়ে দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী নমুনা পরীক্ষা করানো যাচ্ছে না অভিযোগ উঠেছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য বিশ্বের অনেক দেশেই এ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু হয়েছে। সাধারণত আক্রান্ত হওয়ার কয়েকদিন পর মানুষের শরীরে এই এ্যান্টিবডি তৈরি শুরু হয়। দ্রুত সহজ পদ্ধতিতে কম খরচে এই টেস্ট করা যায়। ফলে কম সময় অনেক মানুষের এ্যান্টিবডি টেস্ট করে সেই এলকার করোনা পরিস্থিতি বোঝা সম্ভব হয়। কার্যকর এ্যান্টিবডি টেস্ট চালু করা গেলে দেশের কত সংখ্যক করোনা সন্দেহজনক মানুষের মধ্যে কোভিড-১৯ বিষয়ক এ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে তার বড় চিত্র পাওয়া যাবে। এ্যান্টিবডি টেস্ট চলমান সংক্রমণ শনাক্তকরণের একমাত্র ভিত্তি হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ নেই। ভিন্ন আঙ্গিকে এটি করোনা সংক্রমণের শনাক্তকরণ ও ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এই ভাইরাসের কীট দিয়ে এ্যান্টিবডি টেস্ট করার কারণে পরীক্ষিত ব্যক্তির শরীরে যে এ্যান্টিবডি পাওয়া যাবে তা অবশ্যই সেই ভাইরাসেরই এ্যান্টিবডি হবে। যেহেতু এ্যান্টিবডি টেস্টিংয়ের মাধ্যমে, উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকুক বা না থাকুক, অতীতে সংক্রমিত হয়েছে এমন সবাইকে শনাক্ত করা সম্ভব। দৈবচয়নের ভিত্তিতে বাছাই করে জনসাধারণের অংশবিশেষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে কোন একটি জায়গায় সংক্রমণের ব্যাপ্তির সঠিক চিত্র পাওয়া সম্ভব। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্বাসনালীতে যেসব ভাইরাস সংক্রমণ হয় অনেকটা সেভাবেই সংক্রমণ হচ্ছে করোনাভাইরাস দিয়ে। যেহেতু এর চিকিৎসা এখনও চূড়ান্ত রূপে নির্ধারিত হয়নি, তাই আক্রান্ত হলে বাঁচামরা নিয়ে শঙ্কা কাজ করে। লক্ষণ প্রকাশ না করেও অনেকেই এটি ছড়াচ্ছেন বলেই ভয়টা আরও বেশি। সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে বেছে নিতে হয়েছে লকডাউনের মতো পদক্ষেপ। কতদিন চলবে এই লকডাউন? আবার লকডাউনের বিকল্প নেই। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই এটি করতে বাধ্য হয়েছে। তবে কবে নাগাদ এটি থেকে বের হয়ে আসবে সেই নিয়েও তারা কাজ শুরু করেছে। যখন কোন সমাজে ছোঁয়াচে রোগের আবির্ভাব হয় তখন প্রাকৃতিকভাবে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে নির্দিষ্ট জনসংখ্যাকে আক্রান্ত হতে হয়। হিসাবটা প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি। আবার করোনার উপাত্ত বলে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ মৃত্যুবরণ করতে পারে। সেই হিসাবে আমাদের জন্য সেটি অনেক অনেক বেশি হয়ে যায় সংখ্যাটা। আর প্রিয়জন হারাতে কি চাই আমরা? এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে বিশে^র করোনায় জর্জরিত বিভিন্ন দেশ যেটি শুরু করছে তা হলো ‘ইমিউনিটি পাসপোর্ট’। অর্থাৎ কোন স্থান ভ্রমণ করতে গেলে যেমন পাসপোর্ট লাগে তেমনি করোনা পরবর্তী সমাজে বিচরণের জন্য প্রয়োজন পাসপোর্ট। কারণ ব্যক্তিটি যেন কারও ক্ষতির কারণ না হয় তার জন্য যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এ্যান্টিবডি টেস্ট। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রয়োজনের তুলনায় কোভিড-১৯ শনাক্তকরণের পিসিআর টেস্ট অপ্রতুল হওয়ায় বর্তমানে অনেকেই এখন কোভিড-১৯ এর লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পরও ল্যাবগুলোতে টেস্ট করার জন্য সিরিয়াল নিতে পারছেন না। এ্যান্টিবডি টেস্ট তুলনামূলক সাশ্রয়ী এবং সহজেই যেকোন মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরিতে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট দিয়ে করানো সম্ভব। তাই ল্যাবগুলোতে এ্যান্টিবডি টেস্ট প্রতুলতার কারণে জনগণকে কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য ভোগান্তির শিকার হতে হতো না। একমাত্র এ্যান্টিবডি টেস্টিংয়ের মাধ্যমে এক্টিভ ইনফেকশন, পূর্ববর্তী ইনফেকশন, লক্ষণহীন সংক্রমণ, শরীরে ইমিউনিটি তথা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে কি’না, প্লাজমা ডোনার সিলেকশন, ভ্যাক্সিনের সিদ্ধান্ত ইত্যাদি অনেক কিছুই নির্ণয় করা সম্ভব। তাই এ্যান্টিবডি টেস্টিং হতে পারে অনেক সমস্যার সমাধান। এ্যান্টিবডি টেস্ট যত শীঘ্রই সম্ভব বাংলাদেশে চালু করতে হবে। এ্যান্টিবডি ও এ্যান্টিবডি টেস্ট ॥ এ্যান্টিবডি ও এ্যান্টিবডি টেস্ট সম্পর্কে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ আশরাফুল হক বলেন, শরীরে যখন কোন জীবাণু ঢুকে তখন শরীরের বিরুদ্ধে কাজ শুরু করে। সেটিকে নষ্ট করার জন্য যেটি তৈরি হয় তার নাম এ্যান্টিবডি। প্রথম যে এ্যান্টিবডি তৈরি হয় তার নাম ‘আইজিএম’। করোনার ক্ষেত্রে সেটি রক্তে পাওয়া যায় ৭ম দিন থেকে। এরপর আসে ‘আইজিজি’, যা মূলত শরীরের বাকি প্রতিরক্ষার কাজ করে। পিসিআর দিয়ে কেউ আক্রান্ত কিনা বুঝা যায় আর এ্যান্টিবডি দিয়ে বুঝা যায় আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়েছেন কিনা। আর একবার ক্ষমতা তৈরি হলে সাধারণত তিনি আরেকজনের জন্য ক্ষতির কারণ হন না। ডাঃ আশরাফুল হক আরও বলেন, এ্যান্টিবডি টেস্ট যেহেতু ২০ মিনিটের কম সময়ে করা সম্ভব, তাই অনেকজনকে টেস্ট করাটাও সহজ। যেকোন টেস্টের মতো এতেও ত্রুটি থেকে যেতে পারে, তবে তার হার পরীক্ষিত ডিভাইসে সর্বনিম্নই থাকে সাধারণত। যিনি এ্যান্টিবডি টেস্টে পজিটিভ আসবেন তিনি ‘ইমিউনিটি পাসপোর্ট’ পাবেন। তাহলে তিনি তার গতানুগতিক কাজ করার সার্টিফিকেট পেলেন। এভাবে একে একে অনেকের অংশগ্রহণে অর্থনীতির চাকা চালু হবে। স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। যাদের রেজাল্ট পজিটিভ আসবে তারা অনেকটা নির্ভারভাবে করোনা রোগীর সেবায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। আর বাকিদের কাজে লাগানো যেতে পারে অন্য রোগীদের সেবায়। তাহলে কোন রোগীর চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটবে না। দক্ষিণ কোরিয়া একেবারে প্রথম থেকেই এ্যান্টিবডি টেস্টের দিকে মনোযোগ দিয়েছিল বলে তাদের লকডাউনে যেতে হয়নি তেমনভাবে। আমাদের দেশে এখন অনেক রোগী পাওয়া যাচ্ছে যাদের লক্ষণ করোনা আক্রান্তদের মতো। পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে আসতে অনেকেই তার সংস্পর্শে এসে কোয়ারেন্টাইনে যাওয়া লাগছে। আবার অনেকেই মৃত্যুবরণ করছেন এরই মাঝে। পিসিআর টেস্টেও রেজাল্ট যে করোনার ক্ষেত্রে শতভাগ নির্ভুল তা কিন্তু নয়। পরীক্ষা করার নমুনা কোথা থেকে কিভাবে নেয়া হয়েছে, কিভাবে পরীক্ষাগারে নেয়া হয়েছে ইত্যাদির ওপরও নির্ভর করে রেজাল্ট। তাই আমেরিকার মতো দেশেও এখন এ্যান্টিবডি টেস্ট যাতে আইডিজম ও আইজিজি দেখা যায়, সঙ্গে সিটি স্ক্যান দিয়ে রোগ নির্ণয়ের কাজ চলছে। সময় যেমন বেঁচে যায় সঙ্গে অনেকের কোয়ারেন্টাইনে যাওয়া থেকে রক্ষা হচ্ছে বলে মনে করেন ডাঃ আশরাফুল হক। দ্রুত এন্টিবডি টেস্ট শুরু করার পরামর্শ দিয়েছেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ^বিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ দিদারে আলম মুহসিন। তিনি বলেন, ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে টেস্টিংয়ের আওতায় আনতে হলে শুধু একটি পদ্ধতি ‘পিসিআর’ টেস্টের ওপর নির্ভর করা চলবে কিনা তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। আমেরিকা, ইউরোপ, এমনকি পাশের দেশ ভারতও অনেক আগেই বিকল্প পদ্ধতির দিকে হাত বাড়িয়েছে। আরটি-পিসিআরের ক্ষেত্রে যেখানে একটি টেস্ট রান করাতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়, সেখানে এ সব টেস্ট এমনভাবে ডিজাইন করা সম্ভব যাতে স্বল্প সময়ের মধ্যেই রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব। আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে মেশিনের দাম, বিশেষ ধরনের ল্যাব সেট-আপ এবং নমুনা সংগ্রহ, প্রসেসিং ও পরীক্ষা পরিচালনার জন্য দক্ষ টেকনিশিয়ানের প্রয়োজন পড়ে। এসব মিলিয়ে পরীক্ষা প্রতি খরচটাও অনেক পড়ে যায়। এ্যান্টিবডি টেস্টিং অধিকতর সহজ ও স্বল্প খরচে করা সম্ভব। এখানে নমুনা হিসেবে দরকার কেবল অল্প একটু রক্ত, যা এমনকি সুই দিয়ে আঙ্গুল ফুটো করে রোগী নিজেই দিতে পারেন। পিসিআর টেস্টের জন্য সোয়াব ব্যবহার করে যে প্রক্রিয়ায় নাসারন্ধ্রের পেছনে ফ্যারিংস থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে হয়, তার জন্য দক্ষ হাতের প্রয়োজন তো আছেই, রোগীর জন্যও তা আরামপ্রদ নয়। তবে এ্যান্টিবডি টেস্টের একটি বড় সীমাবদ্ধতা হলো, এ পদ্ধতিতে সরাসরি ভাইরাস বা ভাইরাসের কোন উপাদান নয়, ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে শরীর যে সব এ্যান্টিবডি তৈরি করে তা শনাক্ত করা হয়। সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে যখন সবে শরীরে করোনাবিরোধী এ্যান্টিবডিসমূহ তৈরি হচ্ছে, তখন এসব এ্যান্টিবডি শনাক্তকরণ পরীক্ষায় ধরা নাও পড়তে পারে। এ কারণে এ্যান্টিবডি টেস্ট চলমান সংক্রমণ শনাক্তকরণের একমাত্র ভিত্তি হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ নেই। এ্যান্টিবডি টেস্টিং করোনার চলমান সংক্রমণ শনাক্তকরণে ব্যবহার করা না গেলেও ভিন্ন আঙ্গিকে এটি করোনা সংক্রমণের শনাক্তকরণ ও ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কোন ব্যক্তি আগে সংক্রমিত হয়েছিল কিনা এই টেস্টের মাধ্যমে আমরা তা নির্ধারণ করতে পারি। এ বিষয়টির দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে। প্রথমত: এ্যান্টিবডি তৈরি মূলত অণুজীবের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধমূলক প্রতিক্রিয়ার একটি অংশ। কাজেই, কোন ব্যক্তির শরীরে করোনাবিরোধী এ্যান্টিবডি শনাক্ত হলে ধরে নিতে হবে তার মধ্যে একরকম প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে যা তাকে পুনঃসংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারে। এ বিষয়টি একজন ব্যক্তিকে নির্ভয়ে তার কাজে ফিরতে উৎসাহ জোগাতে পারে। এটি ডাক্তার, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ তাদের সব সময় রোগী নিয়ে কাজ করতে হয় বলে তারা অনেক বেশি সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন। তবে সাধারণভাবে বিষয়টি সত্য হলেও এ্যান্টিবডি তৈরির ফলে পুনরায় করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে কতটুকু প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জিত হয় এবং তা কতদিন স্থায়ী হতে পারে এ বিষয়ে এখনো সম্যক ধারণা পাওয়া যায়নি। যেহেতু এ্যান্টিবডি টেস্টিংয়ের মাধ্যমে, উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকুক বা না থাকুক, অতীতে সংক্রমিত হয়েছে এমন সবাইকে শনাক্ত করা সম্ভব, দৈবচয়নের ভিত্তিতে বাছাই করে জনসাধারণের অংশবিশেষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে কোন একটি জায়গায় সংক্রমণের ব্যাপ্তির সঠিক চিত্র পাওয়া সম্ভব। এতে করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংক্রমণের ব্যাপকতার একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে এবং সে মোতাবেক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রয়োজনীয় পরিচর্যার জন্য সক্রিয় পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ করা যাবে। বিশেষ করে সংক্রমণের ‘হট স্পটগুলো’ চিহ্নিত করা গেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অধিক মনোযোগ ওখানে নিবদ্ধ করা সম্ভবপর হবে। এখানে এ্যান্টিবডি টেস্টের আরেকটি সম্ভাব্য দুর্বলতার কথা উলেখ করা সমীচীন হবে। এই টেস্ট ভুলক্রমে সমগোত্রীয় অন্য কোন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সৃষ্ট এ্যান্টিবডিকে নোভেল করোনার এ্যান্টিবডি হিসেবে শনাক্ত করতে পারে। বিভিন্ন রিপোর্টে দেখা যায়, বিশ্ববাজার এরকম বহু ত্রুটিপূর্ণ কিটে সয়লাব হয়ে গেছে। এ কারণে টেস্টিং কিটটি যথেষ্ট স্পেসিফিক কিনা তা ভালোভাবে পরীক্ষণ ও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন জানান অধ্যাপক ড. মুহম্মদ দিদারে আলম মুহসিন। এ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করার বিষয়ে অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনা পরীক্ষার কাজ সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে সম্প্রসারিত হবে। সরকারী ব্যবস্থাপনায় জেলা পর্যায় পর্যন্ত আরটি পিসিআর পরীক্ষা যত দ্রুত সম্ভব সম্প্রসারিত হবে। আরও নতুন নতুন সহজে করা যায়, এমন কোভিড পরীক্ষা চালু করা হবে। উপজেলা হাসপাতাল পর্যন্ত এ ধরনের পরীক্ষা চালুর প্রচেষ্টা নেয়া হবে। এমনকি এ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করার বিভিন্ন দিক নিয়ে হিসেব-নিকেশ করছে করোনা মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি। এবিষয়ে জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শ কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ সহিদুল্লা জনকণ্ঠকে বলেন, করোনাভাইরাসের এ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করার চিন্তা-ভাবনা চলছে। তবে বিষয়টি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এই টেস্টের প্রয়োজনীয়তা, লাভ-ক্ষতি, নির্ভরযোগ্য পদ্ধতিসহ বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে হিসেব নিকেশ করছে করোনায় মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি।
×