ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘অভিনেত্রী হিসেবে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়েছি’

প্রকাশিত: ১৯:৩১, ১৮ জুন ২০২০

‘অভিনেত্রী হিসেবে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়েছি’

‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর সিস্টেম দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে, পাল্টে যাচ্ছে মানুষও। সময়ের পরিবর্তনে পাল্টে গেছে মানুষের চাহিদার ধরন। তাই সময়ের পরিবর্তন মেনে নিতে হবে। কেউ সময়ের পরিবর্তন মেনে নেবে কেউ বা নেবে না। এটি তার একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। শিল্পীরা কাজ করে ভালোবেসে। কাজ করতে গেলে আলোচনা-সমালোচনা হবেই। সব কিছু মেনেই কাজ করতে হবে। এসব বিবেচনা করেই কাজ করি। অভিনয়ে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেই না, দিতেও চাই না। অনেক সময় দেখা গেছে দর্শক কোন কিছু না ভেবেই কাজের বিচার করে। এবং পর্দার সামনের লোকগুলোকেই দোষারোপ করে। আসলেই কি সব দোষ তাদের? বলাটা যত সহজ করাটা কিংবা ভাবনাটা অনেক কঠিন’- কথাগুলো বলছিলেন অভিনেত্রী মৌটুসী বিশ্বাস। তিনি একাধারে মডেল ও উপস্থাপিকা। সম্প্রতি মৌটুসী অভিনীত ‘ঝড়ো হাওয়া লেগে তার শিখা নিভে যাবে।’ ওয়েব সিরিজ অবমুক্তর পর সমালোচনার ঝড় ওঠে। তার কাছে জানতে চাই, অভিনীত ওয়েব সিরিজ ঘিরে সমালোচনার যে ঝড় বইছে, আপনার কাছে এর ব্যাখ্যা কি? বর্তমানে ওয়েব সিরিজ হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। আমি নিয়মিত বিদেশী ওয়েব সিরিজ দেখি। এর আগে ওয়েব সিরিজে কাজের অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে, ইচ্ছা ছিল। সে জায়গা থেকে কাজটি করি। পরিচালক ওয়াহিদ তারেকের সঙ্গে আগেও অনেক কাজ হয়েছে। সে আমার ভাল পারিবারিক বন্ধু। তার সঙ্গে যে সব কাজ হয়েছে সেগুলো গর্ব করার মতো। তার কাজের এবং তার প্রতি আমার আস্থা আছে। সেই আস্থার জায়গা থেকে কাজটি করা। তবে চাইলে এটি আরও ভাল করতে পারত। তার কাছে সেটি প্রত্যাশা করেছিলাম। আর এটি ইউটিউবে যাবার কথা ছিল না। সাবস্কাইব প্লাটফর্মে যাবার কথা ছিল। অভিনেত্রী হিসেবে সর্বোচ্চ রিস্ক নিয়েছি। বিশ্বাস রেখে কাজ করেছি। সেখান থেকে প্রচ- আশা ছিল। সরাসরি পাবলিক মাধ্যমে যাবে জানলে হয়ত বা কাজটি করতাম না। দর্শক নাটক দেখতে অভ্যস্ত। হঠাৎ, এ রকম কিছু দর্শক মেনে নেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। দু-হাজার উনিশ সালে আপনি বলেছিলেন অশ্লীলতা না এনে গল্পে নজর দিতে। দু-হাজার বিশে এসে ওয়েব সিরিজে কাজ করে অশ্লীলতার অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। কি বলবেন? পৃথিবী দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। গত বছরের সঙ্গে এ বছরে অনেক পরিবর্তন এসেছে। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে মানুষের রুচিতে পরিবর্তন এসেছে। এখনও বলব গল্প খুব প্রয়োজন। আমরা অভিনয় শিল্পীরা যখন কাজ করি তখন খুব বিশ্বাস নিয়ে কাজ করি। অভিনেত্রী হিসেবে অনেক ধরনের গল্পে কাজ করতে হয়। গল্পের প্রয়োজনে যে কোন চ্যালেঞ্জিং গল্পে কাজ করতে আগ্রহ আছে। গত মার্চের একুশ তারিখ থেকে মৌটুসী ঘরবন্দী। সর্বশেষ ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ‘আগুন পাখি’ নামে একটি ডেইলি সোপ এর শূটিংয়ে। করোনার আগে এটি প্রচারের কথা থাকলেও মহামারী করোনার কারণে প্রচারের সময় পরিবর্তন হয়েছে। নতুন শূটিং করার পর প্রচারিত হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শূটিং হচ্ছে। শূটিং নিয়ে কি ভাবছেন? আমি এখনই শূটিং করতে আগ্রহী নই। আমি খুব ভীতু। আর অভিনয়ের শিল্পীরা সবচেয়ে অরক্ষিত। কারণ, আমরা ম্যাস্ক পরে শূটিং করতে পারব না। বারবার পোশাক পরিবর্তনেও সমস্যা। সব মিলিয়ে আর কিছুদিন দেখে শূটিং করব। মৌটুসী খন্ড নাটকের চেয়ে সিরিয়ালে বেশি অভিনয় করেন। খন্ড নাটকে কম কাজ করার কারণ হিসেবে বলেন, খন্ড নাটক নারী অভিনয়শিল্পীদের বয়স ভিত্তিক প্রবণতা বেশি থাকে। খন্ড নাটকে মূলত তরুণ শিল্পীদের ভেবেই গল্প লেখা হয়। যার কারণে সেগুলো আমার সঙ্গে যায় না বলেই কম কাজ করা হয়। অভিনেত্রী বলেন, করোনাকালে অভিনয় শিল্পীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। কারণ, শূটিং হাউজগুলো অনেক অপরিষ্কার। সাধারণত শূটিং হাউজগুলোর পর্দা, বিছানার চাদর অপরিষ্কার থাকে। সব মিলিয়ে বেশ ঝুঁকিতে শিল্পীরা। হাউজ মনিটর করার লোক নেই। প্রোপার বাজেট পেলেও ব্যবহার হয় না। তবে মৌটুসীর ভাষায় ভাল বাজেট ভালো নির্মাতাদের দিতে হবে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও নির্মাতাদের আহ্বান জানান পরিবারিক কেন্দ্রিক নাটক করার। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিশেষ অনুরোধ করে এ অভিনেত্রী আহ্বান জানান প্রেমনির্ভর গল্পের চেয়ে পারিবারিক গল্পের নাটকে গুরুত্ব দেয়ার।
×