ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে রাজি ক্রিকেটাররা

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ১৬ জুন ২০২০

পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে রাজি ক্রিকেটাররা

মোঃ মামুন রশীদ ॥ আগামী মাসে শ্রীলঙ্কা সফরে ৩ টেস্টের সিরিজ খেলা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্তেই আসতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সর্বশেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষায় আছেন বিসিবির কর্তারা। বর্তমানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাব বাংলাদেশে ব্যাপকতা লাভ করেছে। আর ভয়ানক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি। আর এই গুরুত্বপূর্ণ সিরিজটি হবে কি হবে না সে বিষয়ে ক্রিকেটারদের ইচ্ছাও অনেকখানি নির্ভর করছে। আর শেষ পর্যন্ত সিরিজটি সময় মতোই হলে যেকোন ক্রিকেটার চাইলে সফরে নাও যেতে পারেন। ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সঙ্গে ক্রিকেটারদের অনলাইন আলোচনায় এ নিয়ে ক্রিকেটাররা একটি কথাই বলেছেন তা হচ্ছে, পরিস্থিতি সুবিধাজনক থাকলে এবং সর্বপ্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে টেস্ট খেলতে রাজি আছেন তারা। মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হক সৌরভের আশা সরকারের নির্দেশনা অনুসারে সঠিক সিদ্ধান্তই নেবে বিসিবি। কোয়াবের ভিডিও কনফারেন্সে কোয়াব সভাপতি নাঈমুর রহমান দুর্জয়, সহসভাপতি খালেদ মাহমুদ সুজন, সদস্য সচিব দেবব্রত পাল, মুশফিক, মুমিনুল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েস, তুষার ইমরান, আব্দুর রাজ্জাক, জহুরুল ইসলাম অমি, এনামুল হক জুনিয়র, শাহরিয়ার নাফীস, নুরুল হাসান সোহান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আফিফ হোসেন ধ্রুব ও নাইম শেখ অংশ নেন। গত ৩ মাস ধরে করোনভাইরাসের প্রভাবে দেশের ক্রিকেটে স্থবিরতা। সবকিছু থেমে আছে। এমনকি অনুশীলনও শুরু করতে পারেননি ক্রিকেটাররা। এমন পরিস্থিতি থেকে ফিরে আবার ক্রিকেটাররা তাদের দক্ষতা ও ফিটনেস ফিরে পেয়ে পূর্ণ ছন্দে আসতেও অনেক সময় লাগবে। দীর্ঘ সময় ক্রিকেট থেকে দূরে থাকার কারণেই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুশীলনের অনুমোদন রয়েছে, কিন্তু হোম অব ক্রিকেট খ্যাত মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম এখন পর্যন্ত উন্মুক্ত করা হয়নি। বরং বিসিবি ক্রিকেটারদের এমন অনুশীলনের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিতই করছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের আগামী মাসে শ্রীলঙ্কা সফরটি হওয়া একেবারেই অনিশ্চিত। কারণ, অনুশীলনও শুরু হয়নি। আর এই সফরে ৩ টেস্ট খেলতে হবে যার সব আবার আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত। এ কারণে সিরিজটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ এবং দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ হওয়াতে পর্যাপ্ত অনুশীলন প্রয়োজন। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বেশ আগেই বলেছেন, ক্রিকেটারদের ম্যাচ খেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হতে অন্তত ৫/৬ সপ্তাহ শুধু অনুশীলন প্রয়োজন। যদিও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (্এসএলসি) থেকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার দারুণ সুযোগ উন্মুক্ত করে দিয়েছে বিসিবিকে। তারা কিছুদিন আগেই জানিয়েছে, জুলাইয়ে বাংলাদেশ দল না আসলে তারা সেই সময়ে ঘরোয়া টি২০ লীগ আয়োজন করতে চায় এবং তাতেই আগ্রহী বেশি তারা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজটি সেপ্টেম্বরে আয়োজন করা যেতে পারে বলেও জানায় এসএসলি। এমন অবস্থায় বিসিবির জন্য সিদ্ধান্ত নেয়াটা খুব সোজা। এখন দেশে করোনার যে পরিস্থিতি এবং ক্রিকেটারদের প্রস্তুত হওয়ার যে ঘাটতি তাতে লঙ্কা সফর স্থগিত করাই হবে বাঞ্ছনীয়। এরপরও ক্রিকেটাররা বলছেন, সরকার সবুজ সঙ্কেত দিলে এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত হলে তারা শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে রাজি আছেন। তবে দেশে করোনা পরিস্থিতি দিনে দিনে অবনতির দিকে যাওয়ায় মাঠে ফেরার খুব বেশি তাড়া অনুভব করছেন না আপাতত ক্রিকেটাররা। রবিবার মিরপুরকে করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে সরকার থেকে। তারপর আর অনুশীলনের কোন সুযোগই নেই। দেবব্রত এ বিষয়ে বলেন, ‘সভায় মূলত শ্রীলঙ্কা সফর নিয়েই কথা হয়েছে এবং সফর নিয়ে সম্ভাব্য সব রকম প্রসঙ্গই আলোচিত হয়। জানা গেছে, জাতীয় দলের বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটারদের কেউই বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কা যেতে চাচ্ছেন না। তবে পরিস্থিতি কিছুটা ভালর দিকে গেলে এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারী নির্দেশনায় সিরিজ আয়োজন করলে তারা যাবেন।’
×