ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে বসে ঢাকার ফ্ল্যাটে চোর ধরলেন এক ব্যক্তি

প্রকাশিত: ২২:২৯, ১৬ জুন ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রে বসে ঢাকার ফ্ল্যাটে চোর ধরলেন এক ব্যক্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানের একটি কফি শপে অভিনব চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোর ফাঁকা ফ্ল্যাটে স্থাপিত সেই কফি শপে তিন দিন থাকে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া করে। রাতে ঘুমায়। সবই ঠিক ছিল, কিন্তু বেরসিক সিসি ক্যামেরা তার আরাম হারাম করেছে। চোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে মানবিক কারণে চোরের সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে কফি শপটির মালিক কোন মামলা করেননি। পুলিশ পুরনো একটি মামলায় ওই চোরকে গ্রেফতার দেখিয়েছে। পুলিশের দাবি, গ্রেফতারকৃত চোর পেশাদার চোর চক্রের সদস্য। গুলশান এভিনিউয়ের ৮৯ নম্বর সড়কে নর্থ এ্যান্ড কফি নামের ওই দোকানটির অবস্থান। দোকানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক যুক্তরাষ্ট্রের রিচার্ড হাবার্ড। করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি নিজ দেশে যান। দোকানটি বন্ধ করে দেন। তবে দোকানের সিসি ক্যামেরার সঙ্গে ওই ব্যক্তির মোবাইল সংযুক্ত ছিল। শনিবার মোবাইলের সিসি ক্যামেরা দিয়ে তার কফি শপটির সার্বিক অবস্থা দেখেন। তাতে তিনি দেখতে পান, ভেতরে একজন লোক দিব্যি টেবিলে খাবার সাজিয়ে বসে খাচ্ছেন। খাবার ফাঁকে ফাঁকে মদ পান করছেন। টানা তিনদিন ওই চোর একইভাবে খাওয়া-দাওয়া করেন ও সেখানে থাকেন। মনের আনন্দে মদ পানের পর নাচতেও দেখা যায় চোরকে। বিষয়টি তিনি তার বাংলাদেশে থাকা এক সহকর্মীকে জানান। তিনিই গুলশান থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান। শনিবারই গুলশান পুলিশ ঠিকানা মোতাবেক সেখানে হাজির হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে লুকিয়ে পড়ে চোরটি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি বেডরুমের টয়লেট থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গুলশান মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) আমিনুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, মাসুমের বিরুদ্ধে ঢাকার একাধিক থানায় মামলা রয়েছে। চুরির অভিযোগে ইতোপূর্বে সে একবার গ্রেফতার হয়েছিল। আচার-আচরণ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তার মানসিক সমস্যা থাকতে পারে। সে ফুটপাথে থাকে, ফ্ল্যাট খালি পেয়ে এখানে থেকে গিয়েছিল। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে মাসুমকে খাওয়া-দাওয়া করতে দেখা যায়। পরে এ ব্যাপারে গুলশান থানা পুলিশ কফি শপের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সারাবিশ্বে করোনা পরিস্থিতির কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে মনে করে অত্যন্ত মানবিক কারণে কফি শপের ওই মার্কিন নাগরিক কোন মামলা বা জিডি করতে রাজি হননি। তাই গত মার্চে গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে দায়ের থাকা একটি চুরির মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গুলশান মডেল থানার ওসি এসএম কামরুজ্জামান জনকণ্ঠকে জানান, গ্রেফতারকৃত চোরের নাম মাসুম। সে মাদকাসক্ত। পেশাদার চোর চক্রের সদস্য। মাসুম জানায়, চুরির জন্য সে সেখানে যায়। বাড়িতে ঢুকে প্রচুর খাবার দেখে। চুরির কথা ভুলে গিয়ে ভাল ভাল খাবার খেতে থাকে। ফ্ল্যাটে কেউ না থাকায় সে খাবার-দাবার খায়, মদ পান করে তিনদিন সেখানেই আরাম আয়েশে ঘুমাতে থাকে।
×