ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভবিষ্যত পথপরিক্রমার বাজেট এবং শিক্ষা খাত

প্রকাশিত: ২১:২৫, ১৬ জুন ২০২০

ভবিষ্যত পথপরিক্রমার বাজেট এবং শিক্ষা খাত

ক্ষুদ্র এক ভাইরাস বদলে দিয়েছে অর্থনীতির হিসাব। বিপর্যস্ত করেছে বিশ্ব অর্থনীতিকে। বলছিলাম করোনাভাইরাসের কথা। যে মহামারীতে তিন মাস ধরেই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির, শিল্প উৎপাদন গতিহারা। আমদানি-রফতানি তলানিতে। সঙ্কট আরও দীর্ঘ হলে বিভিন্ন সেক্টরে ক্ষতির পরিমাণ কী হবে তা ধারণার বাইরে। মানুষের জীবন এবং জীবিকাকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে এই ভাইরাস। জীবন ও জীবিকার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় করে আপাতত টিকে থাকার চেষ্টা করছি আমরা সবাই। কঠিন এই বাস্তবতার মধ্যে বৈশ্বিক মহামারীতে টিকে থাকা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশাকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিক নির্দেশনায় গত বৃহস্পতিবার (১১ জুন, ২০২০) আগামী (২০২০-২১) অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যেখানে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। যেহেতু আগামী অর্থবছর ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রথম বছর, সেহেতু এই বাজেটের বাস্তবায়ন গুরুত্ব পাবে আমি আশা করি। এই লেখায় শিক্ষা খাতে বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছি। এবারের বাজেটে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে আনা হয়েছে। করোনার কারণে উদ্ভূত এই বিশেষ পরিস্থিতিতে এবারের বাজেটে অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যত পথ পরিক্রমার দিক নির্দেশনা রয়েছে। তাই শিক্ষা খাতে বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করার আগে এই বিশেষ পরিস্থিতির কারণে বাজেটে যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তার কিছুটা আলোচনা করা প্রয়োজন মনে করছি। প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী সবাইকে স্বস্তি দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ, কর্পোরেট কর কমানোসহ নানা খাতে কর ছাড় দিয়ে ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। বিদেশ ফেরত বেকার প্রবাসীদের পরিবারের বোঝা যাতে হতে না হয় সে জন্য আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে পৃথক বরাদ্দ রেখেছেন। এ বরাদ্দ থেকে ঋণ পাবে বেকাররাও। বাজেটে মধ্যবিত্তদের কথা বিবেচনা করে কমানো হয়েছে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কর। যার কারণে এসব পণ্যের দাম কমবে বলে আশা করা যায়। নিম্ন ও প্রান্তিকদের জন্য আগামী অর্থবছর সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতা বাড়ানো হয়েছে। বাজেটের ১৭ শতাংশই এ খাতের জন্য রাখা হয়েছে। পুরো বাজেট বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় বাজেটে অর্থমন্ত্রী যথেষ্ট মানবিক হওয়ার চেষ্টা করেছেন। এবারের বাজেটে কর্মপন্থার যে চারটি প্রধান কৌশলগত দিক নির্ধারণ করা হয়েছে তা চোখে পড়ার মতো। প্রথম কৌশলে সরকারী ব্যয়ের ক্ষেত্রে কর্ম সৃজনকে প্রাধান্য এবং বিলাসী ব্যয় নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। দ্বিতীয় কৌশলে ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণের কথা বলা হয়েছে, যা করোনার এই দুর্যোগ কাটিয়ে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে। তৃতীয় কৌশলে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি। যা করোনার এই দুর্যোগে হত দরিদ্র, কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়ক হবে। চতুর্থ কৌশলে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছে। এই কৌশল বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যাতে মূল্যস্ফীতির নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, সে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে অর্থমন্ত্রী সতর্ক রয়েছেন বলে বাজেট বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে মানবসম্পদ উন্নয়ন (শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সংশ্লিষ্ট) খাতে ২৮.০৫ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ২২২ কোটি টাকা। করোনার কারণে এবার স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। কৃষিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। দীর্ঘ সাধারণ ছুটি ও লকডাউনের কারণে দরিদ্র কর্মজীবী মানুষের কষ্ট কমাতে সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বাড়ানোকে তৃতীয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। চতুর্থ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন আর্থিক ও প্রণোদনামূলক কার্যক্রমের ওপর। তার পরেই রয়েছে শিক্ষা। সবকিছুতেই শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থেকে কৃষির যান্ত্রিকীকরণে, দক্ষ জনবল তৈরিতে যেমন ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন ঠিক তেমনি করোনার এই ভয়াল থাবা থেকে দেশের মানুষকে বাঁচতে দক্ষ ডাক্তার ও নার্স তৈরিও প্রয়োজন। এবারের বাজেটে এই সকল বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এখন প্রয়োজন শুধু যথাযথ বাস্তবায়নের। করোনার কারণে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ছুটিকালীন সময়ে টেলিভিশন ও অনলাইনে দূরশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করা হয়। শিক্ষা খাতে আমাদের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে এই দীর্ঘ ছুটির ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে পাঠ্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। করোনাকালীন সময়ে অনলাইন শিক্ষায় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে আশা করি। যদিও বাজেটে এ ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় দুটি ক্যাটাগরি রয়েছে। তারমধ্যে একটি হচ্ছে- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং অন্যটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা। মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষার একটি এক অংশ হচ্ছে- কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা। অর্থনৈতিক উন্নয়নে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ভিত্তি হলো প্রাথমিক ও কারিগরি শিক্ষা। এবারের বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৪ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা, যা ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ছিল ২৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা। করোনার কারণে এখানকার শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে সেই বিষয়ে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। অবশ্য ২০১৯ সালে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে জাতীয় স্কুল মূলনীতি ২০১৯ মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। এর মাধ্যমে তাদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে ৫০৩টি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারএ্যাকটিভ ক্লাসরুম তৈরির কাজ চলমান। কম সময়ের মধ্যেই দেশের সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুটি করে ল্যপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে উপযুক্ত প্রযুক্তি ও স্কিলসমূহ চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।এবারের বাজেটে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য ৮ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে দাখিল, কারিগরি ও এবতেদায়ি স্তরে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার প্রসারে সরকার ইতোমধ্যে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। দেশে সরকারী এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় ১৫০টি। এখানে প্রায় দশ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এই স্তরের শিক্ষাকে আরও বেগবান করতে এখন জোর দেয়া হচ্ছে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও উচ্চশিক্ষায় গবেষণার ওপর। ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৩৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ছিল ২৯ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে মাধ্যমিক স্তরে ৫.৫৭ লাখ ছাত্র এবং ১০.৯৫ লাখ ছাত্রী, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ১.১৬ লাখ ছাত্র, ৪.৬২ লাখ ছাত্রী এবং ডিগ্রীস্তরে ৫০ হাজার ছাত্র ও ১.১৫ লাখ ছাত্রীকে উপবৃত্তি দেয়া হবে। পাশাপাশি পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে প্রায় ৬ লাখ শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে আরও ১ লাখ ৮৭ হাজার শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি প্রদান করা হবে। বাজেটে উপযুক্ত অর্থিক সুবিধা এবং অধুনিক প্রশিক্ষণকে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এখন করোনার এই দুর্যোগে যেহেতু শিক্ষার্থীরা সরাসরি শ্রেণী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছে না, তাই গ্রাম-শহর নির্বিশেষে ডিজিটাল পাঠদান পদ্ধতির দিকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। অনেক শিক্ষার্থীর ডিজিটাল বা অনলাইনে ক্লাস করার মতো প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি না থাকতে পারে। সেদিকে আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে। অনলাইনে ক্লাস করে ইন্টারনেটের ব্যয় বহন করার সক্ষমতা আমাদের অনেক শিক্ষার্থীর এখনও নেই। সেদিকেও আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কিছু কিছু স্থানে ইন্টারনেট সংযোগ অপ্রতুল। তাই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে সেদিকে নজর দিতে হবে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইনে কোলভোরেটিভ লার্নিং করা কঠিন। এখানে ন্যূনতম একটি ট্যাব প্রয়োজন। সরকারকে সেদিকে নজর দিতে হবে। অসমতা হ্রাসে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা পৌঁছে দেয়ার লক্ষে ইউনিয়ন, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন এবং শিল্পাঞ্চলে ৫ হাজার ৮৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে এবং ১৫০টি বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সেবা এসব সেন্টারের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে, যেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারী, বেসরকারী এবং একাডেমিয়া-এ তিন ক্ষেত্রের মিথস্ক্রিয়ায় বিশদ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা বিধৃত করা হয়েছে, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সময় উপযোগী উদ্যোগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে এজন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যাবাদ জানাচ্ছি। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে বাংলাদশে মানবসম্পদ উন্নয়নের গতি আরও ত্বরান্বিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর সফল কূটনৈতিক তৎপরতায় ২০১৯ সালে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একটি নতুন শ্রম চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ এখন জাপানে দক্ষ জনবল প্রেরণের জন্য ৯ম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ আইটি ইন্ডাস্ট্রির জনবলের চাহিদার দিক বিবেচনা করে আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে ৪০ হাজার তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচীর আওতায় ১৮ হাজারের অধিক জনকে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মাণাধীন পার্কসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে ৫০ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। ইতোমধ্যে হাইটেক পার্ক ও সফটওয়্যার টেকনোলজির পার্কসমূহে ১৪ হাজার জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শিক্ষায় আইসিটির ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে শিক্ষকদের জন্য ICT in Education Literacy বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদানের বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ICT in Education প্রোগ্রাম চালু করেছে। চলতি বছরই Big Data Analytics নামে স্নাতক পর্যায়ের একটি প্রোগ্রম চালু করা হবে। ধীরে ধীরে Robotics, Machine learning, Deep learning, 3D printing সহ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোগ্রামগুলোও চালু করা হবে। বাজেটে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে Center for Excellence গড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করি। কৃষি, স্বাস্থ্য এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে এবারের বাজেটে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। করোনার ধাক্কা সামলাতে গিয়ে কিছু ক্ষেত্রে মানবসম্পদের অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। যার কারণে অর্থমন্ত্রী এবারের বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য শিক্ষাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন। সর্বোপরি এই বাজেটে জীবন ও জীবিকার সমন্বয় করা হয়েছে। করোনার কারণে যেসব খাতকে গুরুত্ব দেয়া দরকার, সেসব খাতে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বাজেটে। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করার লক্ষ্যে শিক্ষার ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এজন্য আমি অর্থমন্ত্রীর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। লেখক : উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ
×