ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার কবলে বগুড়ায় বোরো সংগ্রহ অভিযান

প্রকাশিত: ০০:০১, ১৪ জুন ২০২০

করোনার কবলে বগুড়ায় বোরো সংগ্রহ অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ায় করোনার কবলে পড়েছে খাদ্য অধিদফতরের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান। হাটবাজারে ধানের দাম ক্রয় কেন্দ্রের চেয়ে বেশি হওয়ায় কৃষক হাটেই যাচ্ছে। বিপাকে পড়েছে সরকারী গুদামে চাল সরবরাহকারী চুক্তিবদ্ধ মিলাররা। বেশি দামে ধান কিনে চাল তৈরি করে সরকারী দরে খাদ্য গুদামে সরবরাহে লাভ কতটা টিকবে তার হিসাবনিকাশ করে মাথা নাড়তে হচ্ছে। খাদ্য বিভাগও বেকায়দায়। বলছেন ক্রয়ের ধীরগতি। সংগ্রহের সময় বাড়াতে হতে পারে। বগুড়ায় নতুন ধান উঠেছে। বেচাকেনা হচ্ছে। তবে করোনার কারণে তেমন গতি আসেনি। গ্রামের কৃষকও এখন ধান নিয়ে হাটবাজারে যেতে দ্বিধার মধ্যে থাকে। শুধু অতি প্রয়োজনে হাটে ধান নিয়ে যায় তারা। অনেক মহাজন কৃষকের আঙিনায় গিয়েও ধান কিনছে। হাটবাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ধানের দাম। এতে অবশ্য কৃষক উপকৃত হচ্ছেন। ভাবতে হচ্ছে চাল সরবরাহকারী মিলারদের। বেশিরভাগ মিলারের চালকল আছে। বেশি দামে ধান কিনতে হচ্ছে। ধান ভেনে চাল বানিয়ে সরকারী দরে গুদামে সরবরাহে কত লাভ থাকবে এই নিয়ে ভাবনায় আছে তারা। খাদ্য বিভাগের তথ্য : চলতি বোরো সংগ্রহ অভিযানে বগুড়ার জন্য নির্ধারিত হয়েছে প্রতি কেজি ২৬ টাকা দরে ২৫ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন ধান। প্রতি কেজি ৩৬ টাকা দরে ৭১ হাজার ৮শ’ ৪৮ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল। প্রতি কেজি ৩৫ টাকা দরে ৩ হাজার ৬শ’ ৩০ মেট্রিক টন আতপ চাল। ধান কেনা হচ্ছে সরাসরি কৃষকের কাছে থেকে। মোবাইল এ্যাপে তাদের তালিকা করা হয়েছে। খাদ্য সরবরাহ করবে চুক্তিভিত্তিক মিলাররা। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা বলেছেন, এক মাসে ধান সংগ্রহ হয়েছে ৮শ’ মেট্রিক টন। চাল সংগ্রহ ৭ হাজার মে.টন। প্রথম দিকের ক্রয়ের এই গতি দিনাকয়েক পরই হোঁচট খায়। বর্তমানে বগুড়ার হাটবাজারে মানভেদে ধান বিক্রি হচ্ছে ৯শ’ ৫০ টাকা থেকে ১২শ’ টাকা মণ দরে। কৃষকের কথা, সরকারী ক্রয় কেন্দ্রে ধান দিতে গেলে আর্দ্রতা মিটার বের করে পরীক্ষা। ধান সামান্য এদিক-ওদিক হলে ফিরিয়ে দেয়া। তারপর ধানের দাম পেতে সময় লাগে কিছুটা। কে যায় এত ধকল পোহাতে। নন্দীগ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক বললেন, মিনিকেট ও কাটারি ধানের আবাদ করেছিলেন। এই এলাকায় এই জাতের ধানের আবাদ বেশি হয়। প্রতিমণ কাটারি ধান বিক্রি করেছেন ১২৫০ টাকা দরে। গাবতলির পচাকাতুলি গ্রামের আব্বাস আলী জানালেন, বিআর-২৮ জাতের ধানের আবাদ করেছিলেন। হাটে বিক্রি করেছেন ৯শ’ ৫০ টাকা দরে। ক্রয় কেন্দ্রে দর বেশি কম দামে বেচলেন কেন! বললেন ক্রয় কেন্দ্রে ধান নিয়ে যাওয়ার খরচ, ধান দেখে সাহেবদের নানা ভুল বের করা আর বিল পেতে দেরি হওয়া। তার চেয়ে হাটে গেলেন মহাজন দরদাম করল নগদে বেচা হলো।
×