ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিজ উদ্যোগে অনুশীলনে মুশফিকসহ অনেক ক্রিকেটার

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ১৪ জুন ২০২০

নিজ উদ্যোগে অনুশীলনে মুশফিকসহ অনেক ক্রিকেটার

মিথুন আশরাফ ॥ নিজ উদ্যোগে বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন। করোনাভাইরাসের প্রভাবে ঘরবন্দী ক্রিকেটাররা বাসাতেই এতদিন ফিট থাকতে কাজ করে গেছেন। এখন ধীরে ধীরে বাইরে অনুশীলন করাও শুরু করে দিয়েছেন। দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বেশি অনুশীলন করা নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম যেমন এখনও মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরু না করলেও গুলশানে বাড়ির সামনের রাস্তায় প্রতিদিন দৌঁড়ান। নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করছেন। তিনি বাসাতেও ফিট থাকতে অনুশীলন করেছেন। এখন বাইরেও বের হচ্ছেন। রনি তালুকদার নারায়ণগঞ্জে মাঠে অনুশীলন করছেন। ইমরুল কায়েস গ্রামের মাঠে অনুশীলন করা শুরু করে দিয়েছেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও নোয়াখালীতে একা একা নেটে বোলিং করেছেন। সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য্য করেছেন শামসুর রহমান শুভ। তিনি মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই অনুশীলন করেছেন। একাকী অনুশীলন করেছেন শুভ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দেয়া গাইডলাইন মেনে শুভ অনুশীলন করেছেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এখনও আনুষ্ঠানিক অনুশীলন শুরু না হলেও ক্রিকেটাররা ফিটনেস ঠিক রাখতে নিজ উদ্যেগে অনুশীলন করছেন। তিন মাস ধরে কোন খেলা নেই। আউটডোর অনুশীলনে নেই ক্রিকেটাররা। বাসায় ফিট থাকার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু যখন বাসায় অনুশীলনে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই, তখন কী আর করার। সুযোগ হতেই তাই বাসার বাইরে অনুশীলন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ক্রিকেটাররা অনুশীলনে ফিরতে চায়। বিসিবির কাছে অনুরোধও করেছেন। অনেকদিন আগে অনুরোধ করলেও এখন আর ক্রিকেটাররা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বা যে যেখানে আছেন, সেখানকার স্টেডিয়ামে করবেন, এমনটি না। বিসিবিও এ নিয়ে নিরুৎসাহিত করেছে। কারণ, দিন দিন যেভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে বিপদ থেকেই যাচ্ছে। একা অনুশীলন করলেও যে নিরাপদ, তাও বলা যাচ্ছে না। তাই বিসিবি থেকে নিরুৎসাহিতই করা হয়েছে। এরপরও যদি ক্রিকেটাররা অনুশীলন করতে চায়, তাহলে করতে পারে। তবে এজন্য স্বাস্থ্যবিধি ও বিসিবির গাউডলাইন পুরোপুরি মানতে হবে। শুভর বাসায় অনুশীলন করার সুযোগ-সুবিধা তেমন নেই। তাই কোন উপায় না পেয়ে স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেছেন। আর এখন মাঠেও কেউ নেই। তাই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারছেন। সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি ১ জুন থেকে শেষ হওয়ার পর অফিস, পরিবহন খুলে যাওয়ায় ক্রিকেটাররাও একাকী অনুশীলন করার অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর হচ্ছে। বিশেষ করে মুশফিকের মতো পরিশ্রমী ক্রিকেটাররা অনুশীলনের সুযোগ চেয়েছিলেন। বিসিবিও আসলে মাঠ প্রস্তুতের দিকেই এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রভাব অনেক বেশি বাড়তে থাকায় ক্রিকেটারদের এদিকে নিরুৎসাহিত করা ছাড়া আর কোন বিকল্প পথ খোলা ছিল না। তাই করেছে বিসিবি। বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান যেমন বলেছেন, ‘যারাই অনুশীলন করতে চেয়েছে, তাদের নিরুৎসাহিত করেছি আমরা। এখন আর কেউ চায়নি। আমরা আসলে উৎসাহ দিচ্ছিলাম না। অনেকে ঈদের আগে থেকে চাইছিল। তারপর ও রকম আর কেউ চায়নি। ওরা যখন চাচ্ছিল তখন আমরা ওই রকম উৎসাহ দেইনি। তারপরও মাঠ প্রস্তুত রেখেছি, যদি কেউ চায় তাহলে করতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ চায়নি।’ অবস্থা যেভাবে চলছে, তাতে বাসা থেকে বের হওয়াই নিরাপদ নয়। তারপরও যারা কাজে যান, তাদের বের হতে হয়। কাজ না করলে যে চলবে না। কিন্তু ক্রিকেটারদের অবস্থা ভিন্ন। তাদের খেলা নেই, অনুশীলন নেই। তেমন কাজও নেই। তবে ফিটনেস তো ধরে রাখতে হবে। যখন খেলা শুরু হবে, তখন ফিটনেস ঠিক না থাকলে ভাল খেলবেন কিভাবে ? তবে এই মাসেও যে ক্রিকেটীয় কার্যক্রমে ফেরা হচ্ছে না, তা নিশ্চিত। বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুই যেমন বলেছেন, ‘এই মাসে কিছু শুরু হওয়ার সম্ভাবনা দেখি না। পরিস্থিতির উন্নতি হলে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হতেও পারে। আপনি যে কারও মাধ্যমে আক্রান্ত হতে পারেন। পানির বোতল থেকেও হতে পারে। তাই নিরাপদ থাকাই ভাল।’ জুন মাস দূরে থাক, জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহের আগে আনুষ্ঠানিক অনুশীলন শুরু হবে, তারও নিশ্চয়তা নেই। তাই বলে তো আর ক্রিকেটাররা বসে থাকতে পারেন না। নিজেদের ফিটনেস ঠিক রাখতে, যে যেভাবে পারছেন চেষ্টা করছেন। নিজ উদ্যোগে অনুশীলনও শুরু করে দিয়েছেন।
×