ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বেড়েছে ফলন, কমেছে ব্যয়

প্রকাশিত: ০০:০৬, ১৩ জুন ২০২০

বেড়েছে ফলন, কমেছে ব্যয়

সমুদ্র হক ॥ দেশে এই প্রথম বগুড়ার গ্রামে আইল তুলে জমির আয়তন বাড়িয়ে বোরোর অধিক ফলনে সফলতা এসেছে। যা যন্ত্র কৃষির সমবায় আবাদে নতুন পথ দেখিয়েছে। এই সময়টায় (জুনের প্রথমভাগ) আইল তোলা জমির বোরো ফসল মাড়াই কাটাই হচ্ছে কম্বাইন্ড হারভেস্টারে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ) জানিয়েছে, ফসল উৎপাদনে খরচ অনেক কমে কৃষকের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। মডেল প্রকল্পটি সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে। যুগ্মসচিব নূরে আলম সিদ্দিকী এই মডেল পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অন্যতম ভূমিকা রেখেছেন। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম গত বছর জুলাই মাসে বগুড়া সফরকালে বলেন দেশকে আগামী একশ’ বছরের দিকে তাকিয়ে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। পাইলট প্রকল্প সেভাবেই তৈরি। বগুড়া আরডিএর গবেষকদল শেরপুর উপজেলার চকপাথালিয়া, শশিবাড়ি ও ফুলবাড়ি গ্রামে ৬২টি প্লটের আইল তুলে দিয়ে ৭৫৮ শতাংশ জমিতে বোরো আবাদ কার্যক্রম শুরু করেন। এই ৬২টি প্লটে গ্রামের ৪৫ কৃষকের ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৬৬ শতাংশ আয়তনের জমি ছিল। টপোগ্রাফিক জরিপে জমিগুলোর নক্সায় মালিকের অংশের প্রমাণ রাখা হয়। যাতে কৃষকের মনে কোন সন্দেহ না থাকে। তাদের বলা হয় : জ¦ালানি, সেচ, উপকরণ খরচ সাশ্রয় হয়ে বাড়তি উৎপাদন হবে। মালিকরা তাদের জমির আয়তন অনুযায়ী ফসল পাবে। আইল উঠিয়ে দেয়ার পর ৭ শতাংশ বাড়তি ভূমি পাওয়া যায়। যে আইলে এতকাল আবাদ হয়নি। আইল উঠিয়ে দেয়ায় বহুমুখী কার্যক্রমের ট্রাক্টর চাষ সহজ ও দ্রুত হয়। জমি ঠিক করা থেকে চারা রোপণ, পরিচর্যা, সেচ ও ফসল মাড়াই কাটাই করে বস্তায় ভরা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপেই যন্ত্রের ব্যবহার হয়। যা ব্যবহারে আরডিএ সহযোগিতা দিয়েছে। যন্ত্রের ব্যবহারে উৎপাদন খরচ অনেক কমেছে। কম্বাইন্ড হারভেস্টারে ফসল কেটে মাড়াই করে বস্তায় ভরার আগে টপোগ্রাফি দেখে কোন কৃষকের ভাগে কতটা ধান মিলল তা হিসাব করে বুঝিয়ে দেয়া হয়। পুরো প্রক্রিয়া সমবায়ী ভিত্তিতে হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে সমবায়ী মনোভাব গড়ে উঠেছে। বোরোর এই আবাদের পাশাপাশি একই পরিকল্পনায় পাশের গ্রামে ২২৪ দশমিক ৫ শতাংশ জমির আইল তুলে শুধু সবজি আবাদ করা হয়। আরডিএর কৃষি বিভাগের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে প্রকল্প বাস্তবায়নের গবেষণা টিমে ছিলন, কৃষি প্রকৌশলী ফেরদৌস হোসেন খান, আবিদ হোসেন মৃধা, কৃষি অর্থনীতিবিদ আব্দুল মজিদ ও নৃবিজ্ঞানী শেখ শাহরিয়ার মোহাম্মদ। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন আরডিএর মহাপরিচালক আমিনুল ইসলাম। যুগ্মসচিব নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, আইলবিহীন আবাদ কার্যক্রমে জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজির ৩,৬ ও ৯ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হয়েছে। বগুড়া আরডিএ ছাড়াও কুমিল্লা বার্ডের মাধ্যমে সেই জেলার ছনগাঁও ও নোয়াপাড়া গ্রামে একই পাইলট প্রকল্পে বোরো আবাদ হয়েছে।
×