ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ॥ রোগী ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০০:০৫, ১৩ জুন ২০২০

হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ॥ রোগী ভোগান্তি

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ টেকনোলজিস্ট সঙ্কটের কারণে বরিশালে করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের সেবা প্রদান বিলম্বিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এ কারণে গত কয়েকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন বরিশাল বিভাগের মধ্যে একমাত্র করোনার হটস্পট নগরীর বাসিন্দারা। সিটি কর্পোরেশেনের স্বাস্থ্য বিভাগ নমুনা সংগ্রহ বন্ধ রাখার পর থেকে রোগীরা নগরীর মধ্যে থাকা শেবাচিম হাসপাতাল সদর জেনারেল হাসপাতালের শরণাপন্ন হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, শেবাচিম হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক রোগীদের পরামর্শ দিলেও নানান অজুহাতে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষার নমুনা প্রদানের জন্য সদর জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আর রোগীরা এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে পোহাচ্ছেন নানান ভোগান্তি। নগরীর মুন্সি গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, তিনি কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। সুস্থ না হওয়ায় তিনি শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পর সেখান থেকে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেয়া হয়। এরপর একই হাসপাতালে নমুনা দিতে গেলে তাকে সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট মোঃ নওয়াব আলী জানান, গত কয়েকদিন ধরে শেবাচিম হাসপাতালের বহির্বিভাগের টিকেট নিয়ে অসংখ্য রোগী নমুনা দেয়ার জন্য সদর জেনারেল হাসপাতালে আসছেন। তিনি আরও জানান, একজন টেকনোলজিস্টের পক্ষে প্যাথলজির স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি একসঙ্গে অনেক রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন বলেন, প্রতিনিয়ত সক্ষমতার দ্বিগুণ নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশ হাসপাতালের নমুনা সংগ্রহে দায়িত্বরতরা অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালের ওপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এখন সক্ষমতার অধিক নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে কিছু লোক সদর জেনারেল হাসপাতালে যাচ্ছে। তিনি আরও জানান, পুরতান অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী হাসপাতালের সাতজন টেকনোলজিস্টের মধ্যে রয়েছে পাঁচজন। যারমধ্যে একজনকে দিয়ে নমুনা সংগ্রহের কাজ করানো হচ্ছে। এছাড়া দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে চারজন স্বেচ্ছাসেবক দেয়া হয়েছে নমুনা সংগ্রহের কাজে। একজন নমুনা সংগ্রহকারীকে দিয়ে তিন শিফটে কাজ করানো সম্ভব নয় জানিয়ে পরিচালক বলেন, এ মুহূর্তে প্রধান নমুনা সংগ্রহকারী বিভূতি ভূষণ অসুস্থ হয়ে পড়লে এ হাসপাতালের অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। সিটি কর্পোরেশনের ডাঃ শুভ্র খন্দকার বলেন, সস্প্রতি আমাদের তিনজন টেকনোলজিস্টের করোনা পজেটিভ হওয়ায় নমুনা সংগ্রহের কাজটি আপাতত বন্ধ রয়েছে। তারা সুস্থ হলে আবারও এ কাজ শুরু করা হবে। জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মনোয়ার হোসেন বলেন, মূলত গোটা জেলায় টেকনোলজিস্টের সঙ্কট রয়েছে। বরিশালের ১০টি উপজেলার মধ্যে জেনারেল হাসপাতালসহ সাতটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাতজন টেকনোলজিস্ট রয়েছে। হিজলা, মুলাদি ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় কোন টেকনোলজিস্ট নেই। তবে করোনার নমুনা সংগ্রহের জন্য ওই তিন উপজেলায় অন্য স্টাফদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিকল্পভাবে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
×