ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে বোরো নিয়ে বিপাকে কৃষক

পানিতে ডুবে আছে স্বপ্নের ধান

প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ১৩ জুন ২০২০

পানিতে ডুবে আছে স্বপ্নের ধান

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ১২ জুন ॥ বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে কৃষকের স্বপ্নের বোরো ধান। ধান কেটে ঘরে ওঠাতে না পেরে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। একদিকে মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণের থাবা অপরদিকে প্রায় প্রতিদিনের বৃষ্টিতে মাঠের বোরো ধানের জমি পানিতে ডুবে গেছে। ফলে এক মণ ধানের দামেও একজন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে নিজেদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের নিয়ে এবং অতিমূল্যে ২-৪ জন শ্রমিক নিয়ে ধান কাটছেন তারা। এরপর ধান ক্ষেতে পানি থাকায় অন্য সময়ের তুলনায় অর্ধেক কাজও করতে পারছেন না তারা। সরেজমিনে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাগমারা, এনায়েতপুর, বাইমাইল, ধরেরবাড়ী, কোনাবাড়ি, লাউজানা, বানিবাড়ী, পিচুরিয়া, গালা, কুইজবাড়ী ও বড় বাসালিয়া এলাকায় দেখা যায়, হাঁটু থেকে প্রায় কোমড় পর্যন্ত বৃষ্টির পানিতে ধান ক্ষেত ডুবে রয়েছে। পানিতে দাঁড়িয়ে কৃষক ও শ্রমিকেরা ধান কাটছে। কাটা শেষে ধানের আঁটি পানি থেকে রশি দিয়ে টেনে টেনে বাড়ি নিচ্ছেন। কেউ আবার ধান ক্ষেতের পাশেই পানির মধ্যে খড় বিছিয়ে নেট অথবা প্লাস্টিকের মাদুর বিছিয়ে ধান মাড়াই করছেন। পানি থাকার কারণে আগের নির্ধারিত জায়গায় কৃষকরা ধান শুকাতে পারছেন না। শুকনো জায়গায় নিয়ে ধান শুকাতে হচ্ছে। এরপরও ক্ষেতে পানি থাকার কারণে শ্রমিক ও সময় এবং মজুরি বেশি লাগছে। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন কৃষকেরা । কাগমারা এলাকার রূপচান মিয়া বলেন, বৃষ্টির কারণে ধানক্ষেতে পানি জমে আছে। এ কারণে শ্রমিকের দাম বেড়ে গেছে। অন্যদিকে ধান কাটা থেকে শুরু করে মাড়াই এবং শুকানো পর্যন্ত সময়ও লাগছে বেশি। বৃষ্টির আগে যেখানে ধান মাড়াই ও শুকানো পরিকল্পনা করেছিলাম সেখানে পানি উঠেছে। তাই পাশের বাইমাইল এলাকার এক আত্মীয় বাড়ি নিয়ে ধান শুকাচ্ছেন তিনি। সব মিলে খরচও কয়েকগুণ বেশি হচ্ছে। ওই এলাকার সরোয়ার হোসেন বলেন, চার বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম। এর মধ্যে দুই বিঘা জমির ধান কাটতে পেরেছি। বাকি দুই বিঘা জমির ধান বৃষ্টির কারণে পানিতে ডুবে গেছে। ধানকাটতে শ্রমিকের সংখ্যাও বেশি লাগছে। তিনি বলেন, শুধু আমার নয়। আমার স্কিমে প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। সেখান থেকে আংশিক ধান কৃষক কাটতে পেরেছেন। বেশিরভাগই পানিতে ডুবে গেছে। কৃষক মামুন মিয়া বলেন, টাকা ধার করে ধান চাষ করেছিলাম। ভেবেছিলাম ধান বিক্রি করে ধারের টাকা পরিশোধ করতে পারব। কিন্তু পানিতে তলিয়ে গেছে ধান ক্ষেত। এতে শ্রমিক ও সময় বেশি লাগাসহ হচ্ছে খরচ বেশি। খরচের তুলনায় ধানের দাম খুবই কম। পানির কারণে পাকা ধান ঘরে তোলা ও দেনা পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।
×