ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় অসহায়দের পাশে নেই বরিশালের অধিকাংশ বিএনপি নেতা

প্রকাশিত: ২২:৫৩, ১৩ জুন ২০২০

করোনায় অসহায়দের পাশে নেই বরিশালের অধিকাংশ বিএনপি নেতা

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলার ২১টি নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন ২৬৪ জন নেতা। এছাড়া একসময় এখানকার ২৩টি আসনের ১৭টিই ছিল বিএনপির দখলে। ফলে দলের শীর্ষ নেতারা বিভাগীয় শহর বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলকে ওইসময় বলতেন বিএনপির শক্তঘাঁটি। বিএনপির একসময়কার শক্তঘাঁটিতে চলমান করোনার ক্লান্তি লগ্নেও দলের নেতৃত্বে থাকা নেতাদের মধ্যে অধিকাংশকেই খুঁজে পাচ্ছেন না দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। করোনার প্রভাবে চরম ক্লান্তি লগ্নের এই মুহূর্তে অসহায় সাধারণ মানুষতো দূরের কথা, দলীয় নেতাদের কাছ থেকে দরিদ্র কর্মী-সমর্থকরাও ন্যূনতম সহায়তা পাচ্ছেন না। বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিএনপির জেলা ও উপজেলার নেতা থেকে শুরু করে কেন্দ্রের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দরাও। এরইমধ্যে করোনার কর্মহীন দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের নামে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া এক নেতার বিরুদ্ধে ফেসবুকে গ্রুপ খুলে তৃণমূল পর্যায়ের স্বাবলম্বী নেতাকর্মীদের কাছে চাঁদা দাবিরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, করোনার কারণে চরম এই ক্লান্তির মুহূর্তে সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়া কিংবা সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের প্রশ্নে শতকরা পাঁচভাগ নেতাও কাউকে কোন সহযোগিতা করেননি। তবে নবম সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়া কয়েকজন নেতা তাদের নির্বাচনী এলাকায় প্রতিনিধির মাধ্যমে দলীয় ও সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছু খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছেন বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিভাগে রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি শাহজাহান ওমর, এ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব ও মেজর (অব) হাফিজ। এর মধ্যে ওমর, আলতাফ ও হাফিজ বিএনপির শাসনামলে পালন করেছেন মন্ত্রীর দায়িত্ব। এছাড়া বরিশাল সদর আসনের সাবেক এমপি মজিবর রহমান সরোয়ার এখন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব। করোনার ক্লান্তি লগ্নে এসব প্রভাবশালী নেতাদের কেউই বর্তমানে নিজ নির্বাচনী এলাকায় নেই। আর সহায়তা প্রশ্নে মজিবর রহমান সরোয়ারকে একবার বরিশাল নগরীতে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করতে দেখা গেছে। এছাড়া আলতাফ হোসেন চৌধুরী ছাড়া অন্য কাউকে এখন পর্যন্ত এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। বরিশাল জেলার ছয়টি নির্বাচনী এলাকার মধ্যে একমাত্র বরিশাল-২ নির্বাচনী এলাকার সহায়তা দিয়েছেন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া বিএনপি নেতা এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু। তিনি দুই উপজেলার কর্মহীনদের জন্য ১০ লাখ টাকা পাঠিয়েছেন। বরিশাল-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া জহির উদ্দিন স্বপন তার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে দুই উপজেলার কিছু সংখ্যক সংবাদকর্মী এবং পল্লী চিকিৎসকদের জন্য নামেমাত্র পিপিই দিয়েই দায় এড়িয়েছেন। এছাড়া জেলার অপর আসনগুলোর মনোনয়ন পাওয়া বাকিদের কোন কার্যক্রম নেই। বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহিন বলেন, সদর আসনের সাবেক সাংসদ ও দলের যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বিকাশের মাধ্যমে কিছু নেতাকর্মীকে অর্থ সহায়তা পাঠানো হয়েছে।
×