ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষার আগেই রুদ্রমূর্তিতে পদ্মা

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ১২ জুন ২০২০

বর্ষার আগেই রুদ্রমূর্তিতে পদ্মা

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ বর্ষার শুরুতেই রুদ্ররূপ ধারণ করেছে পদ্মা। উজান হতে নেমে আশা ঢলের পানিতে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পদ্মা নদী গর্জে উঠছে। রাক্ষুসী পদ্মার তীব্র স্রোত উপজেলার দিঘিরপাড়, পাঁচগাঁও কামারখাড়া ও হাসাইল ইউনিয়নের বেশ কিছু অঞ্চলে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টঙ্গীবাড়ির পদ্মানদী বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বইছে তীব্র স্রোত। আর এতে উপজেলার হাইয়ার পাড়, বড়াইল, মূলচর, পাঁচগাঁও, হাসাইল গ্রাম এলাকায় পদ্মা নদীতে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পদ্মানদী তীর সংরক্ষণ বাঁধের পাঁচগাঁও এলাকায় বাঁধ ধসে যাওয়া স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পুরো বাঁধটি। এছাড়া উপজেলার দীঘিরপাড় ইউনিয়নের হাইয়ারপাড় গ্রামের হাইয়ারপাড় আল-মদিনা জামে মসজিদটি নদীর দিকে একেবারে হেলে পড়েছে। মসজিদটির ফ্লোরের নিচের কিছু অংশ ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যে কোন মুহূর্তে পুরো মসজিদটি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। মাত্র চার বছর আগে তৈরি করা মসজিদটির আধুনিক ভবনটির পেছনের অংশের মাটি পদ্মায় বিলীন হয়ে মসজিদটি অনেকটা নদীর দিকে হেলে পড়েছে। এছাড়া মূলচর গ্রামের মোস্তফা খাঁ, ইব্রাহিম খাঁর দিঘিরপাড় বাজারের স’মিলের সামনে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তারা ওই স্থানে বাঁশ পুঁতে আবর্জনা ফেলে ভাঙ্গনরোধের চেষ্টা করছে। দিঘিরপাড়ের মূলচর হতে পাঁচগাঁও পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কোথায় প্রবল কোথায় মৃদূ আকারে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বিগত কয়েক বছরের ভাঙ্গনে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দক্ষিণ অংশের হাসাইল ও দিঘিরপাড় দুটি ইউনিয়নের প্রায় পুরো অংশ এবং কামাড়খাড়া, পাঁচগাঁও ইউনিয়নের অর্ধেক অংশ পদ্মায় বিলীন হয়ে যাওয়ায় ওই অঞ্চলের মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা ভাঙ্গনরোধে পানি উন্নায়ন বোর্ডের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে বড় গাছ নদীতে পুঁতে ব্যাগ ভর্তি বালু ফেলে ভাঙ্গনরোধে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে দিঘিরপাড় মূলচর গ্রামের বাসিন্দা মিজান খান জানান, এ বছর বর্ষার শুরুতেই নদীতে প্রচন্ড স্রোতে বইছে। আর স্রোতের কারণে বেশকিছু অঞ্চলে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গনরোধে সরকারের পাশাপাশি এলাকার ধর্নাঢ্য ব্যক্তিদের সহয়তায় হাইয়ারপাড় হতে মূলচর পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার বালু ভর্তি ব্যাগফেলে বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। টঙ্গীবাড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জগলুল হালদার ভুতু জানান, ভাঙ্গনরোধে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে বিস্তীর্ণ জনপদ বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় এমপি অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি বলেন, টঙ্গীবাড়ি ও লৌহজং উপজেলায় পদ্মার ভাঙ্গনে ক্ষতবিক্ষত জনপদ। এই জনপদকে রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে।
×