ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘সমাজসংলগ্ন এক চলচ্চিত্রকারের নাম বাদল রহমান’

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ১০ জুন ২০২০

‘সমাজসংলগ্ন এক চলচ্চিত্রকারের নাম বাদল রহমান’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অল্পকথায় এই কীর্তিমান সম্পর্কে বলা যায় না। চলচ্চিত্রকে আশ্রয় করে দেশের শিল্প আন্দোলনে রেখেছেন অনন্য ভূমিকা। সব মানুষ সময়কে ধারণ করতে পারে। তিনি সময়কে ধারণ করেছিলেন সেলুলয়েডে। সমাজবিচ্ছিন্ন কোন কাজে তার আগ্রহ ছিল না। আমৃত্যুর সংস্কৃতির সঙ্গে জীবনের সংযোগ খুঁজেছেন। তাই শিল্প সৃষ্টির ভাবনাতে জীবনের সমান্তরালে দাঁড় করিয়েছেন প্রগতিশীল রাজনৈতিক চেতনাকে। এ কারণে সসমাজসংলগ্ন এক চলচ্চিত্রের নাম বাদল রহমান। এভাবেই চলচ্চিত্রকার বাদল রহমানের মূল্যায়ন করলেন আরেক প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদল রহমানের দশম প্রয়াণবার্ষিকী। এদিন মুক্তিযোদ্ধা, চলচ্চিত্রকার ও দেশের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের এই পথিকৃতকে স্মরণ করবে ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি। রাত আটটায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে স্মারক বক্তৃতা। ‘বাংলাদেশে চলচ্চিত্র সংস্কৃতির গড়ে ওঠা ও চলচ্চিত্রজন বাদল রহমানের লড়াই’ শীর্ষক বক্তৃতা দেবেন চলচ্চিত্রকার ও চলচ্চিত্র শিক্ষক সালাহউদ্দিন জাকী। মঙ্গলবার জনকণ্ঠের সঙ্গে আলাপচারিতায় সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী বলেন, শিল্পচর্চার পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধ এক মানুষ ছিলেন বাদল রহমান। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সকল প্রগতিশীল ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন। তার শিল্পের ভেতর সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রত্যয় ছিল। তিনি যে শুধু চলচ্চিত্র বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন তা নয়। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রতিবিম্বিত হয়েছে তার চলচ্চিত্রে। আমার চলচ্চিত্রের ভুবনে আসার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন বাদল রহমান। প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে ক্ষ্যাপাটে এই মানুষটির পরিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। তাই সংস্কৃতির সঙ্গে রাজনীতি ও জীবনকে এক জায়গায় আনার চেষ্টা করেছেন। আদর্শের খুঁটি না থাকলে এমনটা সম্ভব হয় না। সেই আদর্শ বহন করতেন বাদল রহমান। যে কোনো বিষয়ে ধাক্কা দেয়ার ক্ষমতা রাখতেন। এই কারণে বয়সে ছোট হয়েও সে ছিল আমার শ্রদ্ধার পাত্র। বৃহস্পতিবার বাদল রহমানের দশম প্রয়াণবার্ষিকী। ২০১০ সালের ১১ জুন ৬২ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হন। চলচ্চিত্রকার বাদল রহমান বাংলাদেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্রের নির্মাতা এবং চলচ্চিত্র শিক্ষক ছিলেন। নির্মাণ করেছিলেন আলোচিত ছবি ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’। গত শতাব্দীর ষাটের দশকের উত্তাল রাজনৈতিক আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছিলেন কখনও কর্মী, কখনও সম্মুখ সারির সাংস্কৃতিক নেতা। চলচ্চিত্র শিক্ষক হিসেবে চলচ্চিত্রকার বাদল রহমান বাংলাদেশে চলচ্চিত্র শিক্ষার প্রসারে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আজীবন দেশের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি প্রতি বছরের মত এবছরও চলচ্চিত্রকার বাদল রহমানকে নিবেদিত স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করেছে। অষ্টমবারের মত এই স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মহামারীর কারণে এবারের স্মারক বক্তৃতা অনলাইনে সরাসরি অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার রাত আটটায় ‘বাংলাদেশে চলচ্চিত্র সংস্কৃতির গড়ে ওঠা ও চলচ্চিত্রজন বাদল রহমানের লড়াই’ শীর্ষক বক্তৃতা করবেন সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী। সঞ্চালনার পাশাপাশি বাদল রহমান স্মরণে আলোচনা করবেন ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক বেলায়াত হোসেন মামুন। আয়োজনটিতে সকলে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। আয়োজনটি সরাসরি দেখা যাবে গড়ারুধহধ ঋরষস ঝড়পরবঃু, ইধহমষধফবংয -এর ফেসবুক পেইজে ভধপবনড়ড়শ.পড়স/গড়ারুধহধ।
×