ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের সুচিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ২৩:০৪, ১০ জুন ২০২০

চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের সুচিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমিত ও উপসর্গ নিয়ে রোগীদের চিকিৎসা এবং জীবন রক্ষার অন্যতম অনুষঙ্গ অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে। প্রাণঘাতী করোনার চিকিৎসা নিয়ে প্রতিদিন সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে যেসব তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে এর কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। ফলে করোনা আক্রান্ত অধিকাংশ রোগী কাতর অবস্থানে রয়েছেন। অনেকে বাসায় থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকে প্রাণ হারাচ্ছেন। ইতোমধ্যে জনস্বাস্থ্য রক্ষা আন্দোলন : চট্টগ্রামের ব্যানারে করোনা রোগীদের সুচিকিৎসার্থে বিক্ষোভও হয়েছে। এ সংগঠনটির পক্ষে এ সংক্রান্তে ১৬ দাবি তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু এসব দাবির বাস্তবায়ন তো দূরের কথা, উপরন্তু করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে নগরজুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ভীতি ও আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। ক্ষোভ দানা বাঁধছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। করোনা আক্রান্তদের শ^াসকষ্ট মারাত্মক একটি ব্যাপার। এ থেকে উত্তরণে প্রয়োজন হাসপাতালে আইসিইউ’র সুবিধা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ নগরীতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, বেসরকারী মা ও শিশু হাসপাতাল মিলে মাত্র ২৪টি আইসিইউ সুবিধা রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন চট্টগ্রাম মহানগরী, জেলার চৌদ্দ উপজেলা এবং তিন পার্বত্য জেলা থেকে গড়ে অসুস্থ রোগীদের নমুনা আসছে প্রায় ৫শ’। এরমধ্যে গড়ে প্রতিদিন শনাক্ত হচ্ছে ১শ’ থেকে ১২০ জন। করোনা সংক্রমিত এসব রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থায় বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। আবার অন্যদিকে, করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তির জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে অসংখ্য রোগী স্বজনরা নিয়ে ঘুরছেন। এদের কাছ থেকে করোনা আক্রান্ত সার্টিফিকেট চাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, করোনা আক্রান্ত কিনা এর নমুনা পরীক্ষার জন্য বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং বেসরকারী মা ও শিশু হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও এর সুযোগ নেই। বেসরকারী যে ১২টি হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসায় যুক্ত হওয়ার জন্য সরকার নির্দেশ প্রদান করেছে তা নিয়ে নানা টালবাহানার পর সম্মতি প্রকাশ করলেও বর্তমানে কেবিন, আইসিইউ সুবিধা দেয়া যাবে না বলে আক্রান্ত রোগীদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বেসরকারী ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল আজ বুধবার থেকে করোনার নমুনা পরীক্ষা করার ঘোষণা দিয়েছে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে। এছাড়া বেসরকারী ইউএসটিসির বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এছাড়া পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়া বেসরকারী হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করার পর আইসিইউ সুবিধা লাগবে এমন রোগীদের মঙ্গলবার থেকে ভর্তি শুরু হয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, বেসরকারী ইম্পেরিয়াল ও বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসার জন্য কোভিড হাসপাতাল হিসেবে অধিগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কিন্তু সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের আইসিইউ সুবিধা দেয়ার জন্য কোন প্রস্তুতি নেই। অপরদিকে, ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, তাদের সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কোন চুক্তি হয়নি। তবে তারা আজ থেকে শুধু করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু করবে। উল্লেখ করা যেতে পারে, চট্টগ্রামে সরকারী পর্যায়ে চমেক হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল এবং পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়া হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালকে জেনারেল হাসপাতালের ইউনিট-২ এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালকে ইউনিট-৩ হিসেবে বিবেচনা করার ঘোষণা রয়েছে। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে দেখা যাচ্ছে, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালটিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এখনও যথাযথ ব্যবস্থা হয়নি।
×