ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গায়ে মাখার পরামর্শ

রৌদ্রস্নান বাড়াবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, আছে ভিটামিন ডি

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ১০ জুন ২০২০

রৌদ্রস্নান বাড়াবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, আছে ভিটামিন ডি

মোরসালিন মিজান ॥ গ্রীষ্ম এখনও বহাল আছে। সুযোগ পেলেই চোখ রাঙাচ্ছে সূর্য। আকাশ থেকে কিছুটা যেন নেমে এসে তাপ বিকিরণ করছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় রোদ বা গরম অনেক কম। এর পরও কেউ কেউ ত্যাক্ত বিরক্ত। নিন্দা করছেন রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের। বলছেন, এমনিতেই মহাবিপদে আছি। তার ওপর এই রোদ। হাঁসফাঁস করা গরম। যা বাবা। গেলে বাঁচি। কিন্তু গবেষকরা অন্য কথা বলছেন। তাদের মতে, রোদ দেখে পালানোর সময় এটি নয়। বরং গায়ে সূর্যকিরণ মাখার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। বলছেন, এ অভ্যাস করোনা থেকে মুক্ত থাকতে সহায়তা করবে। ব্যাখ্যাটি পরিষ্কার। সূর্যালোকে আছে ভিটামিন ডি। এ ভিটামিন ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। রোদ পোহানোর মাধ্যমে মানুষের ত্বকে ভিটামিন-ডি সংশ্লেষিত হয়। এর ফলে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সাধারণত মানুষ রোদে নামতে চায় না। গরমে ক্লান্ত হতে চায় না। তদুপরি এখন বেশিরভাগ মানুষ ঘরে অবস্থান করছেন। দিনের আলো চোখেই সামান্য দেখে। রোদ গায়ে মাখবে কখন? ফলে শরীরে ডি’র ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। করোনাকালে এটি ভয়ের কারণ বলেই মনে করছেন গবেষকরা। ১০টি দেশের করোনা রোগীদের তথ্য সংগ্রহ ও তা বিশ্লেষণের পর এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন তারা। আন্তর্জাতিক গবেষণা বলছে, ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ইতালি ও স্পেনের অধিবাসীদের শরীরে ভিটামিন ডি’র পরিমাণ খুবই কম। দেশ দুটিতে মৃত্যু বাড়ার এটি একটি উল্লেখযোগ্য কারণ। গবেষকদের মতে, রোদ গায়ে না মাখায় ত্বকের পিগমেন্টটেশন কমেছে। ভিটামিন ডি’র সংশ্লেষ, যতটা প্রয়োজন, হচ্ছে না। ব্রিটেনের এ্যাংলিয়া রাসকিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লি স্মিথ বলছেন, গড় ভিটামিন ডি’র মাত্রার সঙ্গে কোভিড-১৯ এর গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছি আমরা। উত্তর ইউরোপের দেশগুলোতে মানুষ রোদে বের হয়। ফলে শরীরে ভিটামিন ডি’র গড়মাত্রা ইতালি ও স্পেনের তুলনায় বেশি। এ কারণে সেসব দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কম দেখা গেছে। এদিকে কোভিডে বেশি মারা যাচ্ছেন প্রবীণরা। প্রবীণদের এই মৃত্যুর পেছনেও ভিটামিন ডি’র অভাবকে বিশেষ দায়ী করছে গবেষণা। তারা বলছেন, প্রবীণদের শরীরে ভিটামিন-ডি’র মাত্রা স্বাভাবিক তুলনায় অনেক কম থাকে। এ কারণেই করোনা তাদের সহজেই আক্রান্ত করে ও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। অবশ্য এ নিয়ে চূড়ান্ত কথা বলার সময় এখনও আসেনি বলে মনে করেন স্মিথ। আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলেই মত তার। গবেষণা চলুক। করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কাজও তো চলমান আছে। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত করোনা থেকে মুক্ত থাকা, বেঁচে থাকা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জে জয়ী হতে সম্ভাব্য সবই করতে হবে। তাহলে রোদটুকু গায়ে মাখতে দোষ কী? এ জন্য ঘর থেকে বের হতে হবে না। প্রতিদিন বাসার বারান্দায় বা ছাদে চলে যান। সচেতনভাবে রোদটা গায়ে লাগান। রৌদ্র¯œান করুন। গবেষকরা বলছেন, উপকার বৈ অপকার হবে না তাতে।
×