ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চাঞ্চল্যকর কাহিনী ॥ রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ

কুয়েতে গ্রেফতার স্বতন্ত্র এমপি পাপুল জেলে ॥ মানবপাচার মানি লন্ডারিং ভিসা জালিয়াতি

প্রকাশিত: ২২:১১, ৯ জুন ২০২০

কুয়েতে গ্রেফতার স্বতন্ত্র এমপি পাপুল জেলে ॥ মানবপাচার মানি লন্ডারিং ভিসা জালিয়াতি

শংকর কুমার দে ॥ কুয়েতে মানবপাচার, মানি লন্ডারিং, জনশক্তি ব্যবসায় গুরুতর অনিয়ম, প্রতারণা, জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার কারবারে অভিযুক্ত নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য (এমপি) মোহাম্মদ শহীদ ইসলাম পাপুল গ্রেফতার হয়েছেন কুয়েতে। কুয়েতে গ্রেফতারের পর তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে কুয়েতের আদালত। মানবপাচার, মানি লন্ডারিং, প্রতারণা, জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে এই এমপিকে গ্রেফতার করেছে কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। পাপুল এমপি গ্রেফতারের পর তার দুই সহযোগী পালিয়ে গেছেন। কুয়েতে তার জামিন না মঞ্জুর হওয়ার পর ‘কনস্যুলার একসেস’ চেয়ে চিঠি চালাচালি করছে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। গ্রেফতার হওয়া এমপি’র কুয়েতে যাতে বিচার না হয় এবং বাংলাদেশে যাতে ফিরিয়ে আনা যায় সে জন্য কুয়েত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে সরকার। কুয়েতে গ্রেফতার হওয়া এমপি পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম কুমিল্লা থেকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যের (এমপি) আসনটি বাগিয়ে নেন। কোন দলীয় রাজনীতি না করেও শুধুমাত্র কোটি কোটি টাকা উপঢৌকন দিয়ে স্বামী ও স্ত্রী দু’জনেই এমপি পদ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন বলে জানা গেছে। কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে বলেন, সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহীদ ইসলাম পাপুলকে কুয়েতের সিআইডি পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে আমরা শুনেছি। তবে এখনও অফিসিয়ালি আমাদের জানানো হয়নি। আমরা বিষয়টি বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। আমরা চিঠি দিয়েছি কুয়েত সরকারকে। জানতে চেয়েছি গ্রেফতারের কারণ। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত কুয়েত সরকারের পক্ষ থেকে কিছুই জানায়নি কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে। কারাগারেই আছেন পাপুল এমপি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন গণমাধ্যমে বলেছেন, কুয়েত থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আমাকে জানিয়েছেন এমপিকে সিআইডি গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে মানবপাচার ও অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। উনি কুয়েতে একটি বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী। ওই প্রতিষ্ঠানের কুয়েতি চেয়ারম্যান তাকে জামিনে ছাড়ানোর চেষ্টা করছেন। আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। সরকার এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা দুঃখজনক এবং একই সঙ্গে লজ্জার বিষয় যে বিদেশে গিয়ে একজন এমপি গ্রেফতার হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে এমন সময়ে যখন সারাবিশ্ব মানবপাচারের ব্যাপারে একাট্টা। গত শনিবার রাতে দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) গ্রেফতার করে পাপুল এমপিকে। স্থানীয় সময় শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় কুয়েত সিটির মুশরিফ আবাসিক এলাকার ৪ নং ব্লকে তার বাসা থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যায় কুয়েতের সিআইডি। গ্রেফতারের পর তার জন্য জামিনের আবেদন জানানো হয়। জামিন না মঞ্জুর করে কুয়েতের কারাগারে পাঠিয়ে দেয় কুয়েতের আদালত। এমপি পাপুলকে গ্রেফতারের পর কুয়েত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। মানবপাচার, মানি লন্ডারিং, প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ এনেছে কুয়েতের সিআইডি। কুয়েতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী মানব ও অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, এমন কয়েক শ’ ব্যক্তির তালিকা রয়েছে কুয়েত সরকারের হাতে। সেই তালিকা ধরেই সম্প্রতি বিতর্কিত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে দেশটির গোয়েন্দা বিভাগ। সেই অভিযানেই গ্রেফতার হন এমপি পাপুল। কুয়েতের সংবাদপত্রের খবরে পাপুল ॥ গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দৈনিক আরব টাইমস, আরবি দৈনিক আল কাবাস, কুয়েতি টাইমসসহ কয়েকটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশী এই এমপির বিরুদ্ধে মানবপাচারে জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে। কুয়েত পুলিশের বরাত দিয়ে আল কাবাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, চক্রটি ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশীকে কুয়েতে নিয়েছিল। এমপি পাপুল তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি নিয়েছেন পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা। এভাবে তিনি পাঁচ কোটি কুয়েতি দিনার পকেটে ভরেন, বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা। কুয়েতের সংবাদ মাধ্যমে গত ফেব্রুয়ারিতে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি পাপুল কুয়েতের কর্মকা- নিয়ে সিরিজ রিপোর্ট হয়। তার কাজ কারবার নিয়ে বহু দিন ধরে কুয়েতের সংবাদ মাধ্যম সরব। আরবি এবং ইংরেজী উভয় ভার্সনের সংবাদ মাধ্যমেই তার কর্মকা- ছাপা হয়েছে। অবশ্য সেখানে তার ইঙ্গিতপূর্ণ বর্ণনা ছিল। তিনি এবং তার স্ত্রী দু’জনই যে বাংলাদেশের পার্লামেন্টের এমপি সেটি উল্লেখ করেছে। ওই নিউজের পর ঢাকায় ঘোষণা দিয়ে কুয়েতে ফিরছিলেন মারাতিয়া কুয়েতি গ্রুপ অব কোম্পানিজের স্বত্বাধিকারী কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল এমপি। মার্চ থেকে তিনি দেশটিতে অবস্থান করছেন বলে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং কমিউনিটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। কুয়েতি সংবাদ মাধ্যমে সেই সময় বাংলাদেশী এমপির ব্যবসা পেতে বিলাসবহুল গাড়ি উপহার দেয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল। বলা হয়েছিলে- অর্থপাচার, মানবপাচার ও ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে বাংলাদেশী ওই এমপির বিরুদ্ধে তদন্ত চালু করেছে কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। কুয়েতের দৈনিক আল কাবাস দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এমপি পাপুলকে গ্রেফতারের জন্য কুয়েত সিআইডির অভিযানের তথ্য জানায়। তখন তার কুয়েত ছেড়ে পালানোর তথ্যও জানায় আল কাবাস। কুয়েত ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েতে মানবপাচার ও হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ ওঠে। দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ ॥ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে যেসব অভিযোগের তদন্ত চলছে তাতে জানা গেছে, এমপি কাজী শহীদ পাপুলের বিরুদ্ধে কমিশন খেয়ে ব্যাংকঋণ বরাদ্দসহ বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারে জড়িত থাকার তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেছে। পাপুল এমপি ব্যবসার আড়ালে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। এ ছাড়া ২০১৬ সালে দেশ থেকে ২৮০ কোটি টাকা হুন্ডি ও বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পাচার করেন। বাকি টাকা তার শ্যালিকা জেসমিন প্রধান এবং জেডডাব্লিউ লীলাবালি নামক প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা করেন। গুলশান-১ নম্বরের ১৬ নম্বর সড়কে গাউসিয়া ডেভেলপমেন্টের প্রকল্পে মেয়ে ও স্ত্রীর নামে দুটি ফ্ল্যাট, গুলশান-২ নম্বরে পিংক সিটির পেছনে গাউসিয়া ইসলামিয়া প্রকল্পে স্ত্রীর নামে ৯ হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট, স্ত্রী ও নিজের নামে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরসহ বিভিন্ন স্থানে ৯১ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে পাপুলের। এমপি’র দুই সহযোগী পালিয়ে গেছে ॥ এমপি পাপুল কুয়েতে গ্রেফতারের পরপরই দুই ব্যক্তি পালিয়ে গেছে। গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তি তিন ব্যক্তি নিয়ে গঠিত একটি চক্রের সদস্য ছিলেন। চক্রের বাকি দুই সদস্য কুয়েত ছেড়ে পালিয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের পরিচয় হিসেবে বলা হয়েছে, তিনি সম্প্রতি বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্য হয়েছেন। অপর একজনকে ‘এস’ নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি ইউরোপে পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযুক্তরা কুয়েতের তিনটি বড় প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে গৃহকর্মী হিসেবে ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশী শ্রমিককে কুয়েতে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব শ্রমিককে কুয়েতে পাঠানোর বিনিময়ে ৫ কোটি কুয়েতি দিনার বাংলাদেশী মুদ্রায় ১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকার বেশি নিয়েছেন। ভিসা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ॥ গ্রেফতার হওয়া পাপুল এমপিসহ অভিযুক্ত তিন ব্যক্তি বাংলাদেশে ভিসা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বলে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন সিআইডি কর্মকর্তারা। আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশে তাদের বড় ধরনের নেটওয়ার্ক রয়েছে। তাদের হয়ে কাজ করেন অনেক কর্মী। তদন্তে আরও বের হয়ে আসে, গড়পড়তা শ্রমিক প্রদানের জন্য ওই নেটওয়ার্কের প্রতি কর্মীকে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ২০০ দিনার করে পরিশোধ করা হয়। অন্যদিকে, ড্রাইভার ভিসা বিক্রি করা হয় ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩০০০ দিনার করে। যেভাবে পাপুলের উত্থান ॥ পাপুল ১৯৯২ সালে শ্রমিক হিসেবে কুয়েতে যান বড় ভাই বিএনপি নেতা কাজী মঞ্জুরুল আলমের হাত ধরে। সেই ব্যক্তিই আজ দেশে দুটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। কুয়েতেও রয়েছে তার একাধিক প্রতিষ্ঠান। আলিশান বাড়ি-গাড়িসহ কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক তিনি। পাপুলের প্রভাব-প্রতিপত্তি শুধু বিত্তে থেমে থাকেনি। কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত না থেকেও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অনেকটা আকস্মিকভাবে স্বামী-স্ত্রী দুজনই হয়েছেন সংসদ সদস্য (এমপি)। নিজে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। আর স্ত্রী সেলিনা ইসলাম কুমিল্লা থেকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হয়েছেন। ২০১৬ সালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আসেন পাপুল। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জোট শরিক জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি মোহাম্মদ নোমানকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে মনোনয়ন দেয়। আর পাপুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে মোহাম্মদ নোমান নাটকীয়ভাবে গা-ঢাকা দেন। সে সময় অভিযোগ ওঠে, বারো কোটি টাকার বিনিময়ে নোমানকে ভোটের মাঠ থেকে সরিয়ে দেন পাপুল। পরে ভোটে জিতে এমপি হয়ে যান পাপুল। পরবর্তী সময়ে স্ত্রী সেলিনা ইসলামের জন্যও বাগিয়ে নেন কুমিল্লার সংরক্ষিত আসনের এমপির পদ। সেলিনা কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার বাসিন্দা। বাংলাদেশের সংসদে স্বামী-স্ত্রী দুজন একত্রে থাকা একমাত্র এমপি পাপুল। তাছাড়া কুয়েতে জনশক্তি ব্যবসায়ী ও তিনিই একমাত্র এমপি। তার প্রোফাইল এবং নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামা ঘেঁটে দেখা যায়, নির্বাচনী হলফনামায় তিনি পেশা ‘ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বা আন্তর্জাতিক ব্যবসা দেখিয়েছেন। তার প্রোফাইল বলছে, কুয়েত ছাড়াও জর্ডান, ওমানে লোক পাঠান তিনি। কুয়েতের বাইরের ব্যাংকে টাকা ॥ কুয়েতের প্রতিষ্ঠিত সংবাদ মাধ্যম আল-কাবাস ফেব্রুয়ারি মাসে প্রচারিত মানবপাচার বিষয়ক তাদের একাধিক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশী ওই এমপি সাম্প্রতিক সময়ে কুয়েতে একজন মার্কিন বাসিন্দার সঙ্গে আর্থিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলেন। কুয়েতে আয় করা বেশিরভাগ অর্থই তিনি আমেরিকা পাঠিয়ে দিয়েছেন। সূত্রের বরাতে আল কাবাসের খবরে জানানো হয়- প্রাথমিক পর্যায়ে কুয়েতের একটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সুপারভাইজার হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে নিজেই প্রতিষ্ঠানটির একজন অংশীদার হয়ে ওঠেন। এরপর আর তার পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজের মতো করে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে শুরু করেন। ওই এমপি কুয়েতে এমন বেশ কিছু টেন্ডার কেনেন, যেগুলো লাভজনক ছিল না। সেগুলো কেনার উদ্দেশ্য ছিল, চুক্তিগুলোর আওতায় কুয়েতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী কর্মী নেয়া। এসব কর্মী নেয়ার মাধ্যমে আয় করা অর্থ দিয়েই ওই টেন্ডারগুলোর অর্থায়ন করতেন তিনি। অবৈধভাবে আয় করতেন ব্যাপক অর্থ। পাপুল রিমান্ডে ॥ বিডিনিউজ জানায়, সোমবার গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কুয়েতের রেসিডেন্স ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের আবেদনে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাদের আদেশ দেয় কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশন বিভাগ। ওই রেসিডেন্স ইনভেস্টিগেশন বিভাগ শনিবার রাতে মুশরেফ এলাকা থেকে আটক করে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি পাপুলকে, যিনি সেদেশে একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো তাকে কুয়েতের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জানিয়েছেন কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এদিকে এমপি পাপুলকে আটক করার কারণ এবং তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চেয়ে কুয়েত সরকারকে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস চিঠি লিখেছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম। তিনি সোমবার রাতে বলেন, ‘এ সম্পর্কে জানতে চেয়ে আমরা কুয়েত সরকারের কাছে রবিবারই চিঠি লিখেছি। এখন পর্যন্ত কোন জবাব আসেনি।’
×