ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আইসিডিডিআরবি প্রতিবাদ জানাল ইকোনমিস্টের উদ্ভট পরিসংখ্যানের

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ৮ জুন ২০২০

আইসিডিডিআরবি প্রতিবাদ জানাল ইকোনমিস্টের উদ্ভট পরিসংখ্যানের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্ট আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের আইসিডিডিআরবি নির্বাহী পরিচালকের বরাত দিয়ে ঢাকা শহরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে হিসাব দিয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। এক বিবৃতিতে আইসিডিডিআরবি বলেছে, ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে অধ্যাপক জন ডি ক্লেমেনসের বক্তব্য প্রসঙ্গের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত ৬ জুন ‘ইনফেকশনস আর রাইজিং ফাস্ট ইন বাংলাদেশ ইন্ডিয়া এ্যান্ড পাকিস্তান’ শিরোনামে ইকোনমিস্টের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আইসিডিডিআরবি’র জন ক্লেমেনসের প্রাক্কলন অনুযায়ী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ইতোমধ্যে সাড়ে সাত লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে, যদিও সরকারী হিসাবে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬০ হাজারের কম। ইকোনমিস্টের ওই প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। এরপর নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে আইসিডিডিআরবি’র ওই বিবৃতি আসে। বিবৃতিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা কত হতে পারে জানতে চাওয়ায় অধ্যাপক ক্লেমেনস বলেছিলেন, মহামারী শুরুর পর থেকেই আইসিডিডিআরবি তাদের কর্মীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের আওতায় রেখেছে। কাশি, জ্বর বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ থাকলে তাদের ২৪ ঘণ্টার হটলাইনে স্টাফ ক্লিনিকে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে এবং কোভিড-১৯ উপসর্গ দেখা দিলে আইসিডিডিআরবি’র ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ দেয়া আছে। আর যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, আইইডিসিআরের সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের চিকিৎসা ও আইসোলেশন নিশ্চিত করা হচ্ছে এবং কন্টাক্ট্র ট্র্যাকিং হচ্ছে। আইসিডিডিআরবি বলেছে, তাদের মহাখালী ক্যাম্পাসে প্রায় ২ হাজার কর্মী কাজ করেন এবং তাদের ৪ থেকে ৫ শতাংশ কর্মী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন, যদিও আইসিডিডিআরবি ক্যাম্পাসের সঙ্গে তাদের সংক্রমিত হওয়ার কোন যোগসূত্র মেলেনি। আইসিডিডিআরবি’র ৪ থেকে ৫ শতাংশ কর্মীর আক্রান্ত হওয়ার এই হার পুরো ঢাকা শহরের কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের পরিস্থিতিকে বোঝায় না। আর এই হার ধরে অতি সরলভাবে পুরো শহরের পরিস্থিতির তুলনা করাটাও হয়ত যৌক্তিক নয়। এই সংখ্যাকে কেউ যদি পুরো ঢাকার জনসংখ্যার সঙ্গে মিলিয়ে তুলনা করতে যান, তখন মোট শনাক্তের সম্ভাব্য সংখ্যা দাঁড়াবে সাড়ে সাত লাখ। ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক ডাঃ এ এম জাকির হুসাইন সাংবাদিকদের বলেন, কোন একক প্রতিষ্ঠানের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পুরো শহরের চিত্র বোঝা যাবে না। এ কারণে ইকোনমিস্টের হিসাব অবৈজ্ঞানিক। আইসিডিডিআরবি’র কর্মীদের জরিপ দিয়ে দেশের বা কোন একটি শহরের পুরো চিত্র বোঝা সম্ভব নয়। আইসিডিডিআরবি’র লোকের যে রকম সংক্রমিত হওয়ার হার বা সম্ভাবনা- তা অন্য মানুষের মতো না। সেখানে রোগী আসে, তাদের সংস্পর্শে আসেন কর্মীরা। তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যারা ঘরে থাকে বা অন্যান্য জায়গায় থাকে তাদের চেয়ে বেশি। যদি এ জরিপ দৈবচয়ন ভিত্তিতে করা হতো, তাহলেও হয়ত বুঝতে পারতাম ঠিক আছে। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য পুরো শহর বা দেশকে রিপ্রেজেন্ট করে না।
×