ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কক্সবাজারে জনস্বার্থে কঠোর অবস্থানে সেনাবাহিনী

প্রকাশিত: ১৬:১৫, ৭ জুন ২০২০

কক্সবাজারে জনস্বার্থে কঠোর অবস্থানে সেনাবাহিনী

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কক্সবাজারের বাসিন্দাদের স্বার্থে সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। জনগণকে সচেতন করার বিষয়ে বদ্ধ পরিকর সেনা সদস্যরা। শনিবার থেকে পৌর এলাকাকে দেশের প্রথম ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে দ্বিতীয়বারের মত লকডাউন করেছে জেলা প্রশাসন। আজ রবিবার থেকে চকরিয়া পৌর এলাকা এবং ডুলাহাজারা ৩টি ওয়ার্ডকেও ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করায় সেনা বাহিনীর সদস্যরা জনসাধারণকে সতর্ক করতে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। রেডজোন ঘোষণাকৃত এলাকাসমূহের প্রধান সড়কগুলোতে সেনা চেকপোস্ট স্থাপনের পাশাপাশি সেনা টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। রামু সেনানিবাস সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলো পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ থাকবে। তবে অতি জরুরি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা তাদের কাজের যথার্থতা প্রমাণ সাপেক্ষে ’রেডজোনে’ সীমিত পরিসরে আসা যাওয়া করতে পারবেন। এসকল এলাকায় সব ধরনের দোকান, মার্কেট, বাজার, হাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী রবিবার ও বৃহস্পতিবার কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু থাকবে। রবিবার কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর চেকপোস্টে সেনাসদস্যরা জরুরী প্রয়োজনে চলাচলরত ব্যক্তিদের আইডি কার্ড ও পরিচয়পত্র দেখে জিজ্ঞাসাবাদ সাপেক্ষে তাদের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের অনুমতি দিচ্ছে। সকাল থেকে যানবাহন চলাচল এবং মানুষজনও তেমন নেই বললে চলে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। সকালে পর্যটন শহরের লাবণী পয়েন্ট থেকে হলিডে মোড় হয়ে বাজারঘাটা ঘুরে ফাঁকাচিত্র দেখা গেছে। শুধু মূল সড়ক নয়, উপসড়কগুলো আটকে দেয়া হয়েছে। যাতে ওখান দিয়েও কোন যানবাহন চলাচল করতে না পারে। মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রিত করতে শহরের বিভিন্ন স্পটে রয়েছে সেনাসদস্যরা। মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার দেখলেই থামাচ্ছেন তারা। জানতে চাচ্ছেন কেন বের হয়েছেন, কোথায় যাচ্ছেন? সদুত্তর না মিললেই সেনাসদস্যরা তাদেরকে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছেন। কক্সবাজারের প্রবেশমুখ লোহাগাড়া-চকরিয়া সীমানায় ইতোপূর্বেও সেনা সদস্যরা অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। জরুরি মালামাল নিয়ে আসা যানবাহনগুলোর গায়ে লেগে যেন করোনাভাইরাস জেলায় প্রবেশ না করতে পারে, সে কারণে গাড়িগুলোকে জীবাণুমুক্ত করে দিচ্ছে সেনাবাহিনী। এ লক্ষ্যে শহরের প্রবেশদ্বারে বিশেষায়িত একটি বুথ নির্মাণ করেছেন তারা নিজস্ব উদ্ভাবনী সক্ষমতায়। সেনাবাহিনী সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিক নির্দেশনায় আপনার সুস্থতাই আমাদের কাম্য- এ প্রতিপাদ্যে সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের জন্য নির্ধারিত রেশনসামগ্রীর একাংশ বাঁচিয়ে প্রতিদিনই জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে খেটে খাওয়া, হতদরিদ্র, কর্মহীন মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী ও বীজ বিতরণ কার্যক্রম করা হচ্ছে, এছাড়া ধারাবাহিকভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে ‘সেনা বাজার’। খাবার সহায়তার পাশাপাশি কক্সবাজারের অনেক জায়গায় সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল ক্যাম্প পরিচালনা করা হচ্ছে। সেখানেও সেনা চিকিৎসক, নার্সসহ সেনাসদস্যরা করোনা মোকাবেলায় নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। লকডাউন পরিস্থিতিতে ঘরবন্দি মানুষের নানাবিধ সঙ্কট দূর করতেই সেনাবাহিনী এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানায় সূত্রটি।
×