ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নয়ন কাজ শেষ হয়নি, অথচ সড়ক ফুলে ফেঁপে উঠেছে

প্রকাশিত: ১৩:৪৭, ৬ জুন ২০২০

উন্নয়ন কাজ শেষ হয়নি, অথচ সড়ক ফুলে ফেঁপে উঠেছে

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোর-খুলনা মহাসড়ক উন্নয়নের কাজ শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। ২০২০ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হবার কখা থাকলেও তা হচ্ছেনা। এখনও সড়ক উন্নয়নের কাজ চলমান। চলমি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ শেষের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে ৮ কিলোমিটার সড়ক ফুলে ফেঁপে উঠেছে। এতে যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে। অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের কাজ করার কারণে এমনটি হয়েছে। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ রফিকুন নবী জানান, তীব্র তাপ ও গাড়ির ওভার লোডের কারণে সড়কে আঁকা-বাকা হয়ে ফুলে ফেঁপে উঠছে। কি কারণে এটি হচ্ছে সেজন্য পরামর্শক নিয়োগ করবেন তারা। সওজ সূত্র জানায়, যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটার উন্নয়নে ৩শ’২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। যশোর-খুলনা মহাসড়কটি যশোর শহরতলীর পালবাড়ি মোড় থেকে শুরু হয়ে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার রাজঘাট পর্যন্ত নতুন করে নির্মিত হচ্ছে। ২৭ কিলোমিটার কাজ সমপন্ন করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব এন্ড ব্রাদার্স, তমা কনস্ট্রাশন এন্ড কোং। অথচ ৮ কিলোমিটার সড়কে সৃষ্টি হয়েছে উঁচুনিচু অবস্থা। ফুলে-ফেঁপে উঠায় যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। সড়কটি বর্তমানে ২৪ ফুট চওড়া রয়েছে। এটি আরো ১০ ফুট উন্নীত করে ৩৪ ফুট চওড়া ও দুই লেন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সড়কের নতুন করে ভিত তৈরি করে সাড়ে ৪ ফুট থেকে ৫ ফুট গর্ত করে প্রথমে বালি ফিলিং, পরে বালি ও খোয়া এবং শেষে বালি ও পাথর মিশিয়ে ভরাট করার নিয়ম রয়েছে। এরপর বিটুমিন সারফেজ ৫ ইঞ্চি দিয়ে কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। সড়ক দুটির কাজের শুরুতেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক উন্নয়নের এ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের কোন নিয়মনীতি মানেনি। তারা গোজামিল দিয়ে ইচ্ছামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, ঠিকাদাররা সড়কের পুরনো বৃটিশ আমলের লোনা ধরা ইট ও খোয়া তুলে সেটাই আবার ভেঙ্গে গর্তে ব্যবহার করেছেন। যা দরপত্রে বলা হয়নি। এছাড়া, সড়কটি ৫ ফুট গর্ত করে ভিত তৈরির নির্দেশনা থাকলেও সেই নিয়মও মানেনি। সড়কে নতুন ইট বালি, খোয়া ব্যবহার না করে খুঁড়ে উঠানো মালামালই ফের ভরাট করা হয়েছে। যশোর-খুলনা সড়কের বসুন্দয়ার বাসিন্দা আবদুল জব্বার জানান, নিয়ম মেনে সড়ক নির্মাণ করা না হলে সেটি বেশিদিন স্থায়ী হবেনা। সড়ক নির্মাণের শুরুতে অনিয়ম হলেও কর্তৃপক্ষের জোরালো ভূমিকা আমরা দেখছিনা। আমাদের এলাকার সড়কেও তৈরি হয়েছে আকবাঁকা। যশোর বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম চাকলাদার জানান, আমি সম্প্রতি খুলনায় গিয়েছিলাম। নতুন নির্মিত সড়কে এমন ফুলেফেঁপে উঠা কখনও দেখিনি। সওজের সাথে আতাত করে ঠিকাদরি প্রতিষ্ঠান সড়কের কাজে অনিয়ম করার কারণে এমনটি হয়েছে। এতে আমাদের গাড়ির ক্ষতি হবার পাশাপাশি ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, শিল্প শহর নওয়াপাড়া থেকে ওভারলোড গাড়ি চলাচল করায় এবং তীব্র তাপের কারণে সড়কে এমনি পারে। আমাদের দেশে যে বিটুমিন ব্যবহার করা হয় তা নিম্নমানের। তারপরও আমরা পরামর্শক নিয়োগ করছি। সেসব জায়গায় সড়কে সমস্যা হয়েছে সেসব রাস্তা আবারও নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঠিকাদারের কাজে অনিয়মের সুযোগ নেই। সড়কের কাজ শুরুর সাথেই এসও এবং এসডিও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারাই সড়ক দুটির সকল কাজের দেখভাল করছেন। তারপও কাজে অনিয়ম পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×