ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করোনাকালে কলাপাড়ায় পেটের পীড়া জনিত রোগীসহ কমেছে মৃত্যু

প্রকাশিত: ১৩:১৪, ৬ জুন ২০২০

করোনাকালে কলাপাড়ায় পেটের পীড়া জনিত রোগীসহ কমেছে মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ করোনার ঝুঁকি নিয়েই সাগরপাড়ের কলাপাড়ার জনপদে স্বাস্থ্যসেবার জন্য এখনও মানুষ ছুটছে হাসপাতালে। তবে করোনার আগের সেই স্বাভাবিক দৃশ্যপট নেই। কমেছে হাসপাতালমুখি রোগী। কমেছে বিভিন্ন রোগ জনিত মৃত্যুর হার। শঙ্কা গ্রস্ত হয়ে অনেকে হাসপাতালে যাচ্ছেন। হাসপতালের চিকিৎসায় অধিকাংশ রোগী স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এখানকার অধিকাংশ চিকিৎসক করোনা ঝুঁকিতে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। আবার বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে রোগীরা দু’একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কলাপাড়ার এ হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসা সেবা চলছে স্বল্পপরিসরে। হাসপাতাল মুখি রোগী আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। মানুষের মধ্যে করোনাকালীন সচেতনতা বেড়েছে। বারবার হোত ধোঁয়ার অভ্যাস বেড়েছে। স্যনেটাইজার ব্যবহার করছে। নিরাপদ পানির ব্যবহার বেড়েছে। ফলে কমেছে পেটের পীড়াসহ পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা। এমনকি স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত আগের চেয়ে কমেছে। খবর নির্ভরযোগ্য সূত্রের। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৫০ শয্যার কলাপাড়া হাসপাতালে করোনার আগে এবছরের মার্চ মাসের ২ তারিখে বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নেয়া রোগীর সংখ্যা ছিল মোট ২২৩ জন। যার মধ্যে পুরুষ ৬৩ জন, আর নারী ১৬০ জন। এভাবে ৩ মার্চ ২০৫ জন এবং ৪ মার্চ ২৬০ জন। তিনদিনে মোট নারী রোগী সেবা নিয়েছে ৪৬৭ জন, আর পুরুষ রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছে ২২১ জন। অথচ করোনা সংক্রমনের পরে হাসপাতালে আসা রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে কমে গেছে। ২৭ মে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেয় মাত্র ৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৭ জন, আর নারী ২১ জন। ২৮ মে চিকিৎসা নিয়েছে মাত্র ৩১ জন। পুরুষ ১০ জন, আর নারী ২১ জন। অথচ করোনার আগে হাসপাতালের অভ্যন্তরীন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল দৈনিক গড়ে ৮০-৯০ জন। আর এখন তা পৌছেছে ১৫-২০ জনে। এর মধ্যে আবার অধিকাংশ মারামারির। করোনার আগে, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে জরুরি, অন্তর্বিভাগ এবং বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ছয় হাজার ৭১৭ জন। নবেম্বর মাসে ছয় হাজার ৪০৩ জন এবং ডিসেম্বর মাসে ছয় হাজার ১৩ জন। সেখানে করোনা সংক্রমনের পরে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে জরুরি, বহির্বিভাগ ও অন্তঃবিভাগ মিলে মোট চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৬৪২ জন। কমেছে অর্ধেকেরও বেশি। পরিসংখ্যানের এ সুত্র ধরে গ্রাম-শহরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুব বেশি শঙ্কাজনক; এমন রোগী হাসপাতালে আসছেন। ছুটছেন চিকিৎসকের কাছে। এছাড়া শতকরা ৬০ ভাগ রোগী স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন। এদের কাছ থেকে প্রতিকার না পেয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০-২২ জন রোগী মোবাইল ফোনে হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শ নেয় বলে উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার নিশ্চিত করেছেন। তবে সচেতনমহলসহ স্থানীয় সকল শ্রেণির মানুষের দাবি যেসব ইউনিয়নে মেডিক্যাল অফিসার পদায়ন রয়েছেন তারা যেন নির্দিষ্ট সময় কর্মস্থলে থাকেন। এছাড়া যারা মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন তারাও মাঠের মানুষের খবরে মাঠেই থাকেন; এমন প্রত্যাশা সকলের। সাধারণ মানুষ করোনাকালের এই যুদ্ধ মোকাবেলায় সামনের যোদ্ধা চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তা নিতে প্রত্যেক ইউনিয়নে দায়িত্বরত চিকিৎসকের কর্তব্যকালীন সময়কালসহ তাঁদের যোগাযোগের নম্বরটা দেয়ার দাবিও করেছেন।
×