ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষণে রাজধানীর বাজারে শাক-সবজির দাম বেড়েছে

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ৬ জুন ২০২০

বর্ষণে রাজধানীর বাজারে শাক-সবজির দাম বেড়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত কয়েক দিনের বর্ষণে রাজধানীতে বেড়ে গেছে শাক-সবজির দাম। ডিম, ছোলা ও আলুর দাম আরেক দফা বেড়েছে। তবে দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগি, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, আটা, চিনি ও ডালের দাম। চাল ও ভোজ্যতেলের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন বাজার ও সরকারী বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবি থেকে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, ঈদের পর থেকে চড়া সবজির বাজার। আলু, পটোল, বরবটি, ঢেঁড়স, ধুন্দল, ঝিঙে, করলা, পেঁপেসহ বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের পর প্রথম দিকে সবজি চাহিদা কম ছিল। তবে কয়েকদিন ধরে চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। এছাড়া টানা বৃষ্টি ও ভারি বর্ষণে সবজির কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে সবজির দাম এখন কিছুটা বাড়তি। সামনে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে। সবজির পাশাপাশি কিছুটা দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের। রোজার ভেতরে ও ঈদের পর কিছু দিন ৪০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকা হয়েছে। কোন কোন ব্যবসায়ী ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ ২০-২৫ টাকায় বিক্রি করছেন। পুরান ঢাকার কাপ্তান বাজারে ২০ টাকা পোয়া কাঁচা মরিচ বিক্রি করা ব্যবসায়ী খলিল বলেন, বৃষ্টিতে মরিচের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সে কারণে দাম বেড়ে গেছে। করোনার কারণে বাজারে এখনও সবকিছুর চাহিদা কম রয়েছে। একটু চাহিদা বাড়লেই সবকিছুর দাম আরও বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, প্রতি বছর রমজানের ভেতরে কাঁচা মরিচ ও শসার বাড়তি চাহিদা থাকে। ফলে দামও বাড়ে। কিন্তু এবার রমজান মাসে আমরা ভিন্ন চিত্র দেখেছি। ওই সময় বাজারে দামও একটু কম ছিল। এদিকে শুক্রবার বিভিন্ন কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাকা টমেটো, গাজর, পটল, ঝিঙে, ধুন্দল, বরবটি, পেঁপেসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। তবে রোজার ভেতর ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। রোজার ভেতর ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম বেড়ে হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এছাড়া ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া চিচিঙ্গার দাম বেড়ে হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁপের দাম বেড়ে হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গোল আলুর দাম বেড়ে ২৮ থেকে ৩০ টাকা হয়েছে। বাজার ও মান ভেদে পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগেও বিভিন্ন বাজারে ৩০ টাকা কেজি পাওয়া যাচ্ছিল। ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া করলার দাম বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। বরবটি পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর লতি, কচুরমুখী, ধুন্দল, ঝিঙে ও কাকরোল। ঝিঙে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে, দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগির। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়। গরু ও খাসির মাংস আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। পাকিস্তানী কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি। দেশী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। ঈদের আগে দাম বাড়া পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। দেশী রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে দেড় শ’ টাকার ওপরে ছিল। আদার দাম কমে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। দাম কমে প্রতিকেজি চিনি ৬০-৬৫, মসুর ডাল মোটা দানা ৬৫-৭০, আটা ৩০-৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দাম বেড়ে প্রতিহালি ডিম ৩০-৩৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এদিকে মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৬৫ টাকা কেজি, মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, মোটা চায়না ইরি ও স্বর্ণা চাল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪৫ টাকায়। বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-৫০০ টাকা। নলা (ছোট রুই) মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০-২০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০-১৭০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৪০-১৮০ টাকা কেজি, শিং ৩০০-৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৪০০-৭৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০-৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৮০০ টাকা, টেংরা ৪৫০-৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, পুরোদমে বর্ষা শুরু না হওয়া পর্যন্ত মাছের দাম কমছে না।
×