ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জান্নাতুল ফেরদৌস একজন সফল ই-কমার্স উদ্যোক্তা

প্রকাশিত: ২১:০৬, ৬ জুন ২০২০

জান্নাতুল ফেরদৌস একজন সফল ই-কমার্স উদ্যোক্তা

আইটি ডটকম প্রতিবেদক ॥ পুরো বিশ্ব এখন প্যানডেমিকে আক্রান্ত। বিশ্ব অর্থনীতি এখন হুমকির মুখে। এমতাবস্থায় শুধুমাত্র ই-কমার্সের সহায়তায় সামনে এগিয়ে গেছেন গুটিকয়েক উদ্যোক্তা। আজ শোনাব তাদেরই একজনের অদম্য সাহসী গল্প। বাঙালী ঐতিহ্যের অপর নাম পিঠা। বারো মাসে তেরো পার্বণের এই দেশে পিঠার রয়েছে এক নান্দনিক আবেদন। সেই পিঠাকে সঙ্গী করে ব্যবসা শুরু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন জান্নাতুল ফেরদৌস। অনেকেই তাঁকে চেনে ‘পিঠা কন্যা’ বা ‘পিঠা বিবি’ নামে। ডিজিটাল এই যুগে সেই নান্দনিকতা দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ছড়িয়ে দিতে ই কমার্স কেই শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। প্রথমেই তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম তার পারিবারিক, শিক্ষা ও কর্মজীবন সম্পর্কে। জান্নাতুল। নরসিংদীর মেয়ে। তিন বোনের মধ্যে তিনি মেজো। ফেসবুকে পেজের নাম জান্নাতস কিচেন। উদ্যোক্তা হয়ে উঠার গল্পটা ভিন্ন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসএস শেষ করে ঢাকা ল কলেজ থেকে এলএলবি এবং বিআইএম থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট শেষ করে একটা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে মানবসম্পদ বিভাগে চাকরি করেন বহু বছর। কিছু সময় দেয়ার কোর্টেন আঙ্গনে। ছেলেকে স্কুলে দেয়ার পর চাকরিটা করা হলো না। তখন একটা দিন মনে হতো একটা বছরের সমান। সময় যেন কাটতেই চাই না। সব সময় কেমন যেন মানসিক একটা চাপ। তখন শুধু মনে হতো যদি ঘরে বসে কিছু করতে পারতাম। গত বছর মাথায় আসল আমাদের দেশের হারানো ঐতিহ্য পিঠা শিল্পের কথা যেই কথা সেই কাজ। শুরু করে দিলেন পিঠা নিয়ে কাজ করা। সেই থেকে আমাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রথমে শুরু করলাম পরিচিত জনের মাধ্যমে এখন অনলাইনের সুবাদে আমার বানানো নানা রকম পিঠা সারা দেশে। বিশেষ করে নকশীপিঠা। আমাদের দেশে হারানো ঐতিহ্যকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসবার সব থেকে ভাল প্ল্যাটফর্ম ডিজিটাল মাধ্যম। পিঠাকে নতুনভাবে উপস্থাপন করার নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ১৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বিলুপ্ত প্রায় সতীন মোচর পিঠাকে বাংলার মানুষের কাছে উপস্থাপন করতে পেরেছি। জনকণ্ঠের প্রতিনিধির এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ব্যবসায়িক জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে ড়িসবহ ধহফ ব-পড়সসবৎপব ভড়ৎঁস এই গ্রুপে যুক্ত হবার পর থেকে ক্রমশ আমার ব্যবসার প্রসার ঘটেছে। বিভিন্ন জায়গায় আমার পরিচিতি বেড়েছে। এজন্য আমি রাজিব আহমেদ স্যার এবং নাসিমা আক্তার নিশা আপুর কাছে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। ই-কমার্স এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আমি লকডাউনের ভেতরেও আমার ব্যবসা সফলভাবে চালিয়ে যেতে পেরেছি। রোজার মাসে পিঠা আর সেমাই সেল হয়েছে ৯০ হাজার ৮ শত ৯৫ টাকা এর মধ্যে ঈদের দিনই ৫ হাজার ২ শত টাকা। জান্নাতুল বলেন, নারী উদ্যোক্তা, উদ্যোক্তা কথাটির আগে যখন নারী কথাটি যুক্ত হয় তখনি তা চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়। অনেক প্রতিকূলতা নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়। যখন কোন ভাল কিছু করব তখন শক্তিটা আসে নিজের মনোবল থেকে। তাই নারী উদ্যোক্তাদের মনোবল হারালে চলবে না।
×