নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর ॥ চুরি করতে দেখে ফেলায় আসাদুল হক (৬০) নামে এক সিনিয়র আইনজীবীকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় স্থানীয়রা রতন মিয়া নামে এক যুবককে আটক পুলিশে দিয়েছে। শুক্রবার দুপুরে রংপুর নগরীর ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্মদাস বারো আউলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আসাদুল হক রংপুর জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন।
ধৃত চোর রতনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থাকার ওসি রোকোনুজামান জানান, শুক্রবার(৫ জুন) দুপুরে জুম্মার নামাজ আদায়ের জন্য বাড়িতে অযু করছিলেন আইনজীবী আসাদুল হক। এ সময় রতন মিয়া ও তার এক সঙ্গী বাড়ির সীমানা প্রচীর ডিঙ্গিয়ে চুরি করতে ভিতরে প্রবেশ করে। আইনজীবী আসাদুল হক তাকে দেখে চিনে ফেললে তাকে একা পেয়ে প্রথমে তার পেটে ছুরিকাঘাত করার পর গলাকেটে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের পরে বাড়ির সীমানা প্রাচীর টপকে পালানোর সময় স্থানীয়রা রতনকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এসময় তার সহযোগী সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায়। রতন মিয়া (২২) এই এলাকার মৃত জাফর আলী ড্রাইভারের ছেলে। সে মাদকসেবন, চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত বলে জানান স্থানীয়রা। এর আগে ওই আইনজীবীর বাড়িতে দুই-তিনবার চুরির ঘটনায় স্থানীয়রা সালিশ বৈঠক করে রতনকে সতর্ক করে দিয়েছিল।
নিহতের স্ত্রী সাবেরা রহমান শেফালী বলেন, আমি গ্রামের বাড়ি মিঠাপুকুরে ছিলাম। সেখান থেকে খবর পেয়ে এসে দেখি আসাদুলকে শহরের বাড়িতে দুর্বৃত্তরা জবাই করে হত্যা করেছে। এর আগেও রতন মিয়া তাদেও বাড়িতে একাধিকবার চুরি করেছে। গ্রামের মানুষ তার বিচার করে ছেড়ে দিয়েছিল। এবার তার চুরি করা দেখে ফেলায় সে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকারীর বিচার চাই।
জিজ্ঞাসাবাদে রতন হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানান তাজহাট থানার ওসি শেখ রোকোনুজ্জামান। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রতনের অপর সহযোগীকে গ্রেতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
খবর পেয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শহীদুল্লা কাওছার, রংপুর বার সমিতির সভাপতি ও জজ কোর্টের সরকারী আইন কর্মকর্তা আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক প্রামানিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পিপি আব্দুল মালেক এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে, খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
