ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যাসিনোকাণ্ডের অনুসন্ধান বা তদন্তে দুর্নীতিবাজদের প্রতি নুন্যতম নমনীয়তার সুযোগ নেই ॥ দুদক চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ১৭:৪৩, ৫ জুন ২০২০

ক্যাসিনোকাণ্ডের অনুসন্ধান বা তদন্তে দুর্নীতিবাজদের প্রতি নুন্যতম নমনীয়তার সুযোগ নেই ॥ দুদক চেয়ারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্যাসিনোকাণ্ডে দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক) যে সব অভিযোগ আমলে নিয়েছে সেসব বিষয়ে অনুসন্ধান বা তদন্তের সাথে করেনার কারণে জড়িত দুর্নীতিবাজদের প্রতি নুন্যতম নমনীয়তার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ক্যাসিনোকাণ্ডে কমিশনরে বিবেচনাধীন অনুসন্ধান বা তদন্তে শিথিলিতা এসেছে কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নরে জবাবে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এ মন্তব্য করেন। শুত্রবার দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। বিবৃতিতে ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমরাও গণমাধ্যমে এ জাতীয় সংবাদ দেখছি। তবে আমি দ্ব্যার্থহীন ভাষায় বলতে পারি, কমিশন ক্যাসিনোকাণ্ডে যে সব অভিযোগ আমলে নিয়েছে সেসব বিষয়ে অনুসন্ধান বা তদন্তে শিথিলতার কোনো সুযোগ নেই। করোনার কারণে অপরাধীদের প্রতি ন্যূনতম নমনীয় হওয়ার সুযোগও নেই । প্রতিটি অনুসন্ধান ও তদন্ত চলমান রয়েছে। করোনার কারণে হয়তো অনুসন্ধান বা তদন্ত সম্পন্ন করতে নির্ধারিত সময়রে চেয়ে একটু বেশি সময় লাগতে পারে। তবে সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধানকারী ও তদন্তকারী কর্মকর্তাদের বাসায় বসেই কাজ করতে বলা হয়ছে। তারাও নিরলসভাবে কাজ করছে। আমরা আশা করছি তদন্ত সম্পন্ন করেই অপরাধীদের আইন-আমলে নিয়ে আসা যাবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন কর্তৃক গঠিত প্রাতিষ্ঠানিক টিমও কাজ করেছে। গতবছর কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক টিমের একটি প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। কমিশন মনে করে এ প্রতিবেদেনর সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা হলে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি-অনিয়ম প্রতিরোধ করা সহজ হবে। তবে এ কথা আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে কমিশন নির্মোহভাবে আইনি দায়িত্ব পালন করবে। এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিই ( পারসোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট ) কেনাকাটায় দুর্নীতি হয়েছে এ অভিযোগের বিষয়ে কমিশন অনুসন্ধান করবে কি-না ? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলনে, করোনা মহামারি শুরুর প্রারম্ভইে এসব সামগ্রী ক্রয় প্রক্রিয়া শুরু হয়, টেন্ডার হয়। এগুলো খুবই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। যে কোনো প্রয়োজনে যে কোনো প্রতিষ্ঠান ক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে এটা স্বাভাবিক,এক্ষেত্রে দুদকের কিছু করণীয় নেই। তবে এসব ক্রয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি কিংবা জাল-জালিয়াতির ঘটনা ঘটলে দুদক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাক। এন-৯৫ মাস্ক এবং পিপিই ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতি বা প্রতারণার কিছু খবর এসেছে। কমিশন এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিবেদন সংরক্ষণ করছে। এছাড়া কমশিনরে অভিযোগকেন্দ্র হটলাইন-১০৬-এ স্বাস্থ্য খাতের বেশকিছু কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। অধিকন্তু কমিশনের গোয়েন্দা ইউনিটকেও এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ কমিশন সার্বিকভাবে এসব কেনাকাটার বিষয়গুলো অনুসরণ করছিল। ইকবাল মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের নিজস্ব প্রক্রিয়ায় তদন্ত সম্পন্ন করেছে বলে আমরা জেনেছি। আমরা হয়তো তাদের এই প্রতিবেদনটি সংগ্রহ করবো।এখন বিভিন্ন উৎস হতে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এরপরই পূর্ণাঙ্গ কমিশন বসবো এবং এসব তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মাস্ক বা পিপিইর মতো অতীব গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী যা চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্য কর্মীদের জীবনের নিরাপত্তার সাথে সম্পৃক্ত। তাই এ সকল অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে এবং দ্রুততার সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। দুদক যেহেতু স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ তাই এ বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমেই জনগণকে অবহিত করা হবে। এগুলোও ছাড়াও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় তৃণমূল পর্যায় (উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) থেকে শুরু করে রাজধানীর বড় বড় হাসপাতালের বিষয়ে আমরা যেসব অভিযোগ পাচ্ছি সেগুলোও যাচাই-বাছাই করা হবে এবং অভিযোগের সারবত্তা থাকলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যদি এই অভিযোগটি (মাস্কও পিপিই সংক্রান্ত) দুদক অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করে তাহলে সংশ্লিষ্টদের তলব করা হবে কি-না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন,অনুসন্ধানকালে সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করেন। অপরাধীদের গ্রেফতার,তলব কিংবা বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা এ জাতীয় সকল বিষয়ে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাই সিদ্ধান্ত নিবেন।
×