ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্ত্রীর যৌতুকের মামলা

প্রকাশিত: ০০:২৭, ৫ জুন ২০২০

অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্ত্রীর যৌতুকের মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ র‌্যাবে কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন ও গর্ভপাতের মাধ্যমে ভ্র‍ুণ হত্যার অভিযোগে তুলেছেন তার স্ত্রী। এ ব্যাপারে রমনা মডেল থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। রমনা মডেল থানার ওসি বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ই-মেইলের মাধ্যমে নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে র‌্যাবে কর্মরত এএসপি নাজমুস সাকিবের স্ত্রী ইসরাত রহমান পাঠানো অভিযোগটি তারা পান। ই-মেইলে পাঠানো অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণে আইনগত ঝামেলা থাকায় বিষয়টি মামলার বাদীকে জানানো হয়। পরে তিনি নিজেই এসে থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় নাজমুস সাবিকের পিতা শফিউল্লাহ তালুকদার ও মা খালেদা সুলতানাকেও আসামি করা হয়েছে। র‌্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ সারওয়ার-বিন-কাশেম জানান, তারা অভিযোগের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে। দায়েরকৃত মামলার অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, নাজমুস সাকিব ও তার বাবা-মা যৌতুকের দাবিতে তাকে দফায় দফায় মারধর করেছেন। এমনকি ইচ্ছার বিরুদ্ধে গর্ভপাত ঘটিয়ে ভ্রুণ হত্যা করেছেন। ২০১৭ সালের মার্চে তাদের বিয়ের পর থেকেই যৌতুক দাবি করে আসছিল তারা। নির্যাতনের মাত্রা এতটাই ছিল যে, তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। পরিবারটি ১২ লাখ যৌতুক দাবি করে। এত টাকা দিতে না পারলেও মাঝে মধ্যে কয়েক কিস্তিতে তারা কয়েক লাখ টাকা দিয়েছেন। তাতে তারা সন্তুষ্ট না হতে পারে নির্যাতন চালাত। গত বছরের জুলাইতে মগবাজারের রাশমনো হাসপাতালে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেছে। এমন ঘটনার পর আবারও যৌতুকের দাবিতে তাকে বাড়িতে পাঠানো হয়। টাকা নিয়ে না ফেরায় তার ওপর আবার নির্যাতন চালানো হয়। পরে তিনি আহত অবস্থায় বাসা থেকে পালিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি হতে বাধ্য হন। বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসা হলেও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাননি তিনি। চাকরির কারণে সাকিবের রংপুরে পোস্টিং হয়। সেখানেও তাকে দফায় দফায় নির্যাতন চালায় সাকিব। ঢাকায় ফিরে দ্বিতীয়বার গর্ভধারণ করলে সেই অনাগত সন্তান নষ্টের জন্য ইশরাতকে চাপ দিতে থাকে। রাজি না হওয়ায় পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার তলপেটে লাথি মেরে সন্তান নষ্ট করার চেষ্টা করে। মেয়ে হবে জেনে আরও ক্ষিপ্ত হয়। এরপর সে টয়লেটে গিয়ে জীবন বাঁচায়। নিজেদের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় সাকিব। নাজমুস সাকিব র‌্যাব সদর দফতরের কমিউনিকেশন এ্যান্ড এসআইএস উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত।
×